বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট | 320 বার পঠিত
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নিরীক্ষা দাবির সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে গ্রামীণফোন। আগামী তিন মাসের মধ্যে আরো এক হাজার কোটি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আজ সোমবার সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হাসানের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বিভাগের বৃহত্তর পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রোববার এক হাজার কোটি টাকা জমা দেয়ার বিষয়টি জানিয়ে বাকি অর্থ দিতে গ্রামীণফোনের আইনজীবীর সময়ের আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে ৩ মাস সময় দেন আপিল বিভাগ।
আদালতে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। গ্রামীণফোনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী।
পরে মেহেদী হাসান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে গতকাল রোববার এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে গ্রামীণফোন। বাকি এক হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনকে তিন মাস সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। নিরীক্ষা পাওনা দাবি নিয়ে করা মামলাটি (নিম্ন আদালতে থাকা) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের দেয়া নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে গ্রামীণফোন যাতে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিতের কথা বলেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
বিটিআরসি বলছে, নিরীক্ষা আপত্তিতে গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ এবং আরেক সেলফোন অপারেটর রবি আজিয়াটার কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে সরকারের। গত বছরের ২৪ নভেম্বর বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা তিন মাসের মধ্যে বিটিআরসিকে পরিশোধ করতে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ওপর গত ২৬ জানুয়ারি রিভিউ পিটিশন জমা দেয় গ্রামীণফোন।
গত বৃহস্পতিবার এ আবেদনের শুনানি শেষে ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১ হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দেন আদালত এবং আজ সোমবার রিভিউ আবেদনের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেন। সে নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামীণফোন রোববার অর্থ জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
গ্রামীণফোন অর্থ জমা দেয়ার পর বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘অনেক দিন ধরে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছিল। সংবিধান রক্ষা হলো, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ রক্ষা হলো। টাকা দেয়ার জন্য গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ দিই, দেরি হলেও ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছে। টাকাটা দিতেই যখন হবে, দিয়ে দিয়েছে তারা। তাদের অপারেটর মনে করতাম, রেগুলেটর হিসেবে তাদের যা পাওনা তা সবসময় দিতে প্রস্তুত ছিলাম। কিছু কিছু কাজ বন্ধ রয়েছে আইনগত কারণে। সমস্যা হলে রেগুলেটরকে জানাবেন। রেগুলেটরের সঙ্গে আলোচনা না করলে লাভ হয় না, সময় কিছু নষ্ট হয়।’
এদিকে গ্রামীণফোনের পরিচালক ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত বলেন, গ্রামীণফোন বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। গ্রামীণফোন তার আইনগত অবস্থানের কোনো প্রকার ব্যত্যয় ছাড়াই আপিল বিভাগের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসিকে সমন্বয়যোগ্য ১ হাজার কোটি টাকা জমা দিয়েছে। গ্রামীণফোন তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলতে চায়, এটি একটি বিরোধপূর্ণ অডিট এবং গ্রামীণফোন আদালত অথবা আদালতের বাইরে এ অডিটের গঠনমূলক সমাধান করতে চায়।
তিনি আরো বলেন, অডিট বিরোধ সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গ্রামীণফোন আলোচনা চালিয়ে যাবে। আশা করছি, ব্যবসায়িক পরিবেশ খুব দ্রুত স্বাভাবিক হবে, যার মাধ্যমে গ্রামীণফোন গ্রাহকদের মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করতে পারবে।
Posted ১২:৫১ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed