
| মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | প্রিন্ট | 106 বার পঠিত
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হবার পর বিশ্বব্যাপী সাপ্লাই চেইন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার কারণে মূল্যস্ফীতি হু হু করে বাড়তে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিশ্বের এক নাম্বার অর্থনৈতিক শক্তিও উচ্চ মূল্যস্ফীতি কবলে পতিত হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি বিগত ৪০ বছরের রেকর্ড অতিক্রম করে ৯ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আমেরিকা (ফেড) একাধিকবার পলিসি রেট বৃদ্ধি করে। এতে উদোক্তা এবং সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে ব্যাংক ঋণ আগের তুলনায় ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। প্রতিটি সিডিউল ব্যাংক তাদের ঋণের সুদ হার আগের চেয়ে বাড়িয়ে দেয়। এতে বাজারে অর্থের যোগান কমে যায়। যদিও অর্থনীতিবিদগণ পলিসি রেট এতটা বৃদ্ধির পক্ষে ছিলেন না। কারণ এতে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ মন্থরতা সৃষ্টি হবার আশঙ্কা থাকে। মার্কিন য্ক্তুরাষ্ট্র পলিসি রেট বৃদ্ধি এবং অন্যান্য আরো কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে বটে। কিন্তু দেশটির বিনিয়োগ পরিস্থিতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের আমদানি পণ্যের উপর ব্যাপক হারে শুল্ক বৃদ্ধি করেছে। এর পেছনে দেশটি সঙ্গীন অর্থনৈতিক অবস্থা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্তত ৭৭টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পলিসি রেট বৃদ্ধির মাধ্যমে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে সফল হলেও বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে পুরোপুরো ব্যর্থ হয়েছে। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক পলিসি রেট বারবার বাড়ালেও ব্যাংক ঋণের সুদের হার অনেক দিন পর্যন্ত ৯ শতাংশে স্থির করে রেখেছিল। সরকার সমর্থক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা প্রদানের জন্যই ব্যাংক ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশে স্থির করে রেখেছিল। সেই উদ্দেশ্যমূলক ভুল নীতির খেসারত আমরা এখনো দিয়ে চলেছি। চলতি অর্থবছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা অর্জিত হবে না বলেই মনে হয়। ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলেছে, এ বছর (২০২৫) বাংলাদেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশের উপরে থাকবে। আর বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে বাংলাদেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার হচ্ছে ৯ দশমিক ২ শতাংশ। সাধারণভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি যতটা দুর্ভোগ সৃষ্টি করে তার চেয়ে অনেক বেশি সমস্যা সৃষ্টি করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। আগামীতে দরিদ্র মানুষগুলোকে সুরক্ষা দেবার জন্য বিকল্প চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।
Posted ৯:১৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
bankbimaarthonity.com | rina sristy