• সৌদি আরামকো ২ হাজার ৫৬০ কোটি ডলারের আইপিও ছাড়ছে

    বিবিএনিউজ.নেট | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ | ১২:১৩ অপরাহ্ণ

    সৌদি আরামকো ২ হাজার ৫৬০ কোটি ডলারের আইপিও ছাড়ছে
    apps

    আগামী সপ্তাহে ইতিহাসের বৃহত্তম আইপিও (ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং) ছাড়তে যাচ্ছে সৌদি আরামকো। আইপিওর মাধ্যমে ২ হাজার ৫৬০ কোটি ডলার সংগ্রহের মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানি হতে যাচ্ছে বর্তমানে সৌদি আরবের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত কোম্পানিটি। খবর গার্ডিয়ান, সিএনএন বিজনেস, রয়টার্স।

    রিয়াদ স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ারদর ৩২ রিয়াল বা ৮ দশমিক ৫৩ ডলার নির্ধারিত হওয়ায় চীনা ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবার আড়াই হাজার কোটি ডলার ভ্যালুয়েশনকে ছাড়িয়ে বিশ্বের বৃহত্তম আইপিও হচ্ছে আরামকোর। ২০১৪ সালে নিউইয়র্ক শেয়ারবাজারে আইপিও ছেড়ে আড়াই হাজার কোটি ডলার সংগ্রহ করেছিল আলিবাবা। এ তালিকাভুক্তির সঙ্গে সঙ্গে সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানি হিসেবে অ্যাপলকে হটিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে সৌদি কোম্পানিটি। আইপিও ছাড়ার পর সৌদি আরামকোর বাজারমূল্য (ভ্যালুয়েশন) দাঁড়াবে ১ দশমিক ৭০ ট্রিলিয়ন ডলার, যেখানে অ্যাপলের বাজারমূল্য বর্তমানে ১ দশমিক ১৭ ট্রিলিয়ন ডলার।

    Progoti-Insurance-AAA.jpg

    আগামী ১২ ডিসেম্বর লেনদেন শুরুর আগে বৃহস্পতিবার রাতে শেয়ারদর নির্ধারণ করেছে কোম্পানিটি। রেকর্ড ভাঙা এ তালিকাভুক্তির মাধ্যমে গত কয়েক সপ্তাহে যে পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছিল, তারই বাস্তব প্রতিফলন ঘটেছে। তবে তা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের দুই ট্রিলিয়ন ভ্যালুয়েশন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেনি। তেলের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা কমানো এবং সৌদি অর্থনীতি আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ২০১৬ সালে আরামকোর আইপিও ছাড়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন যুবরাজ। কিন্তু আইপিও লক্ষ্যমাত্রা গত কয়েক মাসে বেশ সংকুচিত হয়েছে।

    স্থানীয় তাদাউল স্টক এক্সচেঞ্জে মাত্র ১ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ার ছাড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করে আরামকো। বেশির ভাগ বিনিয়োগই আসছে সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে। ২০১৮ সালের দিকে সৌদি আরবের একটি স্থানীয় শেয়ারবাজারসহ বড় কোনো আন্তর্জাতিক বাজারে ৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনা ছিল আরামকোর। এমনটা হলে আরামকোর বাজারমূল্য ১০ হাজার কোটি ডলারে দাঁড়াতে পারত। আন্তর্জাতিক শেয়ারবাজারের জন্য লন্ডন বা নিউইয়র্কের শেয়ারবাজারের কথা ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডে বৈশ্বিক সমালোচনার মুখে পড়ে সৌদি রাজপরিবার এবং হত্যার পেছনে সিআইএর প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি অভিযোগের তীর ছোড়া হয়। এতে মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম অর্থনীতিটির প্রতি আস্থা হ্রাস পায়। হত্যার অব্যবহিত পরে আয়োজিত ‘মরুর দাভোস’ নামক বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন কয়েক ডজন বড় ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতা।


    চলতি বছরের শুরুতে সফলতার সঙ্গে আন্তর্জাতিক বন্ড বিক্রির মাধ্যমে আইপিও আলোচনা ফের শুরু হয়। তেলের দামে অস্থিরতা, জলবায়ু সংকট ও ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া কোম্পানির বাজারমূল্য নিয়ে সন্দিহান হওয়ায় আরামকোর আইপিওতে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশিত সাড়া পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে সৌদি শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পর্কের কারণেও অনেক বিনিয়োগকারী পিছটান দিয়েছেন। ভূরাজনৈতিক বিভিন্ন সংকট ও মানবাধিকার ইস্যুতে সৌদি রাজপরিবার নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসেননি।

    আইপিও সহায়তা করার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের বিনিয়োগকারী ও বিত্তশালী সৌদি পরিবারগুলোর প্রতি সৌদি সরকারের আহ্বানে আরামকোর শেয়ারদর তিন গুণ বেশি নির্ধারিত হয়েছে। ধনী সৌদিদের ওপরই অতিরিক্ত নির্ভর করতে হতে পারে আরামকোর। এছাড়া চীনা বিনিয়োগকারীরা এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন।

    বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং নতুন নতুন শিল্প চালু করতে শতকোটি ডলারের বিনিয়োগ দরকার সৌদি আরবের। ভিয়েনায় তেল উত্তোলন নিয়ে রাশিয়া ও ওপেকভুক্ত অন্যান্য দেশের সঙ্গে বৈঠকের পর আইপিও মূল্য নির্ধারণ করল সৌদি আরব। বিশ্বের ৪০ শতাংশ তেলের প্রতিনিধিত্বকারী জোটটি তেল উত্তোলন কমিয়ে বৈশ্বিক দামে ভারসাম্য আনবে। ২০১৪ সালে তেলের দামে বড় পতন হয় এবং সেখান থেকে এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এতে তেলনির্ভর অর্থনীতিগুলো মারাত্মক চাপের মধ্যে রয়েছে।

    Facebook Comments Box

    বাংলাদেশ সময়: ১২:১৩ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯

    bankbimaarthonity.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    Archive Calendar

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০১১১২১৩১৪১৫১৬
    ১৭১৮১৯২০২১২২২৩
    ২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
  • ফেসবুকে ব্যাংক বীমা অর্থনীতি