বিবিএনিউজ.নেট | বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০২০ | প্রিন্ট | 256 বার পঠিত
প্রতি শীতে সাধারণত মে থেকে অক্টোবর মাসে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের হাজার হাজার মানুষের কাছে তাদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। বিশেষ করে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কেউ কাশি বা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন কি না সেই প্রশ্ন করে সরকার। বাকি বিশ্বের মতো অজি ও কিউইদের জন্যেও ২০২০ সালটা খারাপ যাচ্ছে। তবে এর মধ্যেই অন্তত একটি বড় সুখবর এসেছে তাদের জন্যে।
এবারের শীতে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাত্র ০.৪ শতাংশ মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, যা গত বছরের তুলনায় অন্তত চার-পঞ্চমাংশ কম। শুধু তারাই নয়, দক্ষিণ গোলার্ধের বাকি দেশগুলোতেও ফ্লু সংক্রমণের অবস্থা অনেকটা একই।
ফ্লু সংক্রমণ এভাবে কমে যাওয়ার কারণটা অবশ্য স্পষ্ট। বিশ্বজুড়ে প্রায় সব দেশই করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় কঠোর লকডাউন দিয়েছিল। এই পথ ধরেই দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলো শুধু কোভিড-১৯ নয়, অনেকটা অজ্ঞাসারেই প্রতিরোধ করে ফেলেছে ফ্লুর মতো আরেকটি প্রাণঘাতী অসুখ।
১৯৫২ সাল থেকে সদস্য দেশগুলোতে ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণের হিসাব রাখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গত আগস্ট মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে প্রায় দুই লাখ ইনফ্লুয়েঞ্জা টেস্ট করেছে সংস্থাটি। আশ্চর্যজনকভাবে এদের মধ্যে মাত্র ৪৬ জন পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। সাধারণত অন্যান্য বছরে এই সংখ্যা থাকে সাড়ে তিন হাজারের মতো।
অনেকেই ভাবতে পারেন, করোনা মহামারির কারণে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চাপে পড়ায় ফ্লু টেস্টের পরিমাণ বা সক্ষমতা কমে গেছে। আর এজন্যই আক্রান্ত কম দেখা যাচ্ছে। সৌভাগ্যবশত, এ ধারণাটি সঠিক নয়।
দক্ষিণ গোলার্ধের ছয়টি দেশ- অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা, প্যারাগুয়ে, নিউজিল্যান্ড ও চিলিতে ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণের বিষয়ে ডব্লিউএইচও’র তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, দেশগুলোতে এবছর ফ্লু টেস্ট কমেছে মাত্র ২০ শতাংশ; বিপরীতে পজিটিভ ফলাফল কমে গেছে রেকর্ড পরিমাণে।
অস্ট্রেলিয়াতে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের হিসাব অনুসারে, মে থেকে আগস্টের মধ্যভাগ পর্যন্ত গড়ে ৮৬ হাজার অস্ট্রেলীয় ফ্লু ভাইরাসে আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে মারা যান অন্তত ১৩০ জন। কিন্তু এবারের শীতে দেশটিতে ফ্লু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬২৭ জন, আর মারা গেছেন মাত্র একজন।
প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী তিন লাখ থেকে সাড়ে ছয় লাখ মানুষ মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জায় প্রাণ হারান। এবছরের শেষে এবং আগামী বছরে দক্ষিণ গোলার্ধে আবারও বাড়তে পারে এর সংক্রমণ। তবে একের পর এক বিপর্যয়ে ভরা চলতি বছরে ফ্লু সংক্রমণ কমে আসার খবর কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।
Posted ৩:৪৮ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed