বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শেয়ারবাজারে আর ফিরে আসবে না ১৯৯৬ ও ২০১০

বিবিএ নিউজ.নেট   |   বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২১   |   প্রিন্ট   |   285 বার পঠিত

শেয়ারবাজারে আর ফিরে আসবে না ১৯৯৬ ও ২০১০

১৯৯৬ এবং ২০১০ সালে ২ বার ধসের কবলে পড়ে শেয়ারবাজার। ওই সময় আইন অনেক দুর্বল থাকায় এমন ধসের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পুঁজিবাজার উন্নয়নে অনেক শক্তিশালী আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। যা পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। তাই শেয়ারবাজারে ১৯৯৬ এবং ২০১০ আর ফিরে আসবে না বলে জানান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পরিচালনা পর্ষদের কর্তাব্যক্তিরা।

গতকাল বুধবার রাজধানীর নিকুঞ্জে অবস্থিত ডিএসইর কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তারা।

ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান, শাকিল রিজভী, শাহজাহান, মুনতাকিম আশরাফ ও নাসরিন সুলতানা প্রমুখ।

ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের বয়স ৫০ বছর। এ দীর্ঘ সময়ে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তবে উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে ১২/১৩ বছরে। দেশ আরও এগিয়ে যাবে।

শেয়ারবাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনায় শেয়ারবাজার ৬৬ দিন বন্ধ ছিল। তবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ইতিবাচক তৎপরতায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে এসেছে। তাই ডিসেম্বর থেকে শেয়ারবাজারে সুবাতাস বইছে। মার্কেটকে আরও গতিশীল করতে সকল স্টেকহোল্ডারদের সংযুক্ত করতে হবে।

 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের আইটি বিভাগে অনেক দুর্বলতা আছে। এরপর ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের ঘটনা আর পুনরাবৃত্তি হবে না। এখন সার্ভিলেন্স অনেক শক্তিশালী।

 

ইউনুসুর রহমান বলেন ১৯৯৬ এবং ২০১০ সাল পর্যন্ত আমাদের লিগাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অত্যান্ত দুর্বল ছিল। আমাদের আইনকানুনের যথেষ্ট অভাব ছিল। ২০১০ সালের পর আমাদের লিগাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার যথেষ্ট শক্তিশালী হয়েছে। এখন আমরা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করতে পারি যে ঘটনাগুলো ১৯৯৬ এবং ২০০৯-১০ সালে হয়েছে, তেমন ঘটনা সামনের দিনে আর ঘটবে না।

তিনি বলেন, শতভাগ অটোমেটেড এক্সচেঞ্জ হিসেবে আমাদের আইটি স্ট্রাকচার যেমন হওয়ার কথা ছিল, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের আইটি স্ট্রাকচার সেই অবস্থায় নেই। এটা আমরা জেনেছি ৩-৪ মাস আগে। আপনারা কি চিন্তা করতে পারেন এমন একটি স্টক এক্সচেঞ্জে ডিজাস্টার রিকভারি সাইট নাই। এর ফল কত খারাপ হতে পারে?
‘আমরা জানার পরপরই উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা অনেকটা কাজ এগিয়ে নিতে পেরেছি। আমাদের কনসালটেন্ট নিয়োগ হয়ে গেছে। কনসালটেন্ট প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছে। এটা পরীক্ষা করার পর ফাইনাল রিপোর্ট হবে। এরপর টেন্টারে গিয়ে আধুনিক একটা ডাটা সেন্টার স্থাপন করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করি এ বছরের জুনের আগেই এটা হয়ে যাবে। যেটা হওয়া উচিত ছিল আরও আগে’ বলেন ডিএসইর চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, যেখানে আইটি ব্যবহার করা হয় সেখানে নিয়মিত অডিট করতে হয়। অডিট করলে জানা যায়, আইটির কোন জায়গাটা দুর্বল আছে, কোনটা সবল আছে। আমরা এখন একটা আইটি অডিট টিম নিয়োগ করার কাজ চূড়ান্ত করেছি। শিগগিরই আইটির অডিটর নিয়োগ হয়ে যাবে। আরও ছোট ছোট অনেক কাজ আমাদের করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বিদেশির একটি স্টেকহোল্ডার যে মানের অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম থাকে, আমরা ওই মানের একটি অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম দিয়ে ২৫০টির মতো স্টেকহোল্ডারকে সেবা দিচ্ছি। তাহলে বুঝতেই পারছেন জিনিসটা আমাদের জন্য কতটা কষ্টকর এবং ঝুঁকিপূর্ণ।

ইউনুসুর রহমান বলেন, ২০২১ সালের শেষে অথবা ২০২২ সালে চীনের টেকনোলজি কিভাবে গ্রহণ করব, সেটার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। এখন নাসডাক এবং ফ্লেক্সট্রেডের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এই কাজ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নাসডাকের সঙ্গে আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে ব্যবসার ভলিয়ম বেড়ে গেলে ফ্লেক্সট্রেডের সঙ্গে কিছু কিছু সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

রবিকুর রহমান বলেন, ২০০৯-১০ সালে আমরা বিনিয়োগকারীদের বলেছি- আপনারা লোন করে আসবেন না, স্বর্ণ অলংকার বিক্রি বা বন্ধক দিয়ে আসবেন না। বিদেশে কর্মরত ভাইদের টাকা নিয়ে আসবেন না, অতিরিক্ত মার্জিন ঋণ নিয়ে আসবেন না।

তিনি বলেন, আমাদের টেনশন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নিয়ে। উনারা না বুঝে বিনিয়োগ করে ফেলেন। ২০০৯-১০ সালে শেয়ার কিনে আমি ৪৫ শতাংশ লোকসানে ছিলাম। সেই শেয়ার আমি বিক্রি করিনি, ধরে রেখেছি। সেই শেয়ারে আমি আজকে প্রফিট করেছি। কিন্তু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী তো ধরে রাখতে পারবে না। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বলবো আল্লাহরওয়াস্তে আপনারা বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করবেন।

বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’র সম্প্রতি প্রশ্নবিদ্ধ সার্কুলারের বিষয়ে জানতে চাইলে রকিবুর রহমান বলেন, তারা একটি রেগুলেটর প্রতিষ্ঠান। এখন তারা যদি কোন বক্তব্য দেয় বা কিছু করে, তাহলে আমরা কি করতে পারি। একইভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক যদি ব্যাংকিং খাতের জন্য কিছু করে, তাহলেই আমরা কি করতে পারি। তবে হ্যা এটা নিয়ে আমরা লিখতে পারব, টেলিভিশনে বলতে পারব।

আজ কেউ বলবে ওই সেক্টর ভালো হয়ে যাবে, কেউ বলবে ওমুক কোম্পানি ভালো ডিভিডেন্ড দেবে- এখন এ জাতীয় বক্তব্যের ক্ষেত্রে আমরা কি বলব। তবে ডিএসইর পক্ষ থেকে কখনো এ জাতীয় কথা বলা হয় না বলে জানান ডিএসইর এই পরিচালক।
শাকিল রিজভী বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে কোনো সেক্টরে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান করা হয় না। স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে বিনিয়োগকারীদের সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করার আহ্বান করা হয়। তবে কোনো কোনো সেক্টরে যদি কারসাজি হয়, তাহলে বিএসইসির সহায়তায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্ভিলেন্স টিমের উচিত সেটা ধরা। তবে বিনিয়োগকারীদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ২০১০ সালে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে লট প্রথা ছিল। তবে এখন লট প্রথা না থাকায় ১-২টি শেয়ারের জন্যও অর্ডার দেওয়া যাচ্ছে। যে কারনে ২০১০ সালের থেকে এখন অর্ডার পড়ছে অনেক বেশি। এছাড়া অহেতুক অর্ডার দাখিল করা হচ্ছে। অথচ কার্যকর হয় হয়তো ২০-২৫ শতাংশ অর্ডার। এই অতিরিক্ত অর্ডার দাখিলের কারনেই মূলত সমস্যা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, চীনা কৌশলগত বিনিয়োগকারী থেকে আইটি বিষয়ে সহযোগিতা নেওয়ার জন্য ২ বছর লাগবে। বর্তমানে আইটি সাপোর্ট নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২১

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।