বিবিএনিউজ.নেট | মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০১৯ | প্রিন্ট | 722 বার পঠিত
বীমাশিল্পে অনবদ্য অবদান রাখায় সম্মাননা (মরণোত্তর) পেলেন পপুলার লাইফের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত গিয়াস উদ্দিন আহামেদ। সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অর্থনীতি বিষয়ক পত্রিকাগুলোর মালিকদের সংগঠন ইকনোমিক মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশন (ইমা) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
আলহাজ গিয়াসউদ্দিন আহামেদ ছিলেন অর্থনীতি সেক্টরের পথিকৃৎ পিপলস্ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা এবং পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের উদ্যোক্তা- প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট শিল্পপতি, সমাজসেবক এবং শিক্ষানুরাগী।
তিনি স্বীয় প্রচেষ্টায় নিজেকে আর্থিক সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কাজের ব্যাপ্তি ছিল তার ভোর থেকে মধ্যরাত অবধি। আর এ কাজের প্রেরণা জোগাতেন তার প্রিয় সহধর্মিণী মঞ্জুরা আহামেদ। মরহুম গিয়াস উদ্দিন আহামেদ ৬০ বছর আগে মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে পাট ব্যবসার মাধ্যমে শুরু করেন কর্মজীবন।
পাটশিল্প বিকাশে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। ৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশের পাট ব্যবসাকে উজ্জীবিত করে রেখেছিলেন তিনি। ১৯৯৫-৯৬ এবং ২০০৯-১০ অর্থবছরে পাট রপ্তানিতে প্রথম স্থানঅধিকার করেন। ২০১৭ সালেও এ ধারবাহিকতা বজায় রাখে তার প্রতিষ্ঠিত কাঁচাপাট রপ্তানিকারক সেরা প্রতিষ্ঠান পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ। দেশ স্বাধীনের পূর্ব থেকেই তিনি পাট ব্যবসার পাশাপাশি ব্যাংক-বীমা ব্যবসায়ও সম্পৃক্ত ছিলেন। আশির দশকে শেয়ারবাজারে যে কয়জন সম্পৃক্ত ছিলেন, তাদের অন্যতম ছিলেন তিনি। কেবল ব্যাংক-বীমা ও আর্থিক সেক্টরেই সফল উদ্যোক্তা ছিলেন না, ছিলেন বহুমুখী একজন সৃজনশীল ব্যতিক্রমধর্মী মানুষ। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন খুবই পরিশ্রমী, সৎ এবং নিষ্ঠাবান।
১৯৮৫ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি পিপলস্ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিপুলসংখ্যক লোকের কর্মসংস্থানের কথা ভেবে পিপলস্ ইন্স্যুরেন্সের কয়েকজন সহযোগী নিয়ে ২০০০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। পূবালী ব্যাংক লিমিটেড প্রতিষ্ঠার পেছনে তার অবদান অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তাঁরই পরামর্শে দুর্দিনে পড়া পূবালী ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছিল।
২৫ বছর ছিলেন তিনি এ ব্যাংকের ডিরেক্টর। বিপুল সম্পদের অধিকারী ছিলেন তিনি। ধন সম্পদ খরচের ক্ষেত্র নির্বাচনে একটি নীতি অনুসরণ করতেন। গোপনে দান করতে পছন্দ করতেন; জীবনযাপন ছিল অতি সাধারণ। মরহুম গিয়াস উদ্দিন আহামেদ চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার গাজীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাতৃভক্ত পুত্র মাকে স্মরণীয় করার মানসে মায়ের নামে মতলব শহরে ‘রয়মনেন নেছা ডিগ্রি কলেজ ও ছাত্রাবাস স্থাপন করেছেন।
দীর্ঘ বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী বহুমুখী প্রতিভায় ভাস্বর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সেক্টরের কিংবদন্তি হেরে গেলেন ক্যান্সারের কাছে। ২০১০ সালে ৩১ আগস্ট ৭২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। নিজ জন্মভূমির মাটিতে শায়িত হলেন প্রয়াত মা-বাবার কবরের পাশেই; রেখে গেছেন তার অকান্ত পরিশ্রমের ফল শিল্পকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দৃষ্টান্তমূলক সমাজসেবা।
Posted ৬:৪১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed