| সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০২০ | প্রিন্ট | 261 বার পঠিত
তামাদি পলিসির উচ্চহার বাংলাদেশের জীবন বীমা শিল্পের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা। অধিকাংশ জীবন বীমা কোম্পানিতে তামাদি পলিসির উচ্চহারের কারণে বীমাশিল্প বছরে প্রচুর রিনিউয়াল প্রিমিয়াম আয় থেকে বঞ্চিত হয়। অন্যদিকে পলিসি তামাদি হলে আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে গ্রাহকদের জমাকৃত টাকাও ফেরত দেয়া যায় না। আবার বিশেষ ক্ষেত্রে জমাকৃত প্রিমিয়ামের আংশিক ফেরত দেয়া গেলেও তা পরিমাণে অত্যন্ত কম বিধায়, গ্রাহকরা সন্তুষ্ট হয় না, যা বীমাশিল্পের প্রতি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে। এছাড়া তামাদির উচ্চহার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয় বৃদ্ধির মাধ্যমে কোম্পানির আর্থিক সামর্থ্যকে সংকুচিত করে।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ পলিসি তামাদির জন্য কারণ চিহ্নিত করে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে রিনিউয়াল প্রিমিয়াম অর্জনে এজেন্টদের নিষ্ক্রিয়তার পাশাপাশি এজেন্টদের কোম্পানি পরিবর্তনের মাধ্যমে পলিসি স্থানান্তরও ব্যাপকভাবে দায়ী।
এমতাবস্থায় পলিসি চালু রাখার মাধ্যমে এজেন্ট কর্তৃক কোম্পানির রিনিউয়াল প্রিমিয়াম আয় বৃদ্ধিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখা, বীমাশিল্পে পেনিট্রেশন বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ন্ত্রণের জন্য এজেন্ট কমিশনের বিষয়ে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বেশকিছু নির্দেশনা সংবলিত সার্কুলার জারি করেছে।
নির্দেশনাগুলো হলো- লাইফ বীমাকারীর ১ম বর্ষ ও ডেফার্ড প্রিমিয়ামের উপর প্রদেয় কমিশনের শতকরা ১০ ভাগ ২য় বর্ষের নবায়ন প্রিমিয়াম সংগৃহীত হওয়ার পর প্রদেয় নবায়ন কমিশনের সাথে এজেন্ট এবং সকল স্তরের উন্নয়ন কর্মকর্তাদের পরিশোধ করতে হবে। বিলম্বিত কমিশনের উপর পূর্ববর্তী বছরের বিনিয়োগ আয়ের হার অথবা বার্ষিক ৩ শতাংশ সরল সুদ-এ দু’টির মধ্যে যেটি কম সে হারে মুনাফা প্রদান করে বিলম্বিত কমিশন বিল তৈরি করতে হবে। কমিশনসহ অন্য যে কোনোরকম ব্যয় যেমন- বোনাস, যাতায়াত, বাড়িভাড়া ইত্যাদি সংগৃহীত প্রিমিয়ামের সাথে সমন্বয় করা যাবে না। এজেন্ট এবং সকল উন্নয়ন কর্মকর্তাদের ব্যাংকিং চ্যানেলের (Mobile Financial Services এবং এজেন্ট ব্যাংকিংসহ) মাধ্যমে কমিশন পরিশোধ করতে হবে। জীবন বীমা কোম্পানিগুলোতে গত ৫ বছরের কম সময় ধরে যে সকল পলিসি তামাদি হয়ে আছে সে সকল পলিসি কোনো বিলম্ব ফি ছাড়াই পুনর্বহালের সুযোগ প্রদানের জন্য গত ৭ জুলাই ২০২০ইং তারিখে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসমূহে বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক ‘‘মুজিববর্ষে বীমা কোম্পানির উপহার’’ শীর্ষক একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এই বিজ্ঞপ্তির আলোকে তামাদি পলিসি পুনর্বহাল এবং উপরোল্লিখিত নির্দেশনাসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি জানার লক্ষ্যে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ জীবন বীমা কোম্পানিগুলো থেকে নির্দিষ্ট ছকে ২০১৫-২০১৯ পর্যন্ত তামাদি পলিসির তথ্য সংগ্রহ করছে। পলিসি তামাদির উচ্চহার কমানো, রিনিউয়াল প্রিমিয়াম আয় বৃদ্ধি, ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং পেনিট্রেশন বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের জীবন বীমাশিল্পের আর্থিক সামর্থ্য বৃদ্ধি করার লক্ষ্যেই কর্তৃপক্ষকে এ সকল কার্যক্রম হাতে নিতে হয়েছে।
Posted ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed