নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২২ | প্রিন্ট | 173 বার পঠিত
সোয়ান গ্রুপের তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে পৃথক তিন মামলা দায়ের করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো-গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সোয়ান ইন্ডাস্ট্র্রিজ লি. (ফোম), সোয়ান কেমিক্যালস লিমিটেড এবং রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সোয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ লি. (ম্যাট্রেস)। এ প্রতিষ্ঠান ৩টি মূলত ফোম, ম্যাট্রেস, কেমিক্যালস ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ করে।
মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সোয়ান গ্রুপের ওই তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্তে মোট ১৩৬ কোটি ৫ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির হিসাব গোপন করার প্রমাণ পেয়েছেন তারা। এরমধ্যে ৩৬ কোটি ৬৯ লাখটাবর ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পেয়েছেন কর্মকর্তারা। ওই অভিযোগে তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে পৃথক তিন মামলা দায়ের হয়েছে।
পণ্য বিক্রির তথ্য গোপন করে চালান ছাড়া সেবা সরবরাহ করে সরকারের বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে তদন্ত করেন ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের কর্মকর্তারা। ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সাজেদুল হকের নেতৃত্বে ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর সোয়ান গ্রুপের গুলশানের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান শেষে তিন প্রতিষ্ঠানের মোট ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব ফাঁকির বেরিয়ে আসে। পরে তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরো জানা যায়, অভিযানে গোয়েন্দা দল দেখতে পায়, প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে মাসিক দাখিলপত্রে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। অভিযানের শুরুতে কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংক্রান্ত ও বাণিজ্যিক দলিল দেখানোর অনুরোধ করেন। এরপর প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়ে এবং প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারে ধারণ করা তথ্য যাচাই করে সেবা বিক্রি সংক্রান্ত বাণিজ্যিক দলিল লুকানো অবস্থায় আটক করা হয়।
তদন্ত অনুসারে সোয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ লি.( ফোম) প্রতিষ্ঠানটি ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১০৫ কোটি ৬০ লাখ ৮৩ হাজার ৫৩৮ টাকার পণ্য বিক্রির তথ্য পাওয়া যায়। তবে প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় ভ্যাট সার্কেল (গাজীপুর-৩) এ মাসিক রিটার্নে মাত্র ৩১ কোটি ১৬ লাখ ৪ হাজার ২৩৪ টাকা বিক্রির হিসাব দেখিয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি ৭৪ কোটি ৪৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩০৪ টাকার তথ্য গোপন করেছে। যেখান ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ১১ কোটি ১৬ লাখ ৭১ হাজার ৮৯৬ টাকা।
অন্যদিকে সোয়ান কেমিক্যালস লি. একই সময়ে মোট বিক্রি করেছে ৪৭ কোটি ৬ লাখ ৩০ হাজার ৩৩৯ টাকার পণ্য। তদন্তে জমা দেওয়া ভ্যাট রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রির পার্থক্য পাওয়া যায় ১৭ কোটি ৯৩ লাখ ১৯ হাজার ৪১৭ টাকা। আর ভ্যাট ফাঁকি ২ কোটি ৬৮ লাখ ৯৭ হাজার ৯১৩ টাকা।
এছাড়া সোয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ লি. (ম্যাট্রেস) প্রতিষ্ঠানটিও ওই একই সময়ে ৪৩ কোটি ৬৬ লাখ ৬৪ হাজার ৫৬২ টাকার বিক্রির তথ্য গোপন করেছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা। প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে প্রতিষ্ঠানটি ৬ কোটি ৫৪ লাখ ৯৯ হাজার ৬৮৪ টাকা ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে।
এভাবে তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠান তিনটির মোট অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ২০ কোটি ৪০ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯৩ টাকা। ২ শতাংশ হারে সুদ বাবদ ১৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ২০৫ টাকাসহ মোট ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ ১৯ হাজার ৬৯৮ টাকার ফাঁকি পাওয়া যায়।
Posted ৭:৫৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy