শনিবার ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আয় বেড়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে

আদম মালেক   |   রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১   |   প্রিন্ট   |   383 বার পঠিত

আয় বেড়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে

দেশের অনেক কোম্পানি এখন আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ তৈরী করছে। এক সময় যেখানে ৮০ শতাংশ ওষুধ আমদানি করা হতো এখন তা নেমে এসেছে ৩ শতাংশে । এভাবে দেশীয় বাজার দখলের পর ওষুধ শিল্প এখন উড়াল দেয়ার পথে। এ খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, বিশ্বের ১২৭ টি দেশে এখন বাংলাদেশের ওষুধ রফতানি হচ্ছে যদিও তা পরিমাণে কম। তবে ২০২৭ সালের মধ্যে বিশ্বে ওষুধ বাণিজ্যের ১০ শতাংশ দখল করা সম্ভব। এতে ওষুধ রফতানির পরিমাণ দাঁড়াবে ১ হাজার ৭শ কোটি ডলার। ঘরে বাইরে দেশি ওষুধের ক্রমবর্ধমান বিস্তার ও সম্ভাবনা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিগুলোর তালিকায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

এদিকে কভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে গেল বছরের মার্চ থেকে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছিল। এতে হুমকির মুখে হাজারো প্রতিষ্ঠান। তবে, এর ঠিক বিপরীত চিত্র ওষুধ শিল্পে। করোনাকালেও ফুলে- ফেঁপে উঠছে অনেক কোম্পানি। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ খাতের কোম্পানিগুলোর আয় ও নিট মুনাফার তথ্য তেমনটাই বলছে। এ সময় ১৫ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে কমেছে ৫ কোম্পানির। লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখেছে ১ কোম্পানি আর লোকসান কমেছে ১টির। নতুন করে লোকসানে পড়েছে ১ কোম্পনি, মুনাফা অপরিবর্তিত ১ কোম্পানির।

পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত ২৪ কোম্পানির প্রকাশিত অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এসব তথ্য মিলেছে।

এ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ৩১টি। এর মধ্যে ওষুধ খাতের ১৯টি, যার ১৫টি সম্প্রতি অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ সময়ে কেমিক্যাল খাতের ৯ কোম্পানিও আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জুলাই থেকে ডিসেম্বরে ওষুধ খাতের ১৫ কোম্পানি মোট এক হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা করেছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল এক হাজার ১২০ কোটি টাকা। সর্বশেষ অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে ৭৫২ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে, যা গত বছরের একই প্রান্তিকে ছিল ৫৫৯ কোটি টাকা। অন্যদিকে কেমিক্যাল খাতের ৯ কোম্পানি ছয় মাসে নিট ২৬৯ কোটি টাকা মুনাফার তথ্য দিয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি। এছাড়া অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে নিট মুনাফা করেছে প্রায় ৮৩ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি।

সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওষুধ খাতে সবচেয়ে বেশি মুনাফা বেড়েছে বিকন ফার্মার। ২০১৯ সালের অক্টেবার ডিসেম্বরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১২ পয়সা। ২০২০ সালের একই সময়ে আয় বেড়ে ১ টাকা ১ পয়সায় দাঁড়ায়। এক বছরে আয় বেড়েছে ৭৪১ দশমকি ৬৭ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে বিকন ফার্মার কোম্পানি সচিব খলিলুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অনেক কোম্পানি এখন আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ উৎপাদন করে। এ কারণে বাংলাদেশের ওষুধ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। তাছাড়া বিকন ফার্মার ওষুধের গুণগত মান অনেক ভালো। এ কারণে আমাদের ওষুধের বিক্রি বেশি। তাই উত্তরোত্তর আয় বাড়ছে।

সবচেয়ে বেশি আয় কমেছে এফসি অ্যাগ্রোর। ২০২০ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে শূন্য দশমিক ৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল শূন্য দশমিক ৩১ পয়সা । ১ বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ৯০ দশমিক ৩২ শতাংশ। অন্যদিকে দুই প্রান্তিক মিলিয়ে জুলাই-ডিসেম্বর’২০২০সালে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে শূন্য দশমিক ৯ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল শূন্য দশমিক ৮১ পয়সা । ১ বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ৮৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

তাছাড়া অক্টোবর ডিসেম্বর’২০২০ সালে শেয়ারপ্রতি আয় অ্যাডভেন্ট ফার্মায় ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ; ইন্দো বাংলা ফার্মায় ২৫ শতাংশ; ফার্মা এইডে ২১ দমমিক ৭৪ শতাংশ ও ওয়াটা কেমিক্যালে ৩৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমেছে। আর একই বছরের জুলাই-ডিসেম্বরে শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে অ্যাডভেন্ট ফার্মায় ২৪ দশমিক ০৪ শতাংশও ইন্দো বাংলা ফার্মায় ২০ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
এদিকে লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখেছে এসিআই লিমিটেড। ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর’২০) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ১৯ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ১১ টাকা ৯ পয়সা।
এদিকে, ৩ মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২০) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৬৫ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ৬ টাকা ৩৫ পয়সা।
এদিকে কিছুটা লোকসান কাটিয়ে উঠছে বেক্সিমকো সিনথেটিক্স। ২০১৯ সালের অক্টোবর ডিসেম্বরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৭২ পয়সা। পরের বছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ৪৮ শতাংশ। এক বছরের মধ্যে লোকাসান কমেছে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। অন্যদিকে দুই প্রান্তিক মিলিয়ে (জুলাই-ডিসেম্বর’২০) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ১ টাকা ৩২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৪০ পয়সা। এক বছরের মধ্যে লোকাসান কমেছে ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ।

নতুন করে লোকসানের কবলে পড়েছে ফার কেমিক্যাল। দুই প্রান্তিক মিলিয়ে (জুলাই-ডিসেম্বর’২০) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে আয় ছিল ৩৮ পয়সা।
২য় প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২০২০) কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিল ১৮ পয়সা।

 

 

 

 

 

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।