শনিবার ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মূলধন ঘাটতিতে ১৩ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ০৬ জুলাই ২০২০   |   প্রিন্ট   |   402 বার পঠিত

মূলধন ঘাটতিতে ১৩ ব্যাংক

প্রয়োজনীয় মূলধন সংরক্ষণ করতে পারেনি ১৩টি ব্যাংক। আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসারে ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি রয়েছে ২৫ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। এসব ব্যাংক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নতুন করে কোনো ঝুঁকি এলে ব্যাংক সেটি মোকাবিলার পরিবর্তে নিজেই বড় ধরনের সংকটে পড়বে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে করোনার আক্রমণ শুরু হলেও মার্চ ভিত্তিক কার্যক্রমেই সংকট বেড়েছে ব্যাংক খাতে। করোনার সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ব্যাংক খাতকে বাঁচাতে নানা ধরনের ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে মূলধনে ঘাটতিতে পড়া ব্যাংক ছিল ১২টি। তিন মাসে সংকটপূর্ণ ব্যাংক একটি বেড়েছে। মূলধন ঘাটতিতে পড়া ১৩ ব্যাংকের মধ্যে ৭টি সরকারি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূলধন ঘাটতি রয়েছে সরকারি মালিকানাধীন বিশেষায়িত খাতের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। মার্চ শেষে ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি হয়েছে ৯ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। তিন মাস আগে গত ডিসেম্বরে ছিল ৯ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা ঘাটতি রয়েছে আরেক সরকারি ব্যাংক সোনালীর। দেশের শীর্ষ এ ব্যাংকের ডিসেম্বরে মূলধন ঘাটতি ছিল ৯ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। সরকারি অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে জনতার ২ হাজার ৫৬৩ কোটি, অগ্রণীর ২ হাজার ৪৭৫ কোটি, বেসিকের ১ হাজার ৫৪ কোটি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ৮৫৬ কোটি ও রূপালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি রয়েছে ৪৪৪ কোটি টাকা।

বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে- আইসিবির ১ হাজার ৬০৭ কোটি, বাংলাদেশ কমার্সের ৯৩৫ কোটি, পদ্মার ৩২৫ কোটি, বাংলাদেশ পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংকের ৮ কোটি, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ৮ কোটি ও বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক ও পাকিস্তানের ৭৭ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি রয়েছে। ডিসেম্বরে মূলধন উদ্বৃত্ত থাকলেও মার্চে ঘাটতিতে পড়েছে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক।

আন্তর্জাতিক ব্যাসেল-৩ নীতিমালা অনুসারে কোনো ব্যাংকের ৪০০ কোটি অথবা মোট ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশের মধ্যে যেটি বেশি তা মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করতে হয়। গত মার্চ শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ ছিল ১০ লাখ ৮৫ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ১ লাখ ১১ হাজার ৪৩ কোটি টাকা মূলধন সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল। ১৩ ব্যাংকের ঘাটতি হলেও অনেক ব্যাংক প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মূলধন সংরক্ষণ করেছে। ফলে সামগ্রিকভাবে মূলধন সংরক্ষণ করা হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ২১৪ কোটি টাকা, যা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি। এতে সামগ্রিকভাবে মূলধন পর্যাপ্ততার হার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যেখানে প্রয়োজন ১০ শতাংশ।

করোনা সংকটের কারণে ঋণ আদায় হবে না, খেলাপি ঋণ বাড়বে ব্যাংকগুলো নগদ টাকা ও মূলধনের সংকটে পড়বে এমন আশঙ্কা পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোও করেছে। মূলধনের ভিত্তি শক্তিশালী করে করোনা সংকট মোকাবিলায় ব্যাংকগুলোকে সক্ষম করতে ইউরোপের দেশগুলো ও ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লভ্যাংশ বিতরণ স্থগিত করেছে। বাংলাদেশে এটি করা হলেও পরে সামান্য শিথিল করা হয়। এ ছাড়া অনাদায়ী ঋণকে খেলাপি না দেখানো ও নীতিগত নানা ধরনের ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের জোগান দেওয়া অর্থ ও মুনাফার একটি অংশ মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। কোনো ব্যাংক মূলধনে ঘাটতি রেখে তার শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে পারে না।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:৫১ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৬ জুলাই ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11187 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।