• জিপিআরএসে বাসের অবস্থান নির্ণয় * আইন ভঙ্গে রুট পারমিট বাতিল

    সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পুলিশের মহাপরিকল্পনা

    | ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ | ১:৩০ অপরাহ্ণ

    সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পুলিশের মহাপরিকল্পনা
    apps

    রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশ মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। জেনারেল প্যাকেট রেডিও সার্ভিসের (জিপিআরএস) এবং গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমের (জিপিএস) মাধ্যমে বাসের অবস্থান নিশ্চিত করা, গতি নিয়ন্ত্রণে সিসি ক্যামেরা মনিটরিং করা, আইন ভঙ্গ করলে রুট পারমিট বাতিল করা এবং বাসে চড়তে হলে আগেই যাত্রীদের টিকিট কিনতে হবে। এছাড়া নিয়মমাফিক বাস চলাচল করলে পরিবহন কোম্পানিকে পুরস্কার দেয়া হবে। ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে এমন পরিকল্পনা নিয়ে নতুন ’খসড়া নীতিমালা’ তৈরি করা হয়েছে। এ নীতিমালা বাস্তবায়ন করা গেলে সড়কে দ্রুত শৃঙ্খলা ফিরে আসবে বলেও আশা পুলিশের।

    খসড়া নীতিমালায় বাস চলাচলে কঠোর অবস্থান, ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ এবং রিকশা চলাচলের জন্য ৬০টি ব্লক তৈরির নির্দেশনা রয়েছে। এটি পরিবহন সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারের কাছে পাঠানো হবে। সব কর্নার থেকে নীতিমালার ব্যাপারে গ্রিন সিগন্যাল পাওয়া গেলে তা চূড়ান্ত করবে ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশ।

    Progoti-Insurance-AAA.jpg

    জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, সড়কে বিশৃঙ্খলা রোধে পুলিশ রাতদিন কাজ করছে। খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করতে পারলে বিশৃঙ্খলা অনেকাংশ কমে যাবে। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বাসগুলো নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে পরিচালনা করা এবং ফুটপাত হকারমুক্ত করা। তিনি বলেন, ফুটপাত হকারমুক্ত হলে মানুষ হেঁটে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সহজে যেতে পারবেন। অনেকের হাঁটার ইচ্ছে থাকলেও ফুটপাত হকারদের দখলে থাকায় তা আর হয়ে উঠে না। নিয়মিত হাঁটাচলা করলে নগরবাসী অনেক রোগ থেকেও মুক্তি পেতে পারেন।

    ট্রাফিক পুলিশ সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগরীতে প্রতিদিন দুই শতাধিক পরিবহন কোম্পানির প্রায় সাত হাজার পরিবহন চলাচল করে। সড়কে বিপুলসংখ্যক এ বাসের চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে ট্রাফিক পুলিশের হিমশিম খেতে হয়। এর বাইরে নিয়ম ভঙ্গের হিড়িক পড়ে। রাস্তায় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিদিন ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের তিন হাজার সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। নিয়মিত কাজের বাইরে তারা ট্রাফিক সপ্তাহ, পক্ষ, এমনকি মাসব্যাপী ট্রাফিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এসব বিশেষ অভিযান চলাকালে সড়কে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরে এলেও তা স্থায়ী হয় না। এ অবস্থায় সড়কে শৃঙ্খলার জন্য নতুনভাবে ভাবছেন ট্রাফিক সংশ্লিষ্টরা। এরই অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশ রাস্তায় শৃঙ্খলার কথা বিবেচনা করে নতুন ‘খসড়া নীতিমালা’ তৈরি করেছে। নতুন এ পরিকল্পনায় মহাসড়কে বাস চলাচলে কঠোর নিয়ম, রিকশা চলাচল এবং ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।


    খসড়া নীতিমালায় রিকশা চলাচলের জন্য ৬০টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। এতে এক ব্লকের রিকশা আরেক ব্লকে গেলে দ্রুত চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে বাসের শৃঙ্খলা আনার ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বাস ক্রয়ে মডেল নির্ধারণ, শতভাগ যাত্রীকে টিকিট ক্রয়ের পর লাইনে দাঁড়িয়ে বাসে ওঠার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বাস চলাচলের ক্ষেত্রে পথে দরজ বন্ধ রাখতে হবে। এছাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা দিয়ে পরিবহনের গতিবিধি লক্ষ করা হবে।

    নীতিমালায় আরও বলা হয়, সড়কে যে বাস কোম্পানি নিয়মনীতি মান্য করে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করবে, তাদের পুরস্কৃত করা হবে। একই সঙ্গে যে কোম্পানির বাস বেশি আইন ভঙ্গ করবে, তাদের শাস্তিস্বরূপ রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ করা হবে। এছাড়া দক্ষ চালক তৈরির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা থাকতে হবে। বাস স্টপেসগুলোয় ট্রাফিক ডিউটি নিশ্চিত করার নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া শ্রমিকদের কল্যাণে ফান্ড গঠনের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।

    জানতে চাইলে ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রাফিক সিস্টেম বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের উদ্যোগটি সময় উপযোগী। পথচারীদের জন্য ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে পারলে হাঁটার জন্য পথের মধ্যে নেমে যাওয়া কমে যাবে। এতে একদিকে যেমন পথচারী দুর্ঘটনার সংখ্যা কমে যাবে, একই সঙ্গে রাস্তায় নামার কারণে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতো সেটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।

    ড. মিজানুর রহমান আরও বলেন, ঢাকা মহানগরীতে গণপরিবহনের শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণে মেট্রোরেল, আন্ডারগ্রাউন্ড সাবওয়ে প্রয়োজন। যদি দীর্ঘমেয়াদি সুফল পেতে হয়, এর বিকল্প নেই। বাসগুলো দুই বা তিনটি কোম্পানির অধীনে পরিচালিত করা গেলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা অনেকাংশে সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ট্রাফিক পুলিশ যে ট্রাফিক সপ্তাহ বা অন্যান্য পদক্ষেপ নিচ্ছে তাতে একটাই লাভ হয়, সেটা হচ্ছে জনসচেতনতা।

    জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, এ মুহূর্তে পৃথিবীতে কোনো সমস্যা সমাধান করতে তাহলে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই। ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়নে পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকলে অবশ্যই অনেক ভালো কাজ করেছে। তিনি আরও বলেন, তাদের আরও আগে প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া উচিত ছিল। তাহলে সমস্যা সমাধানে গতি আসত। প্রযুক্তিবিদ জব্বার আরও বলেন, এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রযুক্তি এবং আসন্ন প্রযুক্তির মধ্যে সংযোগ থাকতে হবে, তাহলে আমরা প্রযুক্তির সর্বোচ্চ সেবা গ্রহণ করতে পারব। তিনি বলেন, প্রযুক্তিগত দিক থেকে মন্ত্রণালয়ের কাছে পুলিশ কোনো সহযোগিতা চাইলে তা অবশ্যই করা হবে।

    Facebook Comments Box

    বাংলাদেশ সময়: ১:৩০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

    bankbimaarthonity.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    শেখ হাসিনা মিউনিখের পথে

    ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

    Archive Calendar

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০১১১২
    ১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
    ২০২১২২২৩২৪২৫২৬
    ২৭২৮২৯৩০৩১  
  • ফেসবুকে ব্যাংক বীমা অর্থনীতি