বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট | 648 বার পঠিত
দেশের রফতানি আয়ের শীর্ষ খাত তৈরি পোশাক শিল্প সম্প্রতি ঘুরে দাঁড়ালেও কভিড-১৯-এর প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত সাত মাসে রফতানি আয় কমেছে ১৮ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানির তথ্য সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান ওটেক্সার (অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল) হিসাবে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
একই সময়ে ভিয়েতনামের রফতানি কমেছে ১১ শতাংশের মতো। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এখনো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পোশাক রফতানিকারকের তালিকায় রয়েছে। অন্যদিকে কম্বোডিয়ার রফতানি কমেনি, বরং বেড়েছে ৬ শতাংশের কিছু বেশি। উদ্যোক্তারা মনে করেন, করোনা সংকট কাটলে বাংলাদেশ আবারও তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে।
তারা জানায়, বিভিন্ন কারণে ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ আবারও ঘুরে দাঁড়াবে। করোনাকালে দেশের পোশাক কারখানা চালু থাকলেও কাঁচামালের অভাবে তারা পণ্য তৈরি করতে পারেনি। অন্যদিকে ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া সহজেই কাঁচামাল পেয়েছে চীন থেকে। এ ছাড়া ভিয়েতনাম শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়। বাংলাদেশকে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অবাকাঠামো ঘাটতি অনেক।
এ প্রসঙ্গে নিট পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত সাত মাসে ১৮ শতাংশ রফতানি আয় কমেছে। এটা আরো বেশি হতে পারত। আমরা মনে করেছিলাম এটা প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ হবে।’
প্রধানমন্ত্রী পোশাক খাতের জন্য প্রণোদনা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা খোলা রাখায় তেমন প্রভাব পড়েনি। তিনি বলেন, ‘গত জুন-জুলাইয়ে দেশটিতে আমাদের রফতানি আয় ভালো হয়েছে। তবে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে এসে আবার কমতে শুরু করেছে। এ ছাড়া ক্রেতারা পণ্যে দাম কমিয়ে দিচ্ছে। তবে চলতি মাসের শেষে গিয়ে জানা যাবে রফতানির প্রকৃত চিত্র কী হবে। এই সময় শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন পোশাকের ক্রয়াদেশ আসবে দেশে।’
করোনা সংকট কাটলেই ভিয়েতনামকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ আবারও ঘুরে দাঁড়াবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভিয়েতনামে পণ্য সরবরাহ করতে সময় লাগে ১৫-২০ দিন (লিড টাইম), সেখানে বাংলাদেশের লাগে ৪৫ থেকে ৬০ দিন। এ ছাড়া শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় ভিয়েতনাম। এর পরও অবস্থা স্বাভাবিক হলে বাংলাদেশ ভিয়েতনামকে আবাওর ছাড়িয়ে যাবে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে অন্য দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে প্রায় ৩১ শতাংশ। এর ধাক্কা লেগেছে দেশটিতে রফতানিকারক প্রায় সব দেশেই। একমাত্র কম্বোডিয়া বাদে সেখানে শীর্ষ ১০ রফতানিকারক দেশের সবারই রফতানি কমেছে।
ওটেক্সার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আলোচ্য সময়ে কম্বোডিয়া ছাড়াও ভিয়েতনামের পোশাক রফতানি পরিস্থিতি বাংলাদেশের চেয়ে ভালো। অন্যদিকে প্রধান রফতানিকারক চীনের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মোট তিন হাজার ৩৮৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পোশাক পণ্য আমদানি করেছে। আগের বছরের একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল চার হাজার ৮৮৬ কোটি ৫৭ লাখ ডলারের।
বর্তমানে পোশাক রফতানিকারক হিসেবে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান প্রতিযোগী দেশ মনে করা হয় ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়াকে। তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি হয়েছে ২৯০ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের। আগের বছরের একই সময়ে দেশটিতে রফতানির পরিমাণ ছিল ৩৫৬ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের পোশাক পণ্য।
Posted ১:২৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed