শনিবার ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গোপসাগরে মিথেন গ্যাসের অস্থিত্ব পেল বাংলাদেশ

বিবিএ নিউজ.নেট   |   বুধবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২২   |   প্রিন্ট   |   191 বার পঠিত

বঙ্গোপসাগরে মিথেন গ্যাসের অস্থিত্ব পেল বাংলাদেশ

বঙ্গোপসাগরের মহীসোপানে মিথেন গ্যাসের (গ্যাস হাইড্রেন্ট) অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনিটের প্রধান খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমরা পুরো এলাকায় এখনও সার্ভে করতে পারিনি। তবে যতটুকুতে করতে পেরেছি তাতে আমরা ধারণা করছি ১৭ থেকে ১০৩ টিসিএফ গ্যাস হাইড্রেন্ট এখানে রয়েছে।’

দেশে তীব্র গ্যাস সংকট, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, আমদানি করা তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দর বৃদ্ধিতে অনেক দিন ধরেই চাপে সরকারের জ্বালানি বিভাগ। এর মধ্যে সাগরে গ্যাস পাওয়ার খবর স্বস্তিই বলা যায়।

জ্বালানি সংকট সামাল দিতে এরই মধ্যে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান জোরালো করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সংকটকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে সাগরে শুরু হচ্ছে বহুমাত্রিক জরিপ বা মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভে।

অনুসন্ধানের জন্য বঙ্গোপসাগরের অগভীর ও গভীর অংশকে মোট ২৬টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে অগভীর অংশে ব্লক ১১টি। আর গভীর সমুদ্রে ব্লক ১৫টি। অগভীর ব্লকে পানির গভীরতা ২০০ মিটার পর্যন্ত। এর পরে গভীর সমুদ্র ব্লক।

অগভীর সমুদ্রের ৯ নম্বর ব্লকে ১৯৯৬ সালে সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে কেয়ার্নস এনার্জি, যা এখন পর্যন্ত দেশের একমাত্র সামুদ্রিক গ্যাসক্ষেত্র। ১৯৯৮ সালে সেখান থেকে গ্যাস উৎপাদন শুরু হয়। মজুত ফুরিয়ে যাওয়ায় ২০১৩ সালে গ্যাসক্ষেত্রটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
এ ছাড়া কুতুবদিয়ার সাগরতীরে গ্যাসের সন্ধান মিললেও তা বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য বিবেচিত হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক তেল-গ্যাস কোম্পানি কনোকোফিলিপস ২০০৮ সালের দরপত্র প্রক্রিয়ায় গভীর সমুদ্রের ডিএস-১০ ও ডিএস-১১ নম্বর ব্লক ইজারা নিয়েছিল। দুই বছর অনুসন্ধান কাজ করার পর গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে মতভেদের কারণে ২০১৪ সালে ব্লক দুটি ছেড়ে দেয় কনোকো।

২০১২ সালের ডিসেম্বরে ডাকা অন্য আরেক আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে গভীর সমুদ্রের ডিএস-১২, ডিএস-১৬ ও ডিএস-২১–এই তিন ব্লকের জন্য যৌথভাবে দরপ্রস্তাব জমা দিয়েছিল কনোকো ও স্টেট অয়েল। পরবর্তী সময়ে কনোকো নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় ব্লকগুলো ইজারা দেয়া সম্ভব হয়নি।

একই সময়ে অগভীর সমুদ্র্রের ব্লকগুলোর জন্য ভিন্ন একটি দরপত্র আহ্বান করে পেট্রোবাংলা। এই দর প্রক্রিয়া এসএস-১১ নম্বর ব্লক সান্তোস ও ক্রিস এনার্জি এবং এসএস-৪ ও এসএস-৯ নম্বর ব্লক ভারতীয় দুটি কোম্পানি ওএনজিসি ভিদেশ ও অয়েল ইন্ডিয়া ইজারা নিয়েছিল।

যদিও একসময় সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধের কারণে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের বাধার মুখে ছিল বাংলাদেশ। বিষয়টি আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

আদালতের রায়ে প্রায় ৯ বছর আগে (২০১২) মিয়ানমারের সঙ্গে এবং সাত বছর আগে (২০১৪) ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানা নিষ্পত্তি হয়। প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার ২৮৯ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র অঞ্চলে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়, ‘সমুদ্র বিজয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

গভীর সাগরের তেল-গ্যাস উত্তোলন নিয়েও তৈরি হয় নতুন সম্ভাবনা। তবে সেই সম্ভাবনা কোনো কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এরপর জ্বালানি বিভাগ বিশেষ আইনে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয়। দরপত্র প্রক্রিয়া ছাড়াই ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোর (আইওসি) কাছ থেকে আগ্রহপত্র চায় পেট্রোবাংলা।

সিঙ্গাপুরের ক্রিস এনার্জি, দক্ষিণ কোরিয়ার পোসকো দাইয়ু ও নরওয়ের স্টেট অয়েল আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে প্রস্তাব চাওয়া হলে শুধু গভীর সমুদ্রের ১২ নম্বর ব্লকের জন্য দাইয়ু প্রস্তাব দাখিল করে। দীর্ঘ আলোচনার পর ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে দাইয়ু করপোরেশনের সঙ্গে উৎপাদন-অংশীদারত্ব চুক্তি (পিএসসি) সই করে পেট্রোবাংলা। দাইয়ু এই ব্লকের পাশেই মিয়ানমারের একটি সমুদ্র ব্লক থেকে গ্যাস তুলছে। মিয়ানমার সেই গ্যাস রপ্তানিও করছে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৫:৩৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২২

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11187 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।