শনিবার ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিবার নিয়ে দেখা যায় এমন সিনেমা তৈরি করুন : প্রধানমন্ত্রী

  |   সোমবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২১   |   প্রিন্ট   |   452 বার পঠিত

পরিবার নিয়ে দেখা যায় এমন সিনেমা তৈরি করুন : প্রধানমন্ত্রী

সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এমনভাবে সিনেমা তৈরি করতে হবে, যেন পরিবার-পরিজন নিয়ে দেখতে পারি। রোববার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

সমাজ গঠনে চলচ্চিত্রের ভূমিকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি একজন রাজনীতিবিদ, যত বক্তৃতা দিয়ে মানুষকে যত কথাই বলি না কেন, একটা নাটক, একটা সিনেমা, একটা গানের মধ্য দিয়ে বা একটা কবিতার মধ্যে দিয়ে কিন্তু অনেক কথা বলা যায়, মানুষের অন্তরে প্রবেশ করা যায়, মনের গহীনে প্রবেশ করা যায়। সেজন্য এর একটা আবেদন কিন্তু রয়েছে।

শিশুদের জন্য শিক্ষণীয় চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শিশুদের জন্য সিনেমা তৈরি করা একান্তভাবে প্রয়োজন। এর মধ্য দিয়ে একটা শিশু জীবনকে দেখতে পারবে, বড় হতে পারবে। শিশুদের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করা এবং তার মধ্যে দিয়ে তাদের শিক্ষণীয় বিষয়গুলো প্রতিফলিত করা, এটাও কিন্তু করতে হবে। অনেক দায়িত্ব আপনাদের।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শিল্প-সংস্কৃতি, সেগুলোও যেমন থাকবে, আবার বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলার জন্য সেগুলোও থাকতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে সেগুলো যেন গ্রহণযোগ্যতা পায়।

মুক্তিযুদ্ধের ওপর আরও সিনেমা নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ওপর আমি আপনাদের সিনেমা নির্মাণের অনুরোধ করবো- জাতির পিতাকে ১৫ আগস্ট হত্যা করার পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। কাজেই ইতিহাসটা যেনো সবাই জানে। আমাদের বিজয়ের ইতিহাসটা প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন মনে রাখতে পারে, সেই ধরনের চলচ্চিত্র আরও নির্মাণ হওয়া দরকার।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ অগাস্ট আমাদের জীবনটাকে পাল্টে দিল। তারপর থেকে আর বাংলাদেশের সংস্কৃতির চর্চার সেই গুরুত্বটাই নষ্ট হলো, আদর্শটা নষ্ট হলো। আমরা যে বাঙালি, আমাদের বাঙালির সংস্কৃতির চিন্তা চেতনাটাও নষ্ট হতে বসেছিল। এটা হলো বাস্তবতা।

সাংস্কৃতিক জগতের সঙ্গে নিজের পরিবারের সদস্যদের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাসায় সব সময় সবার অবাধ যাতায়াত ছিল। এমনটি ধানমন্ডি লেকের সামনে যখন শ্যুটিং হতো, তখন সবাই আমাদের বাসায় এসেই বসতো, চা-পানি পান করতো, খাবার খেতো। আমার মা সবাইকে আপ্যায়ন করতেন।

দুর্দশাগ্রস্ত শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কষ্টটা যখন আমি দেখি; আর বিশেষ করে আমার ছোট বোন রেহানা যখন লন্ডনে থাকে, সে অনলাইনে পত্রিকা নিয়মিত পড়বে এবং কারো কোনো কষ্ট দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে সে খবর পাঠায়। আমি চেষ্টা করি, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে। আমি জানি, যখন আমি আছি, আমি হয়ত সহযোগিতা করে যাচ্ছি, কিন্তু যখন আমি থাকবো না, তখন কী হবে? সেই চিন্তা করেই কিন্তু এ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় ও সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ বিজয়ীদের হাতে তুলে দিয়েছেন অনুষ্ঠানের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তথ্য সচিব খাজা মিয়াসহ চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি অঙ্গনের নবীন-প্রবীণ শিল্পী-অভিনেতা ও নির্মাতারা।

২০১৯ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্য থেকে ২৫টি ক্যাটাগরিতে ছয়টি যুগ্মসহ মোট ৩১ জনকে জাতীয় পুরস্কার দেওয়া হয়। এবার আজীবন সম্মাননা (যুগ্ম) পান বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা) ও অভিনেত্রী কোহিনুর আক্তার সুচন্দা।

আজীবন সম্মাননা ছাড়া জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯ এর অন্যান্য ২৫ টি বিষয়ে বিজয়ী সিনেমা ও ব্যক্তিবর্গ হচ্ছেন- শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র (যুগ্ম): ন ডরাই ও ফাগুন হাওয়ায়, শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: নারী জীবন, শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: যা ছিলো অন্ধকারে, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক: তানিম রহমান অংশু (ন ডরাই), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা প্রধান চরিত্রে: তারিক আনাম খান (আবার বসন্ত), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী প্রধান চরিত্রে: সুনেরাহ বিনতে কামাল (ন ডরাই), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রে: এম ফজলুর রহমান বাবু (ফাগুন হাওয়ায়), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রে: নারগিস আক্তার (হোসনে আরা) (মায়া দ্য লস্ট মাদার), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা/অভিনেত্রী খল চরিত্রে: জাহিদ হাসান (সাপলুডু)।
শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী (যুগ্ম) নাইমুর রহমান আপন (কালো মেঘের ভেলা) ও আফরীন আক্তার (যদি একদিন), শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ইমন (মায়া দ্য লস্ট মাদার), শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক: হাবিবুর রহমান (মনের মতো মানুষ পাইলাম না), শ্রেষ্ঠ গায়ক: মৃনাল কান্তি দাস (তুমি চাইয়া দেখো…) (শাটল ট্রেন), শ্রেষ্ঠ গায়িকা (যুগ্ম): মমতাজ বেগম (বাড়ির ওই পূর্বধারে…) (মায়া দ্য লস্ট মাদার) ও ফাতিমা-তুয-যাহরা ঐশী (মায়া, মায়া রে…) (মায়া দ্য লস্ট মাদার), শ্রেষ্ঠ গীতিকার (যুগ্ম): নির্মলেন্দু গুণ (ইস্টিশনে জন্ম আমার…) (কালো মেঘের ভেলা) ও ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (কবি কামাল চৌধুরী) (চল হে বন্ধু চল…) (মায়া দ্য লস্ট মাদার), শ্রেষ্ঠ সুরকার (যুগ্ম): প্লাবন কোরেশী (আব্দুল কাদির) (বাড়ির ওই পূর্বধারে…) ও সৈয়দ মো. তানভীর তারেক (আমার মায়ের আঁচল…) (মায়া দ্য লস্ট মাদার), শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: মাসুদ পথিক (মাসুদ রানা) (মায়া দ্য লস্ট মাদার), শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: মাহবুব উর রহমান (ন ডরাই), শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: জাকির হোসেন রাজু (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)।

শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: জুনায়েদ আহমদ হালিম (মায়া দ্য লস্ট মাদার), শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক (যুগ্ম): মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বাসু ও মো. ফরিদ আহমেদ (মনের মতো মানুষ পাইলাম না), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: সুমন কুমার সরকার (ন ডরাই), শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ (ন ডরাই), শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজ-সজ্জা: খোন্দকার সাজিয়া আফরিন (ফাগুন হাওয়ায়) এবং শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান: মো. রাজু (মায়া দ্য লস্ট মাদার)। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র (যুগ্ম): ন ডরাই ও ফাগুন হাওয়ায়; শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: নারী জীবন; শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: যা ছিল অন্ধকারে- এ বছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:০২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২১

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।