শনিবার ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Ad
x

১০ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি এক হাজার ৪২২ কোটি ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ১০ জুন ২০২০   |   প্রিন্ট   |   389 বার পঠিত

১০ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি এক হাজার ৪২২ কোটি ডলার

চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) দেশের পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি দাড়িয়েছে এক হাজার ৪২২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় এক লাখ ২০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। বহির্বিশ্বের সঙ্গে লেনদেনে বাংলাদেশের অবস্থাও ঋণাত্মক রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করা হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে দুই হাজার ৮৭৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে ৪ হাজার ২৯৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার। সেই হিসেবে এপ্রিল শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪২২ কোটি ১০ লাখ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৫ টাকা ধরে) দাঁড়ায় এক লাখ ২০ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা। ঘাটতির এ অঙ্ক ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময় ছিল এক হাজার ৩৯৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

আলোচিত সময়ে আমদানি কমেছে ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। রফতানি কমেছে ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ। তবে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১১ দশমিক ৭১ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকলেও সেপ্টেম্বর থেকে তা ঋণাত্মক হয়েছে। এপ্রিল শেষে লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি ৪.১৩ বিলিয়ন ডলার দাড়িয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসেবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। কিন্তু গত কয়েক বছর উদ্বৃত্তের ধারা অব্যাহত থাকলেও গেল অর্থবছরে ঋণাত্মক ধারায় চলে গেছে। এপ্রিলেও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে।

চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের এপ্রিল শেষে চলতি হিসাবে ৪১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণাত্মক হয়েছে। যা আগের অর্থবছরে একই সময়ে ঋণাত্মক ছিল ৫৩২ কোটি ২০ লাখ ডলার। তবে চলতি অর্থবছরে সার্বিক রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার কারণে প্রথম ১০ মাসে সামগ্রিক লেনদেনে বাংলাদেশের উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ৩০ লাখ ডলারে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে সামগ্রিক লেনদেনে ৫৯ কোটি ডলার ঘাটতি ছিল।

আলোচিত সময়ে সেবা খাতে বিদেশিদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে ৮৫৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে মাত্র ৫৪২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এ হিসেবে ১০ মাসে সেবায় ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩১১ কোটি ১০ লাখ ডলারে। যা গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সমেয় ঘাটতি ছিল ২৬৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত সময়ে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ৩৬৮ কোটি ডলার, এর মধ্যে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ১৮৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরের চেয়ে এফডিআই কমেছে ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ ও নিট কমেছে ২০ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।

শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট) নেই বললেই চলে। গত অর্থবছরেও দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কম ছিল। এবার আরও খারাপ অবস্থায় চলে গেছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (নিট) এসেছে মাত্র ৭০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে এসেছিল এর ২০ গুণের বেশি; ১৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রফতানি বাণিজ্যে বড় ধাক্কার কারণে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। বছরের শুরু থেকে ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে লকডাউনের ফলে স্বাভাভিক কার্যক্রম বন্ধ থাকে। অচল হয়ে পড়ে বিশ্ব বাণিজ্য। এতে নেতিবাচক ধারায় থাকা দেশের রফতানি আয় ফেব্রুয়ারির পর থেকে ব্যাপক হারে কমতে থাকে। অন্যদিকে অর্থনীতি চাঙ্গা রাখার প্রধান সূচক রেমিট্যান্স আয়ও চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিলে অনেক কমে যায়। এসব কারণে বাণিজ্যে বড় ক্ষতির মধ্যে পড়েছে বাংলাদেশ।

Facebook Comments Box

Posted ৪:৪২ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১০ জুন ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11629 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।