শনিবার ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আবরার হলে আছেন কিনা অমিতই প্রথম খুঁজেছিলেন

বিবিএনিউজ.নেট   |   বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   411 বার পঠিত

আবরার হলে আছেন কিনা অমিতই প্রথম খুঁজেছিলেন

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হলে আছেন কিনা সে বিষয়ে প্রথম খোঁজ নিয়েছিলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন সম্পাদক অমিত সাহা। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় অমিত সাহা আবরারের এক বন্ধুকে ইংরেজি অক্ষরে ‘আবরার ফাহাদ হলে আছে কিনা’ মেসেজ দেন।

মেসেজের এক ঘণ্টার মধ্যেই শেরে বাংলা হলের তথাকথিত সিনিয়র ভাইয়েরা অর্থাৎ ছাত্রলীগ নেতারা তাদের সহপাঠীদেরকে আবরারের ১০১১ নম্বর কক্ষে পাঠিয়ে তাকে ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন।

এদিকে অমিত সাহাকে সমর্থন দিয়ে তার বন্ধুরা প্রথমে তার পক্ষে স্ট্যাটাস দিলেও পরে নতুন স্ক্রিনশটটি আসার পর তারাও সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তারা বলেন, অমিত সাহা প্রসঙ্গে… আমি সুপান্থ জয়, নাশিদ সিফাত, মুবতাসিম ফুয়াদ বেগ ফাহিম, আবির সাহা, তৃপ্ত ভট্টাচার্য, অনিন্দ্য আকাশ শুভ্র, ইমতিয়াজ সৈকত, সামিউল জাওয়াদ রবি- আমরা অমিত সাহার ডিপার্টমেন্ট/সেকশনমেট। একই সঙ্গে ক্লাস করে এসেছি। আমরা কেউ তার হলেরও না। ক্লাসের অন্য ১০টা মানুষের মতো তার সঙ্গেও আমাদের বন্ধুত্ব ছিল।

‘আবরারের হত্যাকাণ্ডের পর অমিত ঘটনার সময় নিজের অনুপস্থিতি ও ঘটনায় ফেঁসে যাওয়ার কথা আমাদের জানায়। তখন সে আবির সাহার বাসায় ছিল, এটা নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা অমিতের পক্ষে গ্রুপে কিছু স্টেটমেন্ট দেই, যা পুলিশের প্রাথমিক তদন্তেও সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে (সে ঘটনাস্থলে অনুপস্থিত ছিল)।’

তারা বলেন, ঘটনার সঙ্গে তার প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ সম্পৃক্ততা আমাদের পক্ষে বের করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু কিছুক্ষণ আগে বের হয়ে আসা তথ্যে (স্ক্রিনশট) আর সবার মতো আমরাও তার সম্পৃক্ততা নিয়ে আর সন্দিহান নই। যার প্রেক্ষিতে এই কেসে তার পক্ষে আমাদের সমর্থন প্রত্যাহার করছি।

‘আমরা জানি, এ রকম ঘটনায় একদম ধোয়া তুলসিপাতা কেউ হঠাৎ করে জড়ানো সম্ভব না। অবশ্যই তার একাধিক ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে, যা আমরা গুরুত্ব সহকারে কখনো নেইনি বা দেখেও ওভারলুক করেছি। আমাদের এই অসচেতনতার জন্যই আজ এদের মতো অপরাধীর জন্ম।’

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ধারণা, অমিত সাহা যদি ঘটনাস্থলে নাও থাকেন, তিনি আবরার ফাহাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তা হত্যাকারীদের জানিয়েছেন। কারণ ফাহাদ তো বাসায় গিয়েছিল, হলে এসেছে কিনা তা সিনিয়ররা জানতেন না। এর আগেও হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে অমিত সাহা অনেক শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করেছিলেন। এমন ঘটনা শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও জানিয়েছেন।

সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, রোববার রাত ৮টা ১৩ মিনিটে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের নিচতলায় সাদাত, তানিম, অভি, বিল্লাল ও সাইফুল আবরারকে সাথে করে নিয়ে যাচ্ছে। ৯টা ৭ মিনিটে দোতলায় ওঠেন জিয়ন, অনিক ও রবিন। ৯টা ১৮ মিনিটে যান মুজাহিদ। এরপর রাত ১১টা ১০ মিনিট থেকে রাত ১২টা ৩৯ মিনিট পর্যন্ত দোতলায় সাদাত, তানিম, অভি, বিল্লাল, সাইফুল, তানভীর, সকাল, মনির, মুজাহিদ, বিল্লাহ, রাফাতকে বেশ কয়েকবার আসা-যাওয়া করতে দেখা যায়। রাত ১২ টা ৫৩ মিনিট থেকে ১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত সকাল, মোর্শেদ, জেমি, রাফাত, বিল্লাহ, ইসমাইল ও পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া দুইজন ব্যক্তিকে দোতলার বারান্দা দিয়ে বারবার আসা-যাওয়া করতে দেখা যায়। সকাল না হওয়া দুজন ব্যক্তি বারবার আসা যাওয়া করেন।

রাত ১টা ১৫ মিনিটের ফুটেজে দেখা যায়, বেরিয়ে যাচ্ছেন রবিন, ঠিক তার দুই মিনিট পর মোয়াজ, তানিম, জেমি, আবরারকে হাত-পা ধরে উঁচু করে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের পেছনে ছিল সকাল, মাজেদ, মুরশেদ, মুজাহিদ, তানভীর, রাফাত ও ত্বোহা। রাত ২টা ৩০ মিনিটে মুয়াজ, বিল্লাহ, জেমি, সাইফুল, তানিম ও মাজেদ আবরারকে ধরাধরি করে সিঁড়ির মাঝামাঝি জায়গায় নিয়ে রাখেন।

আরো পড়ুন : আবরার হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল বুয়েট

রাত ৩টা ৫ মিনিটে পাঞ্জাবি, টুপি পরিহিত হাতে কালো ব্যাগ নিয়ে ডাক্তার প্রবেশ করেন। তার এক মিনিট পর একটি স্ট্রেচার নিয়ে আসা হয়। তার ঠিক সাত মিনিট পর আবরারকে নিচতলায় নামিয়ে আনা হয়। রাত ৩টা ২২ মিনিটে দেখা যায়, আবরারের মরদেহ স্ট্রেচারে করে রাখা হয়েছে। ৩টা ২৫ মিনিটে হলে প্রবেশ করেন প্রভোস্ট অধ্যাপক জাফর ইকবাল খান ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান। হল প্রভোস্ট আবরারের মরদেহ চাদর উল্টে শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখেন।

Facebook Comments Box
বিষয় :
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।