বিবিএ নিউজ.নেট | শনিবার, ২৬ জুন ২০২১ | প্রিন্ট | 218 বার পঠিত
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে মহামারীর মধ্যে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ৪৫ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার, যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
এই রিজার্ভ দিয়ে প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার হিসেবে ১১ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বেড়েছে ১২ কোটি ৬২ লাখ ডলার।
মহামারীর মধ্যেই গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৪ দশমিক ০২৮ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২০ সালের ২৩ জুন রিজার্ভে ছিল ৩৫ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, গত এক বছরে রিজার্ভ বেড়েছে ১০ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার। মূলত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের কারণে রিজার্ভে এই উল্লম্ফন।
চলতি বছরের ১১ মাসে অর্থাৎ ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত প্রবাসীরা ২২ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন, যা গতবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোচ্চ রিজার্ভ ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। এরপর ২০২০ সালের ৪ জুন প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। এরপর মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে গত ২৪ জুন রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়।
পরে গত ৩০ জুন ৩৬ বিলিয়ন ডলারে ও গত ২৮ জুলাই ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন উচ্চতায় পৌঁছে রিজার্ভ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ৩৮ দশমিক ১৫ বিলিয়ন এবং ১ সেপ্টেম্বর ৩৯ দশমিক ৪০ ডলারে উন্নীত হয়। গত বছরের ৮ অক্টোবর এসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। পরে ৩০ অক্টোবর ৪১ বিলিয়ন ডলার, ১৫ ডিসেম্বর ৪২ বিলিয়ন ডলার ও গত ৩০ ডিসেম্বর এ রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, মূলত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করেই রিজার্ভে একের পর এক নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। গত বছরের মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর পযন্ত প্রায় প্রতি মাসেই প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন দেশে। এতে করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়ছে।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ কোটিরও বেশি প্রবাসী রয়েছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স জিডিপিতে অবদান রেখেছে ১২ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর শীর্ষ ১০টি দেশ হলো সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, ওমান, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, কাতার, সিঙ্গাপুর ও ইতালি।
মহামারীর মধ্যে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।
চলতি বছরের ১১ মাসে জুলাই-মে সময়ে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩৫ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের একই সময়ের ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি।
Posted ১:৪৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৬ জুন ২০২১
bankbimaarthonity.com | rina sristy