বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ০৪ জুলাই ২০২০ | প্রিন্ট | 424 বার পঠিত
ব্যবসার প্রয়োজনে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড আছদগঞ্জ শাখা থেকে ঋণ সুবিধা নিয়েছিল খাতুনগঞ্জের জয়নাব ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড। তবে গত কয়েক বছর ঋণ পরিশোধে অনিয়মিত হয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে ব্যাংকের সঙ্গে একাধিকবার আলাপ-আলোচনা হলেও ঋণ পরিশোধে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে ব্যাংকটির গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত সুদাসলে মোট খেলাপি পাওনার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আর এ পাওনা আদায়ে ঋণের বিপরীত বন্ধকিতে থাকা সম্পত্তি নিলামে বিক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, ট্রেডিং ব্যবসার প্রয়োজনে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড আসাদগঞ্জ শাখা থেকে ২০১৫ সালের দিকে ঋণ সুবিধা নিয়েছিল খাতুনগঞ্জের জয়নাব ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড। ঋণের টাকায় ব্যবসা সম্প্রসারণ করলেও ব্যাংকের পাওনা নিয়মিত পরিশোধ করেনি। ফলে প্রতিষ্ঠানটি খেলাপি গ্রাহকে পরিণত হয়। আর এ পাওনা আদায়ে ঋণের চট্টগ্রামের রহমানগঞ্জ, পাথরঘাটা এবং জালালবাদ মৌজায় আলাদা আলাদা চারটি দলিলে বিপরীত বন্ধকিতে থাকা সম্পত্তি নিলামে বিক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
আগামী ১৭ জুলাই ব্যাংকটির আসাদগঞ্জ শাখায় এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। এতে আগ্রহী ক্রেতা ও ব্যক্তি অংশগ্রহণ করতে পারবে। অপরদিকে গত বছরের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত শীর্ষ ৩০০ ঋণখেলাপি তালিকায় ১৮৯ নম্বরে ছিল খাতুনগঞ্জের জয়নাব ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের নাম। তখন প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৫ কোটি টাকা।
জয়নাব ট্রেডিংয়ের বিষয়ে জানার জন্য খাতুনগঞ্জ এলাকার একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউ প্রতিষ্ঠান ও মালিক সম্পর্কে তথ্য দিতে পারেনি। এ বিষয়ে খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমার জানামতে খাতুনগঞ্জে জয়নাব ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড নামের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। আসলে এক নামে সাইন বোর্ডওয়ালা দোকানে বহু নামে ট্রেড লাইন্সেস থাকে। ফলে বেশিরভাগ সময় প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যায় না। আর এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকের বড় কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে ঋণের নামে টাকা আত্মসাৎ করে।’ একই কথা বলেন খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের একাধিক সদস্য।
এদিকে নিলাম বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে জয়নাব ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষে প্রতিবাদ লিপি দিয়েছেন আইনজীবী আহসানুল হক হেনা। তার প্রেরিত প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, ২০১৬ সালের আমার মক্কেল ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রথম যুগ্ম আদালতে মামলা করেন, যা চলমান আছে। আর আদালত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সালে আমার মক্কেলকে হয়রানি না করার জন্য আদেশ দেন। এর মধ্যে ব্যাংকের বন্ধকি সম্পত্তি নিলাম করা আদালত অবমাননার শামিল। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুসারে, আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলে খেলাপি ঘোষণা করা যাবে না।
এ বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড আসাদগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক ও এজিএম সাইফুদ্দিন বলেন, ‘জয়নাব ট্রেডিং তিন বছর আগে থেকে ঋণখেলাপি। বারবার পাওয়া পরিশোধের কথা থাকলেও তারা পাওনা পরিশোধ করেনি। ফলে আমরা এখন বন্ধকিতে থাকা সম্পত্তি নিলামে বিক্রয়ের জন্য চেষ্টা করছি। বেশ কয়েকজন আগ্রহী ক্রেতা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আর যদি বিক্রয় না হয়, তাহলে আমরা অর্থঋণ আদালতে মামলা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। আর তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের খবর জানি না। মনে হয় ব্যবসা বন্ধ। আর উনাদের পক্ষের আইনজীবী যে প্রতিক্রিয়ামূলক বক্তব্য দিয়েছেন তা পুরোপুরি সঠিক নয়। কারণ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিয়মিত গ্রাহকরা কিস্তি দিতে না পারলে তাকে খেলাপি ঘোষণা করা হবে না। তবে তা খেলাপি গ্রাহকের জন্য প্রযোজ্য নয়। কিন্তু তার মক্কেলের প্রতিষ্ঠান তো তিন বছর ধরে খেলাপি।’
Posted ১:০২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৪ জুলাই ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed