শনিবার ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিয়ের শর্তে জামিন লাভ

প্রতারণা- ধর্ষণ মামলায় পাবনার সাবেক এমপি আরজু ফেঁসে গেলেন

  |   সোমবার, ১৩ মার্চ ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   73 বার পঠিত

প্রতারণা- ধর্ষণ মামলায় পাবনার সাবেক এমপি আরজু ফেঁসে গেলেন

প্রকৃত নাম গোপন করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিয়ের প্রলোভনে দীর্ঘদিন যাবৎ এক নারীর সঙ্গে স্বামী- স্ত্রীর ন্যায় সংসার পাবনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু ওরফে ফারুকের। কিন্তু এক পর্যায়ে ওই নারীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেলে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন ওই নারী। পরে গ্রেফতার হন খন্দকার আজিজুল হক আরজু ওরফে ফারুক।

সোমবার (১৩ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক বেগম সামছুন্নাহার এই আসামীকে বিয়ের শর্তে জামিন মঞ্জুর করেন।

সূত্র মতে, সোমবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক বেগম সামছুন্নাহার পিবিআইয়ের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে ২৩ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল সংক্রান্ত প্রতিবেদন পুলিশকে দাখিল করতে দিন ধার্য করেন।
নিজের নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে তালাকপ্রাপ্ত নারীকে বিয়ে ও প্রতারণার ঘটনায় এ মামলা করা হয়। গত বছরের ২২ এপ্রিল শিক্ষানবিশ এক আইনজীবীর মাধ্যমে মামলাটি করেন ওই নারী। চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক বেগম সামছুন্নাহারের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০০ সালের ডিসেম্বরে বাদীর প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর তিনি একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করার সময় বাসায় প্রায় নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছিলেন। তখন তার আত্মীয়স্বজনরা তাকে আবারও বিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। একপর্যায়ে ২০০১ সালের শেষ দিকে বাদীর চাচার মাধ্যমে আসামির (খন্দকার আজিজুল হক আরজু ওরফে ফারুক) সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে আসামি নিয়মিত বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একপর্যায়ে সফল হন। আসামি তাকে জানান, তার প্রথমপক্ষের স্ত্রী মারা গেছেন। প্রথমপক্ষের ছেলেসন্তানের প্রতি বাদীকে দুর্বল করেন।

এতে আরও বলা হয়, সামাজিকনির্ভরতা ও একাকিত্বের অবসানসহ নতুন সংসার শুরু করার মাধ্যমে বাদী আসামিকে মনেপ্রাণে ভালোবেসে ফেলেন এবং বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হন। ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর আসামির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারি তাদের একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। সন্তান গর্ভে আসার পর আসামি বিভিন্ন ছলছাতুরির মাধ্যমে বাচ্চা নষ্ট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাদীর দৃঢ়তার জন্য তা করতে পারেনি। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আসামির আচার-আচরণে পরিবর্তন আসে। বাসায় আসা কমিয়ে দেন। বাদীর নামে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার কথা বললে তার বাবা ১০ লাখ টাকা এবং জমানো আট লাখ টাকা ও ১৫ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে আসামিকে টাকা দিলেও কোনো ফ্ল্যাট কিনে দেননি এবং কোনো টাকাও ফেরত দেননি।

একপর্যায়ে আসামি বাদীর বাসায় আসা বন্ধ করে দেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তার প্রথমপক্ষের স্ত্রী জীবিত। সে ঘরে কন্যাসন্তান আছে এবং স্ত্রীর সংসারে বসবাস করেন। আরও জানতে পারেন, বিবাদী এর আগে বাদীর কাছে নিজের নাম ফারুক হোসেন হিসেবে প্রচার করলেও প্রকৃতপক্ষে তার নাম খন্দকার আজিজুল হক আরজু। মিথ্যা তথ্য ও পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্যই বাদীকে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন। এরপর আসামি কয়েকবার নিজে ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দ্বারা বাদীকে হত্যার উদ্দেশে আক্রমণ করেন। একপর্যায়ে আসামি বাদীর সঙ্গে বিয়ে, গর্ভপাত ও ঔরসজাত কন্যার পিতৃপরিচয় সরাসরি অস্বীকার করেন।

এ ঘটনায় গত বছরের ২২ এপ্রিল শিক্ষানবিশ এক আইনজীবী আদালতে মামলা করেন। ট্রাইব্যুনাল বাদীর জবানবন্দি নিয়ে পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের আদেশ দেন। অভিযোগ তদন্তের পর ঢাকা মহানগর উত্তর পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম ট্রাইব্যুনালে গত ৫ জানুয়ারি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে প্রতিবেদন জমা দেন।

মামলার তদন্তে বাদীর কন্যাসন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে কন্যাসন্তান বাদীর গর্ভজাত এবং বিবাদীর জন্মদাতা বাবা বলে প্রতিবেদনে উঠে আসে।

 

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৭:২৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৩ মার্চ ২০২৩

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।