বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুয়ার ছিল অবাধ-বি এম ইউসুফ আলী

  |   বুধবার, ২৩ মার্চ ২০২২   |   প্রিন্ট   |   272 বার পঠিত

শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুয়ার ছিল অবাধ-বি এম ইউসুফ আলী

বঙ্গবন্ধু জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম এর প্রেসিডেন্ট ও পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম ইউসুফ আলীর সাথে। তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস সম্পর্কে বলতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনের কিছু বিষয় তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনীতে আমরা অনেক কিছুই দেখতে পাই যেগুলো এই সময়েও আমাদের প্রেরণা হয়ে আছে। বঙ্গবন্ধু যে কেবল একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রই জন্ম দিয়েই ক্ষান্ত হননি। তিনি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র কীভাবে মাথা উঁচু করে টিকে রইবে, তাঁর চিন্তাধারাও করে গেছেন।

‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা, সব শিশুরই অন্তরে।’ দেশকে যুগে যুগে যোগ্য নেতৃত্বের হাতে নিরাপদে রাখতে প্রতিটি শিশুকে তিনি গড়ে তুলতে চেয়েছেন আগামীর ভবিষ্যৎ হিসেবে। এমন চিন্তার অসংখ্য প্রতিফলন ঘটেছে তাঁর কন্টকার্কীর্ণ দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে। দেশ গঠনে রাজনীতির কঠিন অধ্যায়ের বিকল্প যে শিশুদের জন্য কাজ করা তারও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তিনিই দেখিয়েছেন। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে দেশের ক্ষমতা দখল করে পাঁচ বছরের জন্য দেশে রাজনীতি নিষিদ্ধ করলেন। বঙ্গবন্ধুসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে রাখলেন কারাগারে। সেই গ্রেফতারের পূর্বমুহূতে বঙ্গবন্ধু তরুণদের দিয়ে গেলেন এক যুগান্তকারী নির্দেশ। বললেন, ‘এই পাঁচ বছর তোমরা শিশু সংগঠন কচি-কাঁচার মেলার মাধ্যমে কাজ করো।

নিজেদের সচল রাখো।’ এছাড়া বঙ্গবন্ধু যখন বিভিন্ন কাজে গ্রামেগঞ্জে যেতেন, চলার পথে শিশুদের দেখলে গাড়ি থামিয়ে তাদের সঙ্গে গল্প করতেন। খোঁজখবর নিতেন। দুস্থ ও গরিব শিশুদের দেখলে কাছে টানতেন। কখনও বা নিজের গাড়িতে উঠিয়ে অফিসে বা নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতেন। দিতেন কাপড়-চোপড়সহ নানান উপহার। চেষ্টা করতেন সব শিশুর মুখে হাসি ফোটানোর। শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুয়ার ছিল অবাধ। তাদের সঙ্গে সময় কাটানো, তাদের জন্য কিছু করার আগ্রহ ছিল তার প্রবল। তিনি মনে করতেন, শিশুদের প্রাণে জাগাতে হবে অসাম্প্রদায়িক চেতনা। সকল প্রকার অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারকে দূরে ঠেলে নতুন থেকে নতুনের দিকে এগিয়ে চলার যে শিক্ষা শিশুর মানসিক বিকাশে সহায়ক, সেই শিক্ষাই ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন শিশুর অন্তরে। হয়তো তাঁর ভাবনায় ছিল, আজ রাজনীতির যে দুর্গম যাত্রা, সেখানে নিজেরা কিছু করতে ব্যার্থ হলেও যোগ্য নাগরিক হয়ে সেদিনের শিশুরাই আঁধার রাত্রীর দিশা হবে একদিন।

বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে তিনি পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের টিকেটে ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলির সদস্য নির্বাচিত হন। ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আজীবন সোচ্চার এই অবিসংবাদিত নেতাকে রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাবরণ করতে হয়। তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা ও পরবর্তীতে ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং বঙ্গবন্ধু উপাধি লাভ করেন। তাঁর সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ধাপে ধাপে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হলেও তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালি জাতির ওপর নানা নির্যাতন শুরু করে। বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। যা ইউনেস্কোর ‘ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’- এ অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। অন্যদিকে ২৫ মার্চ মধ্যরাতে (৬ মার্চ) তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙ্গালীর বহু আকাক্সিক্ষত বিজয় ও স্বাধীনতা অর্জিত হয়।

বীমা খাতে বঙ্গবন্ধুর সম্পৃক্ততা নিয়ে বলেন, বীমা খাত বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজরিত একটি খাত। জাতির পিতার স্মৃতিধন্য দেশের বীমা খাতটি বিগত ৫০ বছর ছিলো অনেকটাই নিরবে নিভৃতে। ছিল সবচেয়ে অবহেলার পাত্রও। তবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও জাতির পিতার কন্যা ২০০৯ সালে দেশের দায়িত্বভার গ্রহনের পর থেকেই এ খাতের উন্নয়নে নিয়েছেন নানা উদ্যমী পদক্ষেপ। ফলে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে বীমা কোম্পানিগুলো। অর্থনীতির অন্যতম এই খাত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সেই কার্যক্রম এখন আরো বেগবান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বিএম ইউসুফ আলী বলেন, আমরা যারা বীমা পেশায় কাজ করি বা বীমার সাথে সম্পৃক্ত তাদের জন্য গৌরবের বিষয় হলো বঙ্গবন্ধু নিজেও বীমার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধিকার আন্দোলন করেছেন, দেশের জন্য রাজনীতি করেছেন, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। এ সকল কাজের জন্য তিনি বীমাকে বেছে নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বীমা পেশায় সম্পৃক্ত থাকায় এ খাতের সকলেই গর্বিত জানিয়ে বিএম ইউসুফ আলী বলেন, তৎকালীন প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুকে আলফা ইন্স্যুরেন্স থেকে একটি লাল রঙের গাড়ি দেওয়া হয়েছিল। যেটি বঙ্গবন্ধুর প্রথম গাড়ি ছিল এবং সেই গাড়িতে করেই তিনি রাজনীতি করেছিলেন। এজন্য বীমা পেশা হিসেবে আমাদের সেক্টর থেকে বেশি গর্ববোধ করার মতো দ্বিতীয় কেউ নেই। কাজেই বঙ্গবন্ধুর এ বীমাশিল্পকে সাজানোর দায়িত্ব আমাদের সকলের। সবাইকে ত্রুটি-বিচ্যুতির ঊর্ধ্বে গিয়ে বীমা সেক্টরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। এটি আমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য আবশ্যিক দায়িত্ব ও করণীয়। ভবিষ্যতে বীমা খাতের উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথা জানিয়ে এই বীমাবিদ বলেন, আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, আগামী দশ বছরের মধ্যেই এই বীমার মাধ্যমে দেশে এক লাখ কোটি টাকা সঞ্চয় হবে, সেদিন খুব বেশি দূরে নয়। আমরা মনেপ্রাণে প্রধানমন্ত্রীকে বীমা সেক্টরের উন্নয়নের জন্য যথাযথ প্রতিদান দিতে চাই।

 

 

 

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ২:২০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৩ মার্চ ২০২২

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।