মঙ্গলবার ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে দুর্বল ব্যাংক

  |   রবিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   105 বার পঠিত

সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে দুর্বল ব্যাংক

দেশের দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দুর্বল ৫ ব্যাংক। ইতিমধ্যে স্বেচ্ছায় একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ধুঁকতে থাকা পদ্মা ব্যাংক। আরও বেশ কয়েকটি ব্যাংক একীভূত করার চুড়ান্ত তালিকা তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে গভর্নরের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাংকের মালিকানায় থাকা পরিচালক ও চেয়ারম্যানরা বৈঠক করেন। বৈঠকে ১০টি দুর্বল ব্যাংককে বিভিন্ন সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে পদ্মা ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, বিডিবিএল, বেসিক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এবং আইসিবি ইসলামি ব্যাংক।

যেগুলোর মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে এবি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এবং আইসিবি ইসলামি ব্যাংক।

যদিও আইসিবি ইসলামি ব্যাংকের একীভূত হওয়ার বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ আইসিবি ইসলামি ব্যাংকের শেয়ার ওরিয়ন গ্রুপ কিনে নেয়ার বিষয়ে কথা হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

এর আগে আইসিবি ইসলামি ব্যাংকটির নাম ছিল দ্য ওরিয়েন্টাল ব্যাংক। সে সময় ব্যাংকটি ওরিয়ন গ্রুপের মালিকানায় ছিল। দেউলিয়াপ্রায় অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপে তা মালয়েশিয়াভিত্তিক আইসিবি ইসলামি গ্রুপ ব্যাংকটির অধিকাংশ শেয়ার কিনে নেয়। তবে নাম, মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনলেও আইসিবি ইসলামি ব্যাংক আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

এছাড়া, গত মার্চ মাসে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চুক্তি করেছে পদ্মা ব্যাংক। এর মধ্য দিয়ে ব্যাংক একীভূত করার ধারা শুরু হয়।

এদিকে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে সরকারি মালিকানাধীন সমস্যাগ্রস্ত বেসিক ব্যাংক।

একীভূত প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি আর্থিক খাতের নীতিনির্ধারকদের এক বৈঠকে ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে আলোচনা হয়। কোন ব্যাংক কার সঙ্গে একীভূত করা যায়, তা নিয়ে সেখানে অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তার একটি খবরের পর আলোচনায় ব্যাপক মাত্রা পায়।

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে ব্যাংকগুলোকে একীভূত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কেউ একীভূত না হলে আগামী বছর মার্চ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংককে মিলিয়ে দেয়া হবে। ইতিমধ্যে গত বৃহস্পতিবার স্বেচ্ছায় একীভূত হওয়ার একটি নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে এই ব্যাপারে বলা হয়েছে, ‘একীভূতকরণের পর যে ব্যাংক বিলীন হয়ে যাবে, সেই ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিন বছরের আগে ছাঁটাই করা যাবে না। তবে ওই ব্যাংকের বড় কর্তারা (এমডি, ডিএমডি) থাকতে পারবেন না।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়েছে, একত্রীকরণের পর হস্তান্তরকারী ব্যাংক/ফিন্যান্স কোম্পানির বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক হস্তান্তর গ্রহীতা ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাবেন না। তবে পাঁচ বছর পর হস্তান্তরকারী ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডাররা শেয়ারধারীদের আনুপাতিক হারে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও উপযুক্ততা থাকা সাপেক্ষে পর্ষদে পরিচালক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

এছাড়া একত্রীকরণের সময় যাঁরা পরিচালক ছিলেন, তাঁদের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর পর পরিচালক হওয়ার অন্যতম যোগ্যতা হিসেবে বর্ণিত পাঁচ বছর সময়ের মধ্যে তাঁদের ঋণ নিয়মিত থাকতে হবে। অর্থাৎ বিনিয়োগ ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোনো প্রকার পুনঃতফসিল/পুনর্গঠন ছাড়া তাঁদের ঋণ অবশ্যই নিয়মিত রাখার শর্ত পরিপালন করতে হবে।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, বিলুপ্ত ব্যাংক/ফিন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালককে একীভূত ব্যাংক-কোম্পানির কোনো পদে রাখা যাবে না।

একীভূত ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদের কোনো কর্মকর্তাকে যদি উপযুক্ত মনে করে, তাহলে নতুন করে চুক্তি ভিত্তিতে উপযুক্ত কোনো পদে নিয়োগ দিতে পারবে।

তবে হস্তান্তরকারী ব্যাংক/ফিন্যান্স কোম্পানি সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালককে সরকার তার অন্য ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সমপদে বহাল/বদলি করতে পারবে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পর্কে নীতিমালায় বলা হয়েছে, হস্তান্তর গ্রহীতা ব্যাংক-কোম্পানি হস্তান্তরকারী ব্যাংক-কোম্পানি বা ফিন্যান্স কোম্পানির বিদ্যমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিন বছর পূর্তির আগে ছাঁটাই করা যাবে না। তবে তিন বছর পর পুনর্গঠিত বা হস্তান্তর গ্রহীতা ব্যাংক-কোম্পানি উক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মদক্ষতার মূল্যায়ন করে যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

এ বিষয়ে নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, পূর্বতন ব্যাংক-কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগ্যতা হস্তান্তর গ্রহীতা ব্যাংকের নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে তুলনীয় হলে সমমর্যাদাসম্পন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমান বেতন ও সুবিধাদি নির্ধারণ করবে।

তবে যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও সমমর্যাদা সম্পর্কে সন্দেহ বা দ্বিমত দেখা দিলে বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি নির্ধারণের তারিখ থেকে তিন মাসের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠাতে হবে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

এ ছাড়া একত্রীকরণের অনুমোদন হওয়ার পর হস্তান্তরকারী ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী হস্তান্তর গ্রহীতা ব্যাংকের কর্মকর্তা হতে না চাইলে তাঁদের ক্ষতিপূরণ, পেনশন, গ্র্যাচুইটি, ভবিষ্য তহবিল ও অন্যান্য অবসরজনিত সুবিধা দেওয়া বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে গ্রহীতা ব্যাংক-নীতিমালায় এ বিষয়েও নির্দেশনা দেয়া আছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ব্যাংক একীভূতকরণের উদাহরণ খুব একটা নেই। বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ও বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থাকে একীভূতকরণ করে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক গঠন করা হয়েছিল ২০০৯ সালে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৮:০৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৪

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।