নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ১০ মে ২০২৩ | প্রিন্ট | 207 বার পঠিত
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সালাম মুর্শেদী এমপির বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে রাজধানীর গুলশানে সরকারি বাড়ি দখলের ঘটনায় রাজউকের ১৩ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পরিত্যক্ত সম্পত্তি দখল করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ অনুসন্ধানের স্বার্থে দুদক থেকে পাঠানো নোটিশে রাজউকের দায়িত্ব প্রাপ্ত ১৩ কর্মকর্তাকে নির্ধারিত সময়ে হাজির হতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বুধবার (১০ মে) দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানকারী টিমের প্রধান ৩টি পৃথক নোটিশে রাজউক কর্মকর্তাদের আগামী ১৮, ২১ ও ২২ মে দুদকে হাজির হয়ে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে বলেছেন।
দুদকের পাঠানো চিঠিতে অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে, রাজউক চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যদের সহায়তায় আব্দুস সালাম মুর্শেদী রাজধানীর গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর রোডের ২৭/বি নম্বর বাড়িটি দখল করেন। অভিযোগের সুষ্ঠুভাবে অনুসন্ধানের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য শোনা ও গ্রহণ করা প্রয়োজন। যারফলে রাজউকের এই ১৩ কর্মকর্তাকে আগামী ১৮, ২১ ও ২২ মে দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।
তলবি নোটিশ প্রাপ্তদের মধ্যে রাজউকের সাবেক আইন উপদেষ্টা ড. মো. সেলিম, সহকারী আইন উপদেষ্টা মো. মনসুর হাবিব ও সাবেক সদস্য (এস্টেট) কর্নেল অব. নুরুল হককে আগামী ১৮ মে দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
২১ মে রাজউকের পরিদর্শক (এস্টেট) শাহ মো. সদরুল আলম, সহকারী টাউন প্ল্যানার মাহফুজুল কাদের, ডেপুটি টাউন প্ল্যানার কাজী গোলাম হাফিজ, উপপরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) অমিত কুমার দেবনাথ ও টাউন প্ল্যানার জাকির হোসেন এবং আগামী ২২ মে রাজউকের পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-১) হাবিবুর রহমান, মো. নুরুল ইসলাম, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. খোরশেদ আলম ও সদস্য ভূইয়া রফিউদ্দিনকে হাজির হয়ে তাদের বক্তব্য দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
দুদক সূত্র মতে, নথি জালিয়াতির মাধ্যমে সালাম মুর্শেদীকে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন গুলশান-২-এর ১০৪ নম্বর সড়কে সিইএন (ডি)-২৭ নম্বর বাড়িটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এমন অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২০২২ সালের ১১ আগস্ট দুদকে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। দুদক আবেদন আমলে না নেওয়ায় ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। ব্যারিষ্টার সুমন রিট আবেদনে উল্লেখ করেন,সরকারি সম্পত্তি আবদুস সালাম মুর্শেদী নিজের নামে লিখে বাড়ি বানানোর অভিযোগ তদন্তের জন্য দুদকে আবেদন করা হয়। কিন্তু দুদক অভিযোগ আমলে না নেওয়ায় হাইকোর্টে সংসদ সদস্য ও বাফুফের সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে রিট আবেদন করা হয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে রিট আবেদনটি গ্রহণ করেন। রিটে দুদকের চেয়ারম্যান, রাজউকের চেয়ারম্যান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অভিযুক্ত সালাম মুর্শেদী সহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
ব্যারিষ্টার সুমন বলেন, “সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়িটি পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। ওই বাড়ি সালাম মুর্শেদী দখল করে বসবাস করছেন। এ বিষয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ২০১৫ ও ২০১৬ সালে রাউজক চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলেও কোনো জবাব দেয়া হয়নি। এছাড়া ওই জমির নামজারি ও দলিলের বিষয়ে জানতে চেয়ে ২০২২ সালের ৪ জুলাই রাজউকে আবারও চিঠি দেয় গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এখনো যার জবাব মেলেনি।
পরে‘মপি হওয়ার সুযোগে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বা রাজউকের সহায়তায় আবদুস সালাম মুর্শেদী ওই বাড়ি দখল করেছেন। বিষয়টি অনুসন্ধান করে আবদুস সালাম মুর্শেদী এবং রাজউক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিট করেছি।’
হাইকোর্ট ২০২২ সালের ১ নভেম্বর ১০ দিনের মধ্যে হলফনামা আকারে নথি দাখিল করতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে নির্দেশ দেন। এরপর হাইকোর্টে এই অভিযোগের বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ দুদক অনুসন্ধানী টিম গঠন করে এবং কার্যক্রম শুরু করেছে।
Posted ৮:১৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১০ মে ২০২৩
bankbimaarthonity.com | rina sristy