মঙ্গলবার ৮ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Ad
x

বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে নতুন রেকর্ড গড়ল নরওয়ে

ব্যাংক বীমা অর্থনীতি ডেস্ক   |   শনিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   1263 বার পঠিত

বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে নতুন রেকর্ড গড়ল নরওয়ে

বায়ু দূষণের কারণে পৃথিবীর অনেক শহর ক্রমে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে। দূষণ কমাতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা সত্ত্বেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেসব চেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে। তবে নরওয়েকে এদিক থেকে ভিন্নই বলা যায়। কার্বন নিঃসরণ ও বায়ুদূষণ কমাতে দেশটি অসাধারণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। নাগরিকদের পেট্রল কিংবা ডিজেলচালিত গাড়ির পরিবর্তে ব্যাটারিচালিত গাড়িতে উদ্বুদ্ধ করতে কর মওকুফ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ব্যাটারিচালিত গাড়ির জন্য বিনামূল্যে পার্কিং ও চার্জিং পয়েন্টসহ নানা সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রিতে এরই মধ্যে বিশ্বরেকর্ড করেছে নরওয়ে। গত বছর দেশটিতে বিক্রি হওয়া নতুন গাড়ির এক-তৃতীয়াংশই ছিল পূর্ণাঙ্গ বৈদ্যুতিক গাড়ি। ২০২৫ সালের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত গাড়ি বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নরওয়ে।

স্বায়ত্তশাসিত নরওয়েজিয়ান রোড ফেডারেশন (এনআরএফ) গত বুধবার জানায়, গত বছর বিক্রীত গাড়ির ৩১ দশমিক ২০ শতাংশ ছিল বৈদ্যুতিক গাড়ি। ২০১৭ সালে এ হার ছিল ২০ দশমিক ৮ শতাংশ, আর ২০১৩ সালে ছিল মাত্র ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। একই সঙ্গে দেশটির পেট্রল ও ডিজেলচালিত গাড়ি বিক্রিও অনেক কমেছে।

এনআরএফের প্রধান ওয়েবিন্দ সোলবার্গ থোরসেন এক সম্মেলনে জানান, নরওয়ে সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে নতুন সব গাড়িকে কার্বন নিঃসরণমুক্ত করতে চাইছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ছোট একটি ধাপ আমরা অতিক্রম করতে পেরেছি। তবে এখনো আমাদের অনেক পথ বাকি। কারণ ২০১৮ সালে বিক্রি হওয়া ১ লাখ ৪৮ হাজার গাড়ির দুই-তৃতীয়াংশই ছিল জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত এবং হাইব্রিড। হাইব্রিড গাড়িগুলো ব্যাটারি এবং ইঞ্জিন দু’ভাবেই চলে।

বৈদ্যুতিক গাড়ির জরিপে একটু ভিন্ন মানদণ্ড ব্যবহার করেছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)। হাইব্রিড গাড়িকেও বৈদ্যুতিক গাড়ি হিসেবে বিবেচনা করছে তারা। তাদের জরিপে দেখা যায়, ২০১৭ সালে নরওয়ের বিক্রীত ৩৯ শতাংশ গাড়িই ছিল বৈদ্যুতিক গাড়ি। যেখানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইসল্যান্ডের মাত্র ১২ শতাংশ এবং সুইডেনের ৬ শতাংশ গাড়ি ছিল বৈদ্যুতিক গাড়ি।

আইইএর উপাত্তে দেখা যায়, ২০১৭ সালে চীনে বিক্রীত গাড়ির ২ দশমিক ২০ শতাংশ ছিল বৈদ্যুতিক গাড়ি আর যুক্তরাষ্ট্রে এ হার ছিল ১ দশমিক ২০ শতাংশ।

বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি বাড়ার কয়েকটি অসুবিধা তুলে ধরেছেন নরওয়ের গাড়ি আমদানিকারক ফেডারেশনের প্রধান এরিক আন্দ্রেসেন। তিনি জানান, বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি বাড়ার ফলে নরওয়ের রাজস্ব আয় কমে গেছে। রাজস্ব সংগ্রহের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

এনআরএফের উপাত্তে দেখা যায়, ২০১৮ সালে নরওয়ের নতুন গাড়ি বিক্রি ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ কমে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯২৯-এ দাঁড়িয়েছে। যদিও গত কয়েক বছর ধরে দেশটির গাড়ি বিক্রি বেড়েই চলছিল।

গত বছর নরওয়েতে বিক্রির শীর্ষে ছিল নিশানের উন্নত লিফ বৈদ্যুতিক গাড়ি। অন্যদিকে, বিএমডব্লিউ ও ফক্সওয়াগনের সেডান থেকে শুরু করে টেসলার বৈদ্যুতিক স্পোর্ট ইউটিলিটি গাড়িগুলোর অবস্থান ছিল এর পর।

২০১৮ সালে পূর্ণাঙ্গ বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি ৪০ শতাংশ বেড়ে ৪৬ হাজার ৯২-এ দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ডিজেলচালিত গাড়ি বিক্রি কমেছে ২৮ শতাংশ এবং পেট্রলচালিত গাড়ি বিক্রি কমেছে ১৭ শতাংশ।

২০২৫ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণমুক্ত গাড়ির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা পূরণ করা সম্ভব হবে কিনা, এ বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ইনস্টিটিউট অব ট্রান্সপোর্ট ইকোনমিক্স (আইটিই)। আইটিইর অর্থনীতিবিদ লাস ফ্রিডস্ট্রোয়েম জানান, সরাসরি বলতে গেলে আমার ধারণা ২০২৫ সালের মধ্যে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব নয়। এর প্রথম কারণ হলো অনেকেরই নিজেদের গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা নেই। যদি কেউ বাড়িতে একটি চার্জিং পয়েন্ট স্থাপন করতে না পারেন, তিনি নিশ্চয়ই বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে চাইবেন না। কর মওকুফ অব্যাহত রাখলে, ২০২৫ সাল নাগাদ বাজারের ৭৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ বৈদ্যুতিক গাড়ির কাছে যেতে পারে।

যদিও নরওয়েজিয়ান ইলেকট্রিক ভেহিকল অ্যাসোসিয়েশন (এনইভিএ) আশা করছে, ২০২৫ সালের মধ্যে গাড়ির বাজারের শতভাগ নিয়ন্ত্রণ বৈদ্যুতিক গাড়ির হাতেই চলে আসবে। এনইভিএর প্রধান ক্রিস্টিনা বু জানান, আমরা জানি, চার্জিং অ্যাকসেস আমাদের আসল বাধা। তাছাড়া ২০২৫ সাল নাগাদ পর্যাপ্ত গাড়ি সরবরাহ করা যাবে কিনা তারও একটা ঝুঁকি রয়ে গেছে। কিছু ক্রেতা অবশ্যই তাদের গাড়ির জন্য এক বছর বা তার চেয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করবেন।

সূত্র: রয়টার্স

Facebook Comments Box

Posted ৫:১৩ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।