বিবিএনিউজ.নেট | ২৭ এপ্রিল ২০১৯ | ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ আয়ের দেশে পৌঁছবে। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম লেকচার থিয়েটার হলে বাংলাদেশ অর্থনীতি শিক্ষক সমিতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ আয়ের দেশের নিম্নতম পর্যায়ে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হবে।
বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ডলারের কাছাকাছি উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় ৪ হাজার ডলার ছাড়াবে।
তিনি বলেন, এসব অর্জনের পেছনের নায়করা হচ্ছেন কৃষিক্ষেত্রে যারা কাজ করছেন, তারা। বিদেশে তপ্ত মরুভূমিতে কাজ করে খেয়ে না খেয়ে যারা এ দেশে প্রতিনিয়ত রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে সেসব শ্রমিক এবং গার্মেন্টস সেক্টরে যারা বিরামহীন কাজ করছে সেসব মজুর, বিশেষ করে নারীরা।
তরুণদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মূল যে অর্জন হওয়া উচিত মানে স্বাধীনতা; যেটা তোমরা পেয়েছ। তোমাদের যে অধিকার প্রশ্ন করার, সমালোচনা করার, এটা থেকে তোমরা কখনো বিচ্যুত হবে না বলে আমার আশা। সবকিছু অন্ধের মতো গ্রহণ করে নেব, এমনটা হলে কিন্তু জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসার কখনো হবে না।
তিনি আরো বলেন, কোথায় যাচ্ছে তোমাদের অর্থ সেটাকে দেখো। তোমাদের অর্থ কোথায় কীভাবে ব্যয় হচ্ছে, কতটুকু ঠিক কাজে লাগছে, ডোন্ট বি অ্যাফ্রেইড, আসকড দিস কোশ্চেন। কারণ এইটা তোমাদেরই অর্থ, সামগ্রিক সমাজেরই অর্থ। আমাদের বাজেটের ব্যয়ের ন্যায্যতা, গতিবিধি এসব বিষয়ে নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে আরো প্রতিবাদ আশা করি। কিন্তু সেই প্রতিবাদ যেন সভ্যতার সীমারেখো অতিক্রম না করে, সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেন মন্ত্রী।
নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলংকায় সন্ত্রাসী হামলার প্রসঙ্গ টেনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশেও কয়েক বছর আগে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে কিছু উচ্চশিক্ষিত তরুণ যুক্ত ছিল। এই যে নিছক, নিষ্ঠুর, নিরপরাধ মানুষকে হত্যা, সেটা কোনোমতেই কোনো বিচারেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। হতাশ হয়ে কোনো হঠকারী পথে যদি তোমরা (তরুণরা) আগাও তাতে নিজের ক্ষতি হবে, এই প্রিয় মাতৃভূমির ক্ষতি হবে। মাঠপর্যায়ে অনেক রক্ত ঝরবে, অনেক মহামূল্যবান সম্পদ নষ্ট হবে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি শিক্ষক সমিতির দশম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে ‘বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কৌশল’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে সংগঠনটি। সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এমএ জলিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সহসভাপতি এজেডএম সালেহ, পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ প্রমুখ।
আবুল বারকাত বলেন, দেশে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু তা হতে হবে বৈষম্য হ্রাস করার প্রবৃদ্ধি। একই সঙ্গে জিডিপি বাড়বে, প্রবৃদ্ধি বাড়বে কিন্তু বৈষম্য বাড়তে পারবে না। অর্থনৈতিক বৈষম্য, সম্পদবৈষম্য, সামাজিক বৈষম্য এগুলো যদি বাড়তে থাকে, তাহলে কোনোকিছু অর্জনই সম্ভব নয়।
এজেডএম সালেহ বলেন, এখন বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রবৃদ্ধির সঙ্গে আয়ের বৈষম্য দূর করা। আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed