শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

বাজেটে ঘাটতি পূরণে সরকার ঋণ নিলে সমস্যা হবে না: গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০   |   প্রিন্ট   |   470 বার পঠিত

বাজেটে ঘাটতি পূরণে সরকার ঋণ নিলে সমস্যা হবে না: গভর্নর

বাজেটে ঘাটতি পূরণে লক্ষ্য অনুযায়ী সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে কোনো সমস্যা নেই বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। শুক্রবার (১২ জুন) নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রস্তাবিত বাজেট-উত্তর ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

গভর্নর বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ হিসাবে ৮৪ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা নেয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। এটি তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। কারণ চলতি অর্থবছরের ইতোমধ্যে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ৭৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। কোনো সমস্যা হয়নি। চলতি অর্থবছর ৮২ হাজার কোটি টাকা নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে। এতেও সমস্যা হবে না।

ব্যাংক খাতে বর্তমানে পর্যাপ্ত তারল্য রয়েছে দাবি করে গভর্নর বলেন, গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংক খাতে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি নগদ তারল্য উদ্বৃত্ত রয়েছে। এছাড়া রিজার্ভ রয়েছে আরো ৬২ হাজার কোটি টাকা। ফলে ব্যাংক খাতের তারল্য সমস্যা নেই ঋণ নিলে এ খাতের কোনো সমস্যা হবে না।

কনোরাভাইরাসের প্রার্দুভাবে আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলায় সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা বাস্তবায়নেও কোনো সমস্যা হবে না জানিয়ে গভর্নর বলেন, ইতোমেধ্য প্রণোদনা বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রি-ফাইন্যান্স হিসাবে পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে ৪০ হাজার কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া সিআরআর (ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণ) ছাড় দেয়া হয়েছে এতে ১৮ হাজার কোটি টাকাসহ প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকা সহযোগিতা করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে এতে করে প্রণোদনা বাস্তবায়নে সমস্যা হবে না।

প্রস্তাবিত বাজেটে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবের স্থিতির ক্ষেত্রে আবগারি শুল্ক বর্তমানে যা আছে তাই রাখা হয়েছে। তবে ১০ লাখ টাকার বেশি থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত স্থিতি থাকা ব্যাংক হিসাবের আবগারি শুল্ক দুই হাজার ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এক কোটি টাকার বেশি থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত স্থিতির ক্ষেত্রে আবগারি শুল্ক ১২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাজেটে আবগারি শুল্ক বাড়ানোর বিষয়ে গভর্নর বলেন, ১০ লাখ টাকার উপরে ও এর চেয়ে বেশি যাদের আমানত আছে তাদের আবগারি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। তবে ১০ লাখ টাকার নিচে যাদের আমানত তাদের শুল্ক বাড়ানো হয়নি। এতে করে আমানতের কোনো সমস্যা হবে না। আগে সঞ্চয়পত্রের কারণে ব্যাংকে আমানতের চাপ কম ছিল তাও এখন আর নেই।

বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সংকটকালে লভ্যাংশ নিয়ে যাচ্ছে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা না জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক লভ্যাংশ নেয়ার বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করে না। যদি বিক্রি করে নিয়ে যায় তখন দেখে।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) দুর্যোগের মধ্যেই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশা সামনে রেখে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামে ২০২০-২১ অর্থবছরের ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ৪৪ হাজার ৮১০ কোটি টাকা বেশি। শতাংশ হিসাবে ৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। প্রতিবার বাজেটে ঘাটতি সাধারণত ৫ শতাংশের মধ্যে রাখা হয়। তবে এবার করোনার প্রভাবে প্রথমবারের মতো তা ৬ শতাংশ স্পর্শ করেছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে করবহির্ভূত রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে ১৫ হাজার কোটি টাকা এবং কর ব্যতীত প্রাপ্তির পরিমাণ ধরা হচ্ছে ৩৩ হাজার ৩ কোটি টাকা। আয় ও ব্যয়ের এ বিশাল ফারাকের বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৬ শতাংশ। এ বিশাল ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভর করবে, অংকে যা ৮০ হাজার ১৭ কোটি টাকা। চলতি বাজেটে (সংশোধিত) যা আছে ৫২ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা।

ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকার এক লাখ ৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। অভ্যন্তরীণ উৎস অর্থাৎ ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নিয়ে ঘাটতির বড় একটি অংশ পূরণ করবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আসন্ন অর্থবছরে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে ৮৪ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। এছাড়া অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ২০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে ৫ হাজার কোটি টাকাসহ মোট ২৫ হাজার কোটি টাকা নিতে চায় সরকার।

চলতি অর্থবছর ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ছিল ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। পরে চাহিদা বাড়লে এটি বাড়িয়ে ৮২ হাজার ৪২১ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৮:৩৩ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11389 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।