মঙ্গলবার ১৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই-সালমান এফ রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২২   |   প্রিন্ট   |   106 বার পঠিত

পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই-সালমান এফ রহমান

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই।

শনিবার (২৯ অক্টোবর) এফবিসিসিআই আয়োজিত দ্য রোল অব পিপিপি ইন অ্যাচিভিং ভিশন ২০৪১’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

সালমান এফ রহমান আরো বলেন, আমাদের বড় সমস্যা হলো ঋণ খেলাপি। তবে ঋণ খেলাপির সমস্যা সারা বিশ্বেই রয়েছে। অন্যান্য দেশগুলো এসব সমস্যার মধ্যেও সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ভারত ঋণ খেলাপিদের আইন অনুযায়ী সাজা দিচ্ছে। তবে কোম্পানিকে তারা বাঁচিয়ে রাখছে। আমরাও এটা নিয়ে কাজ করছি। আমদের আইনটি পরিবর্তন করা হবে। ব্যাংক আইনে তাদের মতো করে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, পাবলিক পার্টনারশিপ প্রোজেক্টগুলোতে আমরা জোর দিচ্ছি। বর্তমানে এরকম ৭৬টি প্রজেক্ট হাতে রয়েছে। এর মধ্যে ১টির কাজ শেষ হয়েছে। জাপানের সঙ্গে ৩ থেকে ৪টির কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া কোরিয়ার সঙ্গেও ৩ থেকে ৪টি প্রজেক্টের কাজ চলছে। কাজগুলো শেষ হলে আমরা এর সুফল পাবো।

সালমান এফ রহমান বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে আমাদের ফরেন এক্সচেঞ্জ ছিলো না। এটি ছিলো সবচেয়ে বড় সমস্যা। তখন আমরা শূন্য রিজার্ভ দিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। সেসময় জি টু জি পদ্ধতিতে আমরা পণ্য আমদানি করতাম। তখন আমরা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বেসরকারি খাতে এক্সপোর্ট করার বিষয়টি বলা হলো। বঙ্গবন্ধু বললেন এটি একটি ভালো উদ্যোগ, তবে ৬০ ভাগ ট্রেডিশনাল পণ্য এবং ৪০ শতাংশ নন-ট্রেডিশনাল পণ্য রপ্তানি করতে হবে। পাকিস্তান আমলে আমরা কোনদিন চা রপ্তানি করিনি। তবে বঙ্গবন্ধুর পরামর্শে আমরা চা ও মধুসহ আরও অনেকগুলো নন-ট্রেডিশনাল পণ্য রপ্তানি করেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন দেশকে এগিয়ে নিতে হলে বেসরকারি খাতকে প্রয়োজন। ঠিক সেসব ভিত্তির উপরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে কাজ শুরু করলেন। বেসরকারি খাতের বেশ কিছু কাজ প্রথম হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে। ১৯৯৬ সালে প্রথম বেসরকারি খাতে এয়ারলাইন্স লাইসেন্স দেওয়া হয়। এছাড়া শেখ হাসিনার সময়ে পাওয়ার জেনারেশনে বেসরকারি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তখন বেসরকারি খাতে টেলিভিশন স্টেশনের লাইসেন্সও তখন দেওয়া হয়। এছাড়া ব্যাংক ও ইন্সুরেন্সের বেসরকারি খাতে অনেকগুলো লাইসেন্স বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ক্ষমতায় এসে দিয়েছিলেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের ধারাটি ৭০ দশকে বঙ্গবন্ধুর আমলেই শুরু হয়েছিলো। বারডেম হসপিটালে সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিবিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের ৭৭ টি প্রজেক্ট তালিকাভুক্ত হয়েছে। ২০০৯ সালে দেশে সরাকারি বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছিল ১৫ শতাংশ। একই সময়ে বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল ৮৫ শতাংশ।

সেমিনারে পিপিপিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন-পিপিপি প্রজেক্ট করতে গেলে সবচেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে আস্থাহীনতা। পিপিপি অথরিটিতে প্রথম ৭ মাস কাজ করার যে অভিজ্ঞতা আমার তা থেকে দেখা যায় সরকার বিশ্বাস করছে না প্রাইভেট সেক্টরকে। প্রাইভেট সেক্টর বিশ্বাস করছে না সরকারকে। পিপিপির সকল কার্যক্রম সালমান এফ রহমান দেখবাল করে থাকেন। পিপিপিতে প্রজেক্ট সিলেকশন করতে সময়ক্ষেপন কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে, পিপিপির যে পার্টনার তাকে আমরা পার্টনার হিসেবে বিবেচনা করি না, তাকে আমরা কন্ট্রাক্টর হিসেবে দেখতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের চলমান যে প্রজেক্ট আছে, এগুলোর সুফল যখন পেতে শুরু করব, তখন সবার আস্থা ফিরবে। এছাড়া, ওয়াটার সাপ্লাই, স্যানিটেশন এবং মিউনিসিপ্যাল ওয়াস্টেজে আগামী দিনে পিপিপি ভূমিকা রাখতে পারবে।

সেমিনারে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, আমাদের দেশে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) এক ধরনের অনাস্থার তৈরি হয়েছে। বেসরকারী বিনোগকারীদের সরকার বিশ্বাস করতে পারে না, আবার বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা সরকারকে বিশ্বাস করতে পারে না। এরকম যেসব অনাস্থা রয়েছে তা দূর করতে হবে। এছাড়া ইমোশনাল সিদ্ধান্ত থেকে আমাদের বের হতে হবে। কারণ আমরা পিপিপি তে অনেক বেশি সফল না। তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হলে আমাদের ঢাকার যানজট অনেক কমবে। এটা আমাদের একটি সাফল্য। এরকম রেলসহ অনেক কিছু আমাদের দরকার। আমরা এসব কাজ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে করতে পারি।

টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং নির্ধারিত সময়ে দেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) সক্রিয় করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের পিপিপি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা উচিত। বন্দর থেকে পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া সহজ হওয়া উচিত এবং সময় বাঁচানোর জন্য শর্টকাট রাস্তা তৈরি করা উচিত। তিনি সকল ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন, এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীদের সাথে প্রতিযোগিতা করার জন্য একটি দক্ষতা ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন এফআইসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট এবং স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের সিইও নাসের এজাজ বিজয়। প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন পিপিপি’র উপদেষ্টা মো. হাসান হায়দার এফসিসিএ, পলিসি এক্সচেঞ্জ অফ বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান ড. এম. মাসরুর রিয়াজ, এফবিসিসি এর প্যানেল উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শামসুল হক এবং এফবিসিসি এর পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী।

 

 

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৮:২২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২২

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11156 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।