নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪ | প্রিন্ট | 98 বার পঠিত
বীমা আইন ২০১০ এর সংশোধনী খসরার উপর মতামত প্রদানের বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সভা আহ্বান করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারীর সভাপতিত্বে ৩ জুলাই (বুধবার) সকাল ১১টায় কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। বংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের কাছে (২৩ জুন) কর্তৃপক্ষের পরিচালক (আইন) মোহা. আবদুল মজিদ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বীমা আইন ২০১০ এর খসড়া সংশোধনীতে ১১টি নতুন ধারা সংযোজন এবং ৪টি ধারা বিয়োজনসহ সর্বমোট ৪৯টি ধারা-উপধারায় সংশোধন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধন অনুযায়ী- বীমা কোম্পানির সম্পদ বা বিনিয়োগ জামানত রেখে পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার বা তাদের পরিবার অথবা তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ঋণ প্রাপ্তিতে সহায়তা প্রদানে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া বীমা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণাধীন কোন সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান থেকে পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার বা তাদের পরিবার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কোন ঋণ প্রদান বা অন্যকোনভাবে আর্থিক সুবিধা প্রদান করতে পারবে না।
বীমা কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা এবং কোম্পানি সচিব নিয়োগ ও অপসারণের ক্ষেত্রে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত যোগ্যতাসম্পন্ন কোন ব্যক্তিকে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে বীমা কোম্পানির সিএফও বা কোম্পানি সচিব হিসেবে নিয়োগ করতে হবে। অনুমোদিত কোন প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ও কোম্পানির সচিবকে কর্তৃপক্ষের পুর্বানুমতি ছাড়া চাকরিচ্যুত বা বরখাস্ত করা যাবে না।
কর্তৃপক্ষ এ ধরনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ও কোম্পানি সচিব এবং বীমাকারী বা এই বিষয়ে কোম্পানির স্বার্থক্ষুন্ন হয় এমন কোন কাজ করেছেন কি না এবং এ ক্ষেত্রে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে লিখিত আদেশের মাধ্যমে চাকরিচ্যুত করতে হবে। এভাবে চাকরিচ্যুত হওয়ার পরবর্তী ৫ বছর তারা কোন বীমা কোম্পানিতে নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না।
বীমাকারী কোন ব্যক্তি প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও কোম্পানি সচিব হওয়ার বা ওই পদে না থাকার বিষয়ে জানার ১৫ দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাবে।
বীমা কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও কোম্পানির সচিব পদ একাধারে ৩ মাসের অধিক সময়ের জন্য শূন্য রাখা যাবে না। তবে কর্তৃপক্ষ অপরিহার্য পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতিবার ওই সময়সীমা আরও এক মাস বাড়াতে পারবে।
উপদেষ্টা বা কনসালটেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রেও অনুমোদন নিতে হবে আইডিআরএ’র। বীমা কোম্পানিতে সর্বোচ্চ ২ জন উপদেষ্টা বা কনসালটেন্ট নিয়োগ করা যাবে, যাদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নির্ধারণ করবে কর্তৃপক্ষ।
ব্যাংকাস্যুরেন্স ও করপোরেট এজেন্ট সম্পর্কিত কয়েকটি নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে বীমা আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনীতে।
পরিবারের সংজ্ঞায় ‘প্রাকৃতিক ব্যক্তিসত্তা’ সংযোজন করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়- স্বামী বা স্ত্রী, পিতা বা মাতা, নির্ভরশীল পুত্র অথবা কন্যা, নির্ভরশীল ভাই অথবা বোন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল প্রাকৃতিক ব্যক্তিসত্তার সকলেই পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হবে।
বীমা দাবি পরিশোধের সময়সীমা ৯০ দিনের পরিবর্তে ৪৫ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ ৪৫ দিনের মধ্যে বীমা দাবি পরিশোধ করতে না পারলে পরবর্তী দিনগুলোর জন্য সুদসহ বীমার টাকা ফেরত দিতে হবে গ্রাহককে। যদি না বীমাকারী এরূপ ব্যর্থতা তাহার নিয়ন্ত্রণ বর্হিভূত ছিল বলিয়া প্রমাণ করিতে পারে।
বীমা কোম্পানির পরিচালক সংখ্যা সর্বোচ্চ ২০ জন-ই থাকছে। তবে নিরপেক্ষ পরিচালকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। কোন কোম্পানির পরিচালক সংখ্যা ১০ জনের বেশি হলে নিরপেক্ষ পরিচালক থাকবেন ৪ জন, এর কম হলে থাকবেন ২ জন।
শেয়ারগ্রহীতারা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে বীমা কোম্পানির পরিচালক নির্বাচন করবেন। এছাড়াও আরো কিছু বিষয়ে সংশোধন আনা হচ্ছে।
কতিপয় ধারা লঙ্ঘনপূর্বক বীমা ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে জরিমান আরোপের ক্ষেত্রে নতুন করে ধারা ৭, ৮০, ৮০(ক) এর বিধান লঙ্ঘনে জরিমানা ৫ লাখ টাকার স্থলে ১০ লাখ টাকা আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ধারা ৫৯ এর উপধারা ৩ এর সংশোধনীতে প্রস্তাব করা হয়েছে যে নন-লাইফ বীমা ব্যবসার আহরণের পদ্ধতি এবং ব্যবসার উপর উন্নয়ন কর্মকর্তাদের মাসিক আর্থিক সুবিধাদি বিবেচনায় নিয়ে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে কমিশন স্থগিত বা বাতিল বা কমিশনের পরিমাণ বা জের পরিবর্তন করতে পারবে।
ধারা ১৩০ এর (ক) (খ) (গ) (ঘ) (ঙ) পরিপালনের নির্দেশ পালনে ব্যর্থতার জন্য ৫ লাখ টাকা জরিমানার পরিবর্তে প্রতিটি ব্যর্থতার জন্য অনধিক ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে এবং লঙ্ঘন অব্যাহত থাকলে প্রতিদিন অতিরিক্ত পূর্বের ৫ হাজার টাকার স্থলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
Posted ৮:৩৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪
bankbimaarthonity.com | rina sristy