| রবিবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 736 বার পঠিত
টানা দরপতন দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। রোববারের দরপতনের মাধ্যমে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) টানা তিন কার্যদিবস দরপতন হয়েছে।
গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণার পরপরই এই দরপতনের শুরু হয়। মুদ্রানীতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে ধরলেও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের যে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে তাতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। আগের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
অপরদিকে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ ধরা হয়েছে। আগের মুদ্রানীতিতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৫ শতাংশ।
এই মুদ্রানীতি ঘোষণার পর শেয়ারবাজারে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি ঋণের লাগাম টেনে ধরেছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শেয়ারবাজারে। ফলে ওইদিন ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৪০ পয়েন্ট পড়ে যায়। পরের কার্যদিবসে সূচকটি পড়ে ৬৩ পয়েন্ট।
গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসের বড় দরপতনের ধারা চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও দেখা দিয়েছে। রোববার ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ১৯ পয়েন্ট। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবসের পতনে ডিএসই প্রধান মূল্য সূচক হারালো ১২২ পয়েন্ট।
মূল্য সূচকের পতনের পাশাপাশি রোববার ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের কার্যদিবসের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১৮৬টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির দাম।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮০১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুটি মূল্য সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৭৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩১১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্য সূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। বাজারটিতে দিনভর লেনদেন হয়েছে ৯৮৪ কোটি ২১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯৯২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে এদিন ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের ৫০ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩৯ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- গ্রামীণফোন, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, প্রিমিয়ার ব্যাংক, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেরেশন, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স এবং ইস্টার্ন হাউজিং।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএসসিএক্স ৬২ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৭৫৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৭৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৬টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টির।
Posted ৪:২৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed