বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সাড়ে ২৪ কোটি টাকার বীমা দাবির চেক হস্তান্তর

গ্রাহকরাই হবে পপুলার লাইফের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

বিশেষ প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ০৪ আগস্ট ২০২২   |   প্রিন্ট   |   307 বার পঠিত

গ্রাহকরাই হবে পপুলার লাইফের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

গ্রাহকরাই পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী। বুধবার (৩ আগস্ট) কোম্পানির ৭ হাজার ৪৬৮ গ্রাহকের ২৪ কোটি ৪১ লাখ ৬৮ হাজার ১৮৯ টাকার বীমা দাবির চেক হস্তান্তর ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, যেসব গ্রাহক বিড়ম্বনার শিকার না হয়ে সঠিক সময়ে বীমা দাবি পেলেন, তারাই পপুলার লাইফের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করবে। বীমা খাতের অনেক নেতিবাচকতার মাঝে পপুলার লাইফের যথা সময়ে দাবি পরিশোধ উদাহরণ হয়ে থাকবে। যেসব কোম্পানি ভালো গ্রাহক সেবা দেবে তাদেরকে আলাদাভাবে তালিকাভুক্ত করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন আইডিআরএ চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, দেশে বীমা খাতের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনীতির তিনটি প্রধানতম খাত ব্যাংক, বীমা ও পুঁজিবাজার। এই তিন খাত সমানতালে না চললে অর্থনীতি তার কাক্সিক্ষত জায়গায় পৌঁছাতে পারবে না। অথচ দেশের অর্থনীতিতে বীমার মতো এত বড় একটি সম্ভাবনাময় খাতের অবদান খুবই কম।

বীমা খাতের অভিভাবক সংস্থার চেয়ারম্যান বলেন, সরকার বীমাকে এগিয়ে নিতে এ খাতের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। গুরুত্বের অংশ হিসেবেই আইডিআরএ প্রতিষ্ঠিত হয়।
বীমা খাতে কর্পোরেট গভর্নেন্সের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বীমা কোম্পানিগুলো উচ্চ কমিশনে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করছে। সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে, সঠিক তথ্য না দিয়ে বীমা পলিসি করানো হয়। ব্যবস্থাপনা ব্যয়ও অনেক বেশি, যা দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে অন্তরায়। তিনি বলেন, আগে থেকেই লাগাম টেনে না ধরলে অনেক কোম্পানিই দাবি মেটাতে পারবে না। তখন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষাই আইডিআরএ’র প্রথম অগ্রাধিকার মন্তব্য করে জয়নুল বারী বলেন, কোনোভাবেই যাতে গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের সুযোগ তৈরি না হয় আইডিআরএ সেটি নিশ্চিত করতে চায়। এ জন্য আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করছি। আমরা বীমা খাতে ব্যাংকিং খাতের মতো একটি স্বচ্ছতা নিয়ে আসতে চাই।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন বলেন, যে দেশ বীমার দিক থেকে যত শক্তিশালী, সে দেশ অর্থনীতিতে ততো শক্তিশালী। কিন্তু আমরা এক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছি।

তিনি বলেন, বাজারে গ্রাহকের উপযোগী নতুন নতুন বীমা পণ্য নিয়ে আসতে হবে। তা না হলে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করা যাবে না।

বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থায় জনবল বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে শেখ কবির বলেন, আইডিআরএ’র নিজস্ব লোক থাকতে হবে। এ সময় বীমার প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতে গণমাধ্যমে ইতিবাচক খবর প্রকাশের আহ্বান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল্লাহ হারুন পাশা, আইডিআরএ’র সদস্য (প্রশাসন) মইনুল ইসলাম, আইডিআরএ’র সদস্য (নন-লাইফ) মো. নজরুল ইসলাম, আইডিআরএ’র সদস্য (লাইফ) কামরুল হাসান, নির্বাহী পরিচালক (যুগ্ম সচিব ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট বি এম ইউসুফ আলী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ হারুন পাশা বলেন,
দেশে স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানি নেই। যদিও লাইফ বীমার মাধ্যমে কিছুটা স্বাস্থ্য বীমা চালু আছে, তবে নন-লাইফে নেই। সরকার চেষ্টা করছে আলাদা স্বাস্থ্য বীমা চালু করার। এ জন্য মন্ত্রণালয় এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আলাদা স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানি চালুর চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বে বীমা ছাড়া এক পা চলা যাবে না। আমাদের পাশের দেশেগুলোতেও এখন বীমাকে অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়। উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে দেখা যাবে তাদের অর্থনীতিতে বীমার অবদান ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। কিন্তু আমাদের দেশে মাত্র দশমিক ৫৬ শতাংশ। ২০২১ সালে বীমাতে অবদান ৪ শতাংশ হবে বলে ধরা হলেও তা আমরা করেতে পারিনি।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে দুই ধরনের বীমা কোম্পানি ব্যবসা করে আসছে। লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে থেকে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে। তারা সেই প্রান্তিক মানুষের কাছ থেকে এজেন্সির মাধ্যমে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে থাকে। কিন্তু এই এজেন্সিগুলো মানুষকে ভুলভাল বুঝিয়ে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে। তারা যদি মানুষকে ভালোভাবে বুঝাতো তাহলে এসব মানুষ হয়রানির শিকার হতো না। কিন্তু তাদের বুঝানো হয় না। তাই প্রান্তিক অঞ্চলে বীমার প্রতি মানুষের আস্থা কমছে।

অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ হারুন পাশা বলেন, পপুলার লাইফের আজকের এই দাবি পরিশোধ অনুষ্ঠানে এসে আমার মনে হচ্ছে আমি এখন মানুষকে বলতে পারবো বীমাতে দাবি পরিশোধ করা হয়। কেননা এখানে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার জনের প্রায় সাড়ে ২৪ কোটি টাকার দাবি পরিশোধ করা হচ্ছে। পপুলার লাইফ আমাদের খাতায় সবসময় ভালো কোম্পানি হিসেবে ছিল এবং থাকবে বলে আশা করি।

আইডিআরএ’র সদস্য (প্রশাসন) মইনুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বলেন, বীমা খাতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আস্থা ও সুশাসনের অভাব। যত দ্রুত ও যথাসময়ে বীমা দাবি পরিশোধ করা যাবে ততো বেশি সুনাম বাড়বে।

আইডিআরএ’র সদস্য (নন-লাইফ) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সময় মতো দাবি পরিশোধ না করলে বীমা খাতে আস্থা ফেরানো যাবে না। সঠিক সময়ে, যথাযথভাবে গ্রাহকের দাবি পরিশোধ করতে হবে।

আইডিআরএ’র সদস্য (লাইফ) কামরুল হাসান বলেন, বীমা দাবি পরিশোধের এই অংক একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম ইউসুফ আলী বলেন, পপুলার লাইফ কখনো বীমা দাবি পরিশোধে কোনো বিলম্ব করে না। পপুলার এ পর্যন্ত ৫ হাজার ২৩৯ কোটি ৬ লাখ টাকার, ৩৮ লাখ ৫২ হাজার ৯০৩ টি দাবি পরিশোধ করেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

 

 

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ২:২০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৪ আগস্ট ২০২২

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।