| বুধবার, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 755 বার পঠিত
নির্বাচনের পর থেকেই চাঙ্গা রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। একযোগে বাড়ছে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। এর জের ধরে বাড়ছে বাজার মূলধন, সূচক এবং লেনদেন। এ সুবাদে পুঁজিবাজারে ফিরে আসছেন সব শ্রেণির বিনিয়োগকারী। ফলে বদলে গেছে ব্রোকারেজ হাউজের চিত্র। অনেক দিন পরে প্রাণ ফিরে পেয়েছে এসব হাউজ। তবে এর মধ্যেও কিছুটা শঙ্কা বিরাজ করছে বিনিয়োগকারীদের মাঝে। বাজারের এ ধারাবাহিকতা থাকবে কি না এ নিয়ে দোলাচলে রয়েছেন তারা।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, নির্বাচনের পর ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ৩৯৮ পয়েন্ট। নির্বাচনের আগে অর্থাৎ গত বছরের সর্বশেষ কার্যদিবসে সূচকের অবস্থান ছিল পাঁচ হাজার ৪৬৫ পয়েন্টে। গতকাল যার অবস্থান দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৮৬৩ পয়েন্টে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ সময়ের মধ্যে মাত্র তিন কার্যদিবস কিছুটা নি¤œমুখী ছিল সূচক। বাকি দিনগুলো ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শেষ হয়েছে।
অন্যদিকে এ সময়ের মধ্যে ডিএসইর লেনদেন বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। গত বছরের শেষদিনে লেনদেন হয় ৫৩০ কোটি টাকা। গতকাল লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ লেনদেন বেড়েছে ৬০৯ কোটি টাকা।
বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে বাজারসংশ্লিষ্টরা বলেন, দেশে নির্বাচন তথা রাজনৈতিক পরিবেশ কেমন হবে তা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি ছিল। কিন্তু এখন তাদের সেই ভীতি কেটে গেছে। যে কারণে তারা বাজারে ফিরে আসছেন। বিনিয়োগে মনোযোগী হয়েছেন তারা। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীও তাদের বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। ফলে বাজারও চাঙ্গা হচ্ছে।
অন্যদিকে পুঁজিবাজারে নিজেদের কোম্পানি তালিকাভুক্তি রয়েছে বর্তমানে এমন এমপি ও মন্ত্রীদের সংখ্যা রয়েছে ২২ জন। নির্বাচনের পর থেকেই এর বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বাড়ছে যা লেনদেন বাড়তে ভূমিকা রাখছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বাজার চাঙ্গা হওয়ার আর একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে অধিকাংশ শেয়ার বিনিয়োগের উপযোগী থাকা। দীর্ঘদিন পতনের ফলে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর তলানিতে রয়েছে। এ তালিকায় সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমা খাত। বর্তমানে এ তিনটি খাতেই বিনিয়োগ বেড়েছে। যে কারণে মোট লেনদেনও বাড়ছে। বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকলে এ তিনটি খাতের মোট লেনদেনে সাধারণত ৩০ শতাংশের বেশি অবদান থাকে। গতকালও মোট লেনদেনে এ খাত তিনটির অবদান ছিল ৩২ শতাংশের বেশি।
জানতে চাইলে ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা ফিরে আসছেন- এটা পুঁজিবাজারের জন্য শুভ লক্ষণ। কারণ তারা বিনিয়োগ-বিমুখ থাকলে বাজার কখনওই স্বাভাবিক হতে পারবে না। তারা ফিরে আসা আমাদের জন্যও ভালো খবর। তবে ঊর্ধ্বমুখী বাজারেও দুষ্ট লোকের অভাব থাকে না। তারা সুযোগ নিতে চান। তাই বিনিয়োগকারীদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বলেন, বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা খুশি। তবে এ পরিস্থিতি কতদিন বহাল থাকবে তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন তারা। তারা বলেন পূর্বে বহুবার আমরা এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। তাই বাজার ভালো হলেও উচ্ছ্বাস করার কিছু থাকে না।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি যখন খুবই ভালো ছিল তখন ডিএসইর দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার কোটি টাকা। কারণ তখন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। ফলে লেনদেনও বেশি হতো। সে কারণে ঢাকার প্রতিটি হাউজে গড়ে ৩০ কোটি টাকা লেনদেন হতো। পরবর্তীতে বাজার মন্দা যাওয়ায় তা অনেক নিচে নেমে যায়। বিনিয়োগকারীরাও বাজার ছেড়ে চলে যান। লেনদেন নেমে যায় ২০০ কোটি টাকার নিচে।
Posted ১২:০২ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed