মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাস্টমসের প্রায় নয় কোটি টাকার স্বর্ণ চুরি!

বিবিএনিউজ.নেট   |   বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   456 বার পঠিত

কাস্টমসের প্রায় নয় কোটি টাকার স্বর্ণ চুরি!

বেনাপোল কাস্টম হাউজের ভল্ট থেকে ১৯ কেজির বেশি স্বর্ণ খোয়া গেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় নয় কোটি টাকা।

রোববার পর্যন্ত টানা তিনদিন সরকারি ছুটি থাকায় এ সময়ের মধ্যে চোর চক্র ভল্ট ভেঙে এসব স্বর্ণ নিয়ে গেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ ও কাস্টম হাউজ কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় কাস্টমসের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অন্য সব সরকারি অফিসের মতো বেনাপোল কাস্টম হাউজও শুক্র থেকে রবি তিনদিন টানা বন্ধ ছিল। সোমবার অফিস খুলেই কাস্টম হাউজের ভল্টটি খোলা দেখতে পান কর্মকর্তারা। পরে ভল্ট পরীক্ষা করে ১৯ কেজি ৩৮৫ গ্রাম স্বর্ণ খোয়া যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হন তারা। খোয়া যাওয়া এ স্বর্ণের বাজারদর প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা।

এ ঘটনায় গত সোমবার বেনাপোল কাস্টম হাউজে যান আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। বিকালের দিকে তারা ভল্টরুমে প্রবেশ করেন। হাত-পায়ের ছাপ নির্ণয় করার পর কী কী খোয়া গেছে তা নিরূপণ করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন যশোর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সোহেল আল মামুন, র্যাবের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান, খুলনা থেকে আসা সিআইডির পরিদর্শক হারুন-অর-রশিদ, নাভারণ সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান ও বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান।

বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান বলেন, অবৈধ পথে আসা স্বর্ণ বা বৈদেশিক মুদ্রা আটক করার পর সেগুলো কাস্টমসের ভল্টে রাখা হয়। কাস্টম হাউজের ওই ভল্টে জব্দকৃত ৩০ কেজি স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রা, কষ্টিপাথরসহ মূল্যবান দলিলপত্র ছিল। সোমবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত দীর্ঘ অনুসন্ধান করে ১৯ কেজি ৩৮৫ গ্রাম স্বর্ণ কম পাওয়া গেছে।

এত নিরাপত্তা ও সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে চুরি হলো? এমন প্রশ্নের উত্তরে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, টানা তিনদিন সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। যে কারণে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দিয়ে চোর চক্রকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তবে তদন্ত করে চোর চক্রকে ধরা হবে।

কাস্টম হাউজের ভল্ট ভেঙে স্বর্ণ চুরি যাওয়ার পর সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। গতকাল সকালে কাস্টম হাউজ ঘুরে দেখা যায়, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের চেয়ে বেড়েছে। গেটে থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর আনসার সদস্যরা পরিচয় নিশ্চিত হয়ে লোকজনকে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছেন।

যদিও এ ঘটনার আগ পর্যন্ত কাস্টম হাউজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অতটা উন্নত ছিল না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, ভল্টরুমের জন্য সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন থাকলেও সেখানে কোনো পাহারাদার ছিল না। ছুটির দিন হওয়ায় বন্ধ ছিল সিসি ক্যামেরাও।

পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি: ভল্ট থেকে স্বর্ণ চুরি যাওয়ার ঘটনায় কাস্টমসের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে যুগ্ম কমিশনার মো. শহীদুল ইসলামকে।

তিনি বলেন, তদন্তকাজ চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত কাস্টমস কমিশনারের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া হবে। যে পরিমাণ স্বর্ণ খোয়া গেছে, তার মূল্য প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা।

সাতজন পুলিশ হেফাজতে: এ ঘটনায় বেনাপোল কাস্টম হাউজের একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, একজন সিপাইসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তারা হলেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইফুল, কাস্টম সিপাই পারভেজ খন্দকার, এনজিও কর্মী আজিবর, মহব্বত, সুরত আলী, টিপু সুলতান ও আলাউদ্দীন। এসব এনজিও কর্মী দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল কাস্টম হাউজে মাস্টাররোলে কাজ করে আসছিলেন।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষের মামলা: এদিকে স্বর্ণ চুরি যাওয়ার ঘটনায় বেনাপোল কাস্টম হাউজ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জিএম আশরাফ বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় গতকাল মামলাটি করেন।

উল্লেখ্য, বেনাপোল দেশের প্রধান স্থলবন্দর। সীমান্ত বাণিজ্যের সিংহভাগ সম্পন্ন হয় এ বন্দর দিয়ে। সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানির বিপুল পরিমাণ স্বর্ণও জব্দ করা হয় যশোর-বেনাপোলে। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এসব স্বর্ণ বেনাপোল কাস্টম হাউজের ভল্টে জমা রাখা হয়। #

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৯:০৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11185 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।