শনিবার ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Ad
x

করোনায় বিদেশি বিনিয়োগে ভাটা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ০৩ জুলাই ২০২০   |   প্রিন্ট   |   470 বার পঠিত

করোনায় বিদেশি বিনিয়োগে ভাটা

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিদেশি বিনিয়োগে ভাটা পড়েছে। সদ্যসমাপ্ত (২০১৯-২০) অর্থবছরের (জুলাই-মে) ১১ মাসে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে। অন্যদিকে দেশের শেয়ারবাজারের বিদেশিরা যে পরিমাণ বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট) করেছে তারে চেয়ে বেশি তুলে নিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের ওপর করা হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, দেশে গত অর্থবছরের ১১ মাসে বিভিন্ন খাতে সবমিলিয়ে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ৩৭২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, এর মধ্যে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ১৯৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে এফডিআই ছিল ৪৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং যার মধ্যে নিট এফডিআই ছিল ২৪২ কোটি ৭০ লাখ ডলার। সে হিসাবে আগের অর্থবছরের চেয়ে গত অর্থবছরের ১১ মাসে এফডিআই কমেছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং নিট এফডিআই কমেছে ১৯ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
আলোচিত সময়ে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট) যা এসেছিল তার চেয়ে বেশি তুলে নেয়া হয়েছে। আগের অর্থবছরেও দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কম ছিল। এবার এক্ষেত্রে ধস নেমেছে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (নিট) ছিল ১৬ কোটি ২০ লাখ ডলার। সদ্যসমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরের এই ১১ মাসে বিদেশিরা যে পরিমাণ বিনিয়োগ করেছেন, তার থেকে ৭০ লাখ ডলার বেশি তুলে নিয়ে গেছেন।
এদিকে করোনায় রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাবে বৈদেশিক বাণিজ্যে বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে দেশের পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬০৬ কোটি ৯০ লাখ (১৬ দশমিক ০৭ বিলিয়ন) ডলার। বহির্বিশ্বের সঙ্গে লেনদেনে বাংলাদেশের অবস্থাও ঋণাত্মক রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, গত অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে তিন হাজার ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে চার হাজার ৬২৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে মে শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬০৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৫ টাকা ধরে) প্রায় এক লাখ ৩৬ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। ঘাটতির এ অংক ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময় ছিল এক হাজার ৪৯৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
আলোচিত সময়ে আমদানি কমেছে ১০ দশমিক ৮১ শতাংশ। রফতানি কমেছে ১৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। তবে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকলেও গত সেপ্টেম্বর থেকে তা ঋণাত্মক হয়েছে। মে শেষে লেনদেন ভারসাম্যের ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। কিন্তু গত কয়েক বছর উদ্বৃত্তের ধারা অব্যাহত থাকলেও গেল অর্থবছরে ঋণাত্মক ধারায় চলে গেছে।
গত অর্থবছরের মে শেষে চলতি হিসাবে ৪৩৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার ঋণাত্মক হয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরের সার্বিক রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার কারণে প্রথম ১১ মাসে সামগ্রিক লেনদেনে বাংলাদেশের উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ১৬৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে সামগ্রিক লেনদেনে ঘাটতি ছিল ৬৮ কোটি ডলার।
আলোচিত সময়ে সেবাখাতে বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা কম রয়েছে। বিদেশিদের বেতনভাতা পরিশোধ, মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়। জুলাই-মে সময়ে এ খাতে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৭৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। যা তার আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৯৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

Facebook Comments Box

Posted ৬:১০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৩ জুলাই ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11629 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।