বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ০৭ মার্চ ২০২০ | প্রিন্ট | 369 বার পঠিত
বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা না কমানোর বিষয়টি পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে বেতন না কমানোর বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান একটি চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পাওয়া আইন ও নৈতিক অধিকার।
বিষয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা করতে বলা হয়। এ চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বেসিক ব্যাংকের বেতন-ভাতার বিষয়টি নতুন করে দেখতে শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকেই বেসিক ব্যাংকের বেতন কাঠামো হ্রাস করা হয়েছে। এ নিয়ে আদালতে রিটও চলছে।
অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে ড. মসিউর রহমান বলেন, বিগত দিনে বেসিক ব্যাংকে আর্থিক সংকট থাকলেও তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রচেষ্টায় গত বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ ১২ হাজার ৮৭০ কোটি থেকে বেড়ে ১৩ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে।
ফলে এ সময়ে আমানত বেড়েছে ৮৭২ কোটি টাকা। একইভাবে ব্যাংকটিতে উল্লেখযোগ্য হারে খেলাপি ঋণের পরিমাণও হ্রাস পেয়েছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ছিল ৫৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি কমেছে ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস প্রচেষ্টার কারণে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমার পাশাপাশি আমানতের পরিমাণও বাড়ছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে ব্যাংকটিকে ফের লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় ২২ ডিসেম্বর বেতন-ভাতা কমানোর নির্দেশনা জারি করে পরিচালনা পর্ষদ, যা কার্যকর হলে বেতন-ভাতা প্রায় ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পাবে।
বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বোনাস বন্ধ করা হয়েছে। একইভাবে বেতন-ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৃঢ় মনোবল ও উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত করবে, যা পরে ব্যাংকের চাকরিজীবীরা কার্যক্রম পরিচালনায় নিরুৎসাহিত হবেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা কমানো হলে সবার মনোবল ভেঙে যাবে এবং ব্যাংকের সুনাম ক্ষুণ্ন হবে। পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২১শ’ পরিবার পথে বসার উপক্রম হবে।
সূত্র জানায়, ২২ ডিসেম্বর বেসিক ব্যাংকের সব কর্মকর্তার বেতন-ভাতা কমানোর নির্দেশ প্রদান করে পরিচালনা পর্ষদ। ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি জারি করে সব শাখা প্রধানের কাছে পাঠানো হয়।
ডিসেম্বরে ঘোষণা দেয়ার পর ফেব্রুয়ারিতে বেতন-ভাতা কমানো হয়েছে। সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার থেকে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন হ্রাস করা হয়েছে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের।
জানা গেছে, বেতন-ভাতা না কমানোর জন্য বেসিক ব্যাংকের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী অর্থমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে আবেদন করেন।
উল্লেখ্য, গত আগস্টে বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ব্যাংকটিতে কর্মরতদের বেতন কমানোর নির্দেশনা দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ওইদিন বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা ৩৫৪ কোটি টাকা লোকসান করেছেন। মাত্র ৭২টা শাখার জন্য এখানে প্রায় ২১০০ জনবল আছে। এত লোকের এখানে কী কাজ?’
Posted ৩:৩৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৭ মার্চ ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed