বিবিএনিউজ.নেট | ১১ আগস্ট ২০২০ | ১:৩৭ অপরাহ্ণ
রাজধানীর সবুজবাগের মাটির ঠিকাদারী ব্যবসায়ী মো. আব্দুল মান্নানের ছেলে সুজন (২৬) হত্যা মামলার অন্যতম পলাতক আসামি মো. ফজলু ওরফে কুটিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সোমবার রাতে রাজধানীর মুগদা থানার জান্নাতবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) একটি বিশেষ টিম।
২০১১ সালের ১৪ মার্চ বন্ধু ফজলু কুটির সঙ্গে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন সুজন। এর ছয়দিন পর ১৮ মার্চ দুপুরে সবুজবাগ থানার দক্ষিণ রাজারবাগ বাগপাড়া শেষমাথা খালের ময়লা পানিতে কচুরী পানার সাথে ভাসমান অবস্থায় সুজনের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে সবুজবাগ থানায় ওই দিনই একটি মামলা দায়ের করেন।
পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) ইউনিট ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ওসমান গণি জানান, মামলাটি প্রথমে সবুজবাগ থানা পুলিশ ও পরবর্তীতে ডিবি কর্তৃক দীর্ঘ প্রায় সাত বছর তদন্তের পর অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। তবে ঘটনার প্রকৃত রহস্য ও অভিযুক্ত পলাতক আসামি আছমা আক্তার ইভা, আরিফুল হক ওরফে আরিফ ও মো. রানা ওরফে বাবু গ্রেফতার না হওয়ায় এবং পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়। অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে ভিকটিমের বাবা নারাজির আবেদন করেন। আদালত পিবিআইকে মামলাটি তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে পলাতক আসামি ইভা, আরিফ ও রানাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে আরিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিজেকে জড়িয়ে সহযোগীদের নাম উল্লেখ করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
আটককৃত ফজলু জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআইকে জানায়, ২০০৮ সালে সুজনের সঙ্গে ইভার বিয়ে হয় এবং ২০০৯ সালে ইভা সুজনকে ডিভোর্স দেয়। এরপরও সুজন প্রায়সময় ইভাকে দেখতে তাদের এলাকায় আসা যাওয়া করত। ইভার সঙ্গে সুজনের বিয়ের আগে থেকেই স্থানীয় ফাইজুল ইভাকে পছন্দ করত। এ ঘটনায় ফাইজুল, ইভার বড় ভাই আরিফের সঙ্গে সুজনের বিভিন্ন সময় তর্কাতর্কি ও হাতাহাতি হয়।
২০১১ সালের ১৩ মার্চ সন্ধ্যার পর আরিফ, ফাইজুল তাদের বন্ধু কুটি ও কালা বাবু ইভাদের বাসার সামনে মাঠে বসে সুজনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায় আরিফ তাদের বাসার পাশের চায়ের দোকান থেকে একটি সাদা পলিথিন ব্যাগ নেয়। ফাইজুল ও আরিফ লাঠি নিয়ে স্থানীয় খালপাড় বালুর মাঠের দিকে যেতে থাকে। এরই মধ্যে কুটি চলে আসে।
রাত ৮টার সময় কুটির সঙ্গে যোগাযোগ করে সুজন খালপাড় বালুর মাঠে আসে। কথাবার্তার একপর্যায় ফাইজুল সুজনকে পেছন থেকে আটকে ধরে। আরিফ পকেট থেকে পলিথিন বের করে কুটিকে দেয়। কুটি পলিথিন নিয়ে সুজনের মাথার উপর থেকে গলায় ঢুকিয়ে প্যাঁচ দিয়ে গিঁট দিয়ে ফেলে। আরিফ লাঠি হাতে নিয়ে সুজনকে পেটাতে থাকে।
পরে কালা বাবু আরিফের হাত থেকে লাঠি নিয়ে সুজনকে পেটাতে থাকে। কিছুক্ষণ পর সুজন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সুজন মারা গেছে নিশ্চিত হয়ে তারা মরদেহ পাশের খালেই ফেলে দেয়। কুটি এবং কালা বাবু খালের নিচে নেমে সুজনের মরদেহ পানিতে ভাসিয়ে দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১:৩৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed