শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

পি কে হালদারকে ফেরত আনতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চায় দুদক

বিশেষ প্রতিনিধি   |   সোমবার, ১৬ মে ২০২২   |   প্রিন্ট   |   217 বার পঠিত

পি কে হালদারকে ফেরত আনতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চায় দুদক

বহুল আলোচিত ৬ হাজার কোটি টাকা পাচার ও আত্মসাৎ মামলার আসামী ভারতে গ্রেফতার প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশনের (ইন্টারপোল) সহযোগিতার পেতে চেষ্টা চালাচ্ছে দুদক। ইতিমধ্যে দুদকের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, ভারতে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করা হয়েছে।

পি কে হালদারকে ফিরিয়ে আনা এবং বিদেশে পাচার করা অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে দুদক কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। তবে এ বিষয়ে ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের পাশাপাশি ইন্টারপোলের সহযোগিতা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা। তাকে বাংলাদেশে ফেরত আনতে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দুই দেশের বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় আনার বিষয়ে চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান।

সোমবার (১৬ মে) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব (ডিজি বিশেষ অনুসন্ধান) সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, আজ (সোমবার) দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে পি কে হালদার ও তার পাচার করা সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনতে দুদক কর্মকর্তারা বেঠক করেছেন। বৈঠক শেষে সংবাদিকদের ব্রিফিংকালে নানা প্রশ্নের জবাব দেন দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।

তিনি বলেন, পি কে হালদার ও গ্রেফতার অন্যরা কী পরিমাণ অর্থ ভারতে পাচার করেছেন ও তাদের ব্যাংক হিসাব জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিআইএফইউ) চিঠি পাঠানো হবে। ইতিমধ্যে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে দুদক ৩৫টি মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলার মধ্যে একটি মামলায় আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। ওই মামলায় পি কে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য (ইন্টারপোল) সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বাকী ৩৪টি মামলার তদন্ত চলছে, শিগগিরই আরও কয়টি মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হবে।

দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ভারতে একাধিক মামলা হয়েছে। তিনি ওই দেশের পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছেন। ওই দেশে তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ভারতের আদালতের মাধ্যমে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জ্ঞিাসাবাদ করা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

পি কে হালদারের পেছনে কারা আছেন এবং কারা নেপথ্যে থেকে তাকে সহযোগিতা করছে সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, তদন্তে তথ্য প্রমাণ পেলে অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পি কে হালদারের সহযোগীরা যত প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাবান হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা এসকে সুর এবং শাহ আলমকে দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাদের বিষয়ে দুদক আরও অনুসন্ধান করছে। আরও কেউ জড়িত আছেন কিনা ওইসব বিষয়েও দুদক অনুসন্ধান করছেন।

দুদক সচিব বলেন, পি কে হালদারের পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনা অনেক কঠিন বিষয়। তার বিরুদ্ধে ৬ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ৩৪ টা মামলা করেছে দুদক। তার সহযোগিদের অনেকের নাম রয়েছে ওইসব মামলায়। তবে তদন্তে আরও কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হবে।

সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে পি কে হালদারকে গ্রেফতারের বিষয়ে বাংলাদেশকে কিছু জানানো হয়নি। তবে ভারত সরকারের কিছু সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সূত্রে বোঝা যাচ্ছে, পি কে হালদারকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ওই দেশের আদালতে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

ভারত সরকারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ্য করা হয়েছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে চার-পাঁচটি মামলা হয়েছে। পি কে হালদার বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করেছেন এবং ভারতে নাম পরিবর্তন করে আত্মগোপনে ছিলেন। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাকে দুদক আগেই কিছু তথ্য দিয়েছিল। ওইসব তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযান চালাতে এবং পি কে হালদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ মে পি কে হালদার, তার স্ত্রী, ভাইসহ মোট ৬ জনকে কলকাতা থেকে গ্রেফতার করেছে ভারতের অর্থ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেকটরেট (ইডি)। পরদিন ১৫ মে তাকে আদালতে হাজির করে ৩ দিন্ডে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ইডি’র কর্মকর্তারা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে ১০ হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ আছে। পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ৩৪টি মামলা করেছে দুদক। এসব মামলার মধ্যে মাত্র ১টিতে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। এসব মামলায় মোট ৮৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১১ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

 

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৭:৩৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৬ মে ২০২২

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11388 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।