শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে ডিএসই সিএসই ডিবিএর সেমিনার অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   34 বার পঠিত

বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে ডিএসই সিএসই ডিবিএর সেমিনার অনুষ্ঠিত

বিশ্ব বিনিয়োগ সপ্তাহ ২০২৪ এর ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ( ৯ অক্টোবর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি এবং ডিএসই ব্রোকারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে (জুম) “Basics of Investing and Investor Resilience” শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

ডিবিএ এর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিবি এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম এবং সিএসই’র চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডিএসই’র মহাব্যবস্থাপক এবং প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ছামিউল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিবিএ এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুদ্দিন, সিএফএ। মূল প্রবন্ধে তিনি সঞ্চয় বনাম বিনিয়োগ, কমন অ্যাসেট ক্লাস, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা, স্টক বিনিয়োগ করে সফলতার উপায়, ভাল স্টক নির্বাচন করার নিয়মসমূহ, একটি ভাল বিনিয়োগ বাছাই করার মানদন্ড এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করেন।

পরবর্তীতে প্যানেল আলোচনা পরিচালনা করেন সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. সাই্ফুর রহমান মজুমদার, এফসিএ, এফসিএমএ এবং প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ডিসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট আশরাফ আহমেদ, বিআইবিএম এর সদস্য প্রশান্ত কুমার ব্যাণার্জি এবং রিক্স ম্যানেজমেন্ট প্রফেশনাল সাবেথ সিদ্দিকি।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, আমি সব সময় ভালোকে ভালো এবং খারাপকে খারাপ বলি। তাই আমি ফ্লোর প্রাইজ আরোপের সময় ফ্লোর প্রাইজ নিয়ে কথা বলেছি। ফ্লোর প্রাইস থাকলে শেয়ারের প্রাইস কিভাবে নির্ধারিত হবে। এছাড়াও ডিএসইকে আরও ক্ষমতায়ন করতে হবে এবং তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। বিশেষ করে আইপিওর ক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে ভাল মানের শেয়ারের সংখ্যা খুবই কম। এজন্য সরকারি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে বাজারে নিয়ে আসতে হবে। এর ফলে বিনিয়োগকারীগণ বিনিয়োগের জন্য ভাল শেয়ার পাবেন। সরকারি কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হলে বিনিয়োগকারীগণ উপকৃত হবেন এবং সরকার উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য অর্থ পাবে। এজন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাবলিক ইন্টারেস্টের চেয়ে বড় কিছু নেই। সাম্প্রতিক সময়ে বিএসইসি কিছু গ্রুপের সাথে আলোচনা করেছে। ভাল কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনার জন্য কিছু আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে। তা না হলে পারিবারিক কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসবে না।

অনুষ্ঠানে সভাপতি ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের পূর্বে বিভিন্ন ঝুঁকিসমূহ বিবেচনা করে থাকেন। এর মধ্যে প্রধান হলো রাজনৈতিক ঝুঁকি ও নতুন করে অন্ত‍ভু‍র্ক্ত হয়েছে পরিবেশ, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সুশাষন (ইএসজি) ঝুঁকি। কিছুদিন আগে আমরা দেখেছি বেশ কিছু ব্লুচিপ কোম্পানি থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করেছে। পরে আমরা জানতে পেরেছি সেসব বিনিয়োগকারী ইএসজি চার্টারে স্বাক্ষর করেছে। তাই ইএসজি বিষয়ে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। ইনভেস্টমেন্ট রেজিলেন্সের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের তথ্যের উপর এক্সেস নিশ্চিত করতে হবে। আর বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে হবে। এছাড়াও আমাদের গবেষণাকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে প্রাইমারি রেগুলেটর হিসেবে ক্ষমতায়ন করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার জন্য ডিএসইর ক্ষমতায়ন জরুরি। আইপিও এর গুণগতমান নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ডিএসই’র মতামতকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত। এছাড়াও বিনিয়োগকারীকে ঋণ দেয়ের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বাজার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমাদের বিবেচনা করে ঋণ দেয় আবশ্যক। তিনি সরকারি কোম্পানিগুলোকে দ্রুত তালিকাভুক্তির ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করার অনুরোধ জানান।

বিশেষ অতিথি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা অনেক গবেষণার মাধ্যমে বিনিয়োগ করে থাকেন। আর তাদের গবেষণা মূলত আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে। কিন্তু আর্থিক প্রতিবেদনগুলোতে অনেক সময় সঠিক তথ্য উপস্থাপিত হয় না। তাই আর্থিক প্রতিদেবনের উপর ভিত্তি করে বিনিয়োগ করা কঠিন হয়ে যায়। তাই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও এ বাজার বিনিয়োগে তেমন আগ্রহী হচ্ছে না। এজন্য অডিটর, ক্রেডিট রেটিং এজেন্সিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হবে। আমাদের সাধারন বিনিয়োগকারীদের গবেষণা করার সুযোগ না থাকায় তারা বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই পুঁজিবাজার মধ্যস্ততাকারীদের গবেষনা বৃদ্ধি করতে হবে। যা বাজার উন্নয়নে সহায়ক হবে। পুঁজিবাজারের নিয়ম-কানুনগুলো হঠাত পরিবর্তন করার কারণে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও মন্দ কোম্পানিগুলোকে শাস্তির পাশাপাশি ভালো কোম্পানিগুলোকেও তাদের কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে। যার যা কাজ তা সঠিকভাবে পালন করে পুঁজিবাজারকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহবানও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রধান করেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, যতদূর জানা যায়, প্রতি বছর বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ পালনের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে শিক্ষা এবং সচেতনতার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এবারের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের অন্যান্য সেক্টরের ন্যায় পুঁজিবাজারেও ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে। যদিও আমাদের পুঁজিবাজার একটি দীর্ঘ পথ পরিক্রমার মধ্য দিয়ে এসেছে। আমরা এর কাঙ্ক্ষিত কাঠামো তথা উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারিনি। এখন সময় এসেছে যথাযথ সংস্কারের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের জন্য একটি আধুনিক এবং সময়োপযোগী আইনগত কাঠামো তৈরি করা। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সংস্কারের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। আমরা যার যার জায়গা থেকে সহযোগিতার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার নিশ্চিত করতে চাই। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করার একটি অন্যতম পূর্বশর্ত হলো সংস্কারের মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ কাঠামো তৈরি করা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ডিএসই’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এজিএম সাত্ত্বিক আহমেদ শাহ। তিনি বলেন, এই সপ্তাহটি হলো বিনিয়োগকারীদের শিক্ষা ও সুরক্ষা প্রচার এবং ব্যক্তি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে বিনিয়োগ শিক্ষা বৃদ্ধির জন্য একটি বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ। আমরা আমাদের বাজারে স্বচ্ছতা এবং বিশ্বাসকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করি। আমরা সুশাসন ও জবাবদিহিতার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামো অধিক শক্তিশালীর করার জন্য কাজ করছি। যাতে আমাদের বিনিয়োগকারীরা তাদের লেনদেনে নিরাপদ বোধ করে এবং তাদের বিনিয়োগে আত্মবিশ্বাসী হয়। আসুন আমরা এই বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহকে বৃহত্তর সচেতনতা, ক্ষমতায়ন এবং সহযোগিতার দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাই।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৮:০৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।