বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রাহকদের ৪৭ কোটি টাকা খেয়ে ফেলেছে ১৫ ব্রোকার

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ০৯ জুলাই ২০২০   |   প্রিন্ট   |   379 বার পঠিত

গ্রাহকদের ৪৭ কোটি টাকা খেয়ে ফেলেছে ১৫ ব্রোকার

সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের জমাকৃত টাকার একাংশ খেয়ে ফেলেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ১৫টি সদস্য ব্রোকারহাউজ। প্রতিষ্ঠানগুলোতে গ্রাহকদের যে পরিমাণ টাকা থাকার কথা বাস্তবে তার চেয়ে ৪৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা কম আছে। এর অর্থ গ্রাহকদের প্রায় ৪৭ কোটি টাকা চলে গেছে ব্রোকারহাউজের মালিকদের পকেটে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর নির্দেশে ব্রোকারহাউজগুলোর পাঠানো হিসাব থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ কেলেঙ্কারির পর ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে গ্রাহকদের সমন্বিত হিসাবের (Consolidated Accounts) তথ্য দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল। তাদের পাঠানো তথ্যের আলোকে বুধবার (৮ জুলাই) অনুষ্ঠিত ডিএসইর পরিচালনা পষর্দের বৈঠকে ম্যানেজমেন্ট যে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে তাতে এই ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।

আলোচিত ব্রোকারহাউজগুলোর মধ্যে দেশের কয়েকটি শীর্ষ শিল্প গ্রুপের প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। গ্রুপগুলোর মধ্যে আছে-এপেক্স গ্রুপ, সিনহা গ্রুপ, ল্যাব এইড গ্রুপ ও ডোরিন গ্রুপ। এর মধ্যে ল্যাবএইড ছাড়া বাকী তিনটি গ্রুপের একটি করে কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে।

ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ ব্রোকারহাউজগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবারের বৈঠকে প্রতিষ্ঠানটির স্বতন্ত্র পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার পরিচালক-সবাই একমত হয়েছেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে সবচেয়ে অগ্রাধিকার ও তাদের বিনিয়োগ সুরক্ষিত রাখার ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মতো আর একটি ঘটনাও যাতে না ঘটে যে কোনো মূল্যে এটি নিশ্চিত করতে হবে। ডিএসইর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মোঃ রকিবুর রহমান এই ইস্যুতে অনেক বেশি সোচ্চার ছিলেন বলে জানা গেছে। শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মোঃ শাকিল রিজভী এবং অপর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মোহাম্মদ শাজাহান তাকে সমর্থন দেন। এমনকি স্বতন্ত্র পরিচালকরাও ব্রোকারহাউজসহ পুঁজিবাজারের সব ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি রোধ, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে সিরিয়াস অবস্থান নেন।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ডিএসইর ম্যানেজমেন্ট অবিলম্বে আলোচিত ব্রোকারহাউজগুলোকে গ্রাহকদের টাকা সমন্বিত হিসাবে ফিরিয়ে দিতে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়ে চিঠি দেবে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে গ্রাহকদের টাকা অ্যাকাউন্টে জমা করা না হলে বিদ্যমান আইনে ডিএসই খেলাপি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে।

জানা গেছে, গ্রাহকদের সমন্বিত হিসাবে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি রয়েছে অ্যাপেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠান অ্যাপেক্স ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডে। ঘাটতির পরিমাণ ২১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। গ্রাহকদের এই পরিমাণ টাকা তারা অন্য হিসাবে সরিয়ে নিয়েছে অথবা ভেঙ্গে খেয়েছে।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা ঘাটতি ওপেক্স-সিনহা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সিনহা সিউকিরিটিজে।

নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ক্যাপিটালের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনিক্যাপ সিকিউরিটিজে ঘাটতির পরিমাণ ৬ কোটি ৯ লাখ টাকা।

এক্সপো ট্রেডার্স নামের ব্রোকারহাউজে গ্রাহকদের সমন্বিত হিসাবে ৫ কোটি ৩ লাখ টাকা ঘাটতি আছে।

শীর্ষ পাঁচ খেলাপি প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা সাদ সিকিউরিটিজে ঘাটতির পরিমাণ ১ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

বাকী ১০ ব্রোকারহাউজে সর্বনিম্ন ৪ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘাটতি আছে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ জুলাই ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।