শুক্রবার ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাষ্ট্রায়ত্ত বাকি ২৫ পাটকলও বন্ধ ঘোষণা

বিবিএনিউজ.নেট   |   শনিবার, ০৪ জুলাই ২০২০   |   প্রিন্ট   |   255 বার পঠিত

রাষ্ট্রায়ত্ত বাকি ২৫ পাটকলও বন্ধ ঘোষণা

সোনালি আঁশে সমৃদ্ধ অর্থনীতির স্বপ্নে স্বাধীনতার পরের বছর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রতিষ্ঠাকালে বিজেএমসির আওতায় ৭০টিরও বেশি পাটকল ছিল। কিন্তু ধারাবাহিক লোকসানের কারণে মিলসংখ্যা কমতে কমতে ২৫-এ গিয়ে ঠেকে।

বৃহস্পতিবার সর্বশেষ পাটকলগুলোও বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠার ৪৮ বছরের মধ্যে ৪৪ বছরই লোকসানে ছিল বিজেএমসি। বর্তমানে সংস্থাটির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যদিও বেসরকারি খাতের অনেক পাটকল ঠিকই মুনাফা করতে পারছে। কভিড-১৯ পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববাজারের পাটের চাহিদা বাড়ছে, এমন একটি সম্ভাবনাময় সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরা।

বন্ধ ঘোষণার কারণ হিসেবে সরকারের পক্ষে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পাট শিল্পকে আবার কীভাবে প্রতিযোগিতায় আনা যায় এবং কীভাবে শক্তিশালী করা যায়, সে বিবেচনা থেকেই পাটকলগুলো বন্ধ করা হয়েছে।

কী প্রক্রিয়ায় পাটকলের বোঝামুক্ত হওয়া যায়, সেই কর্মপরিকল্পনার একটি সারাংশ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠিয়েছিল বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। সেই সারাংশে স্বাক্ষর করে কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে মত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারের ইতিবাচক সাড়া পেয়ে এর প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। আলোচনার পর ঘোষণা দেয়া হয় সব পাওনা মেটানোর। ওই প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি জানানো হয় ১ জুলাই বন্ধ ঘোষণা করা হতে পারে।

বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বন্ধের বিষয়ে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বন্ধের। এরপর বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, সরকারি খাতের পাটকলগুলোর সংস্কার ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে শ্রমিকদের সমুদয় পাওনা বুঝিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশে যে পাট ও পাটজাত পণ্য উৎপাদিত হয় তার ৯৫ শতাংশই বেসরকারি পাটকলে উৎপাদিত হয়। সরকারি খাতটি অত্যন্ত সংকুচিত হয়ে গেছে, যা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছিল না। এগুলোকে আবার প্রতিযোগিতায় কীভাবে আনা যায় এবং কীভাবে শক্তিশালী করা যায়, সে বিবেচনায় এখন পাটকলগুলো বন্ধ করার ঘোষণা করা হয়েছে।

মুখ্য সচিব আরো বলেন, এসব পাটকল বন্ধ থাকলে যে পরিমাণ ক্ষতি হয় চালু থাকলে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। কাজেই এসব পাটকলের সঙ্গে জড়িত শ্রমিক ভাইদের জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তার জন্য সরকার তাদের ২০১৫ সালের জাতীয় মজুরি কাঠামো অনুযায়ী সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনাও দিয়েছেন, যে পাটকলগুলো বন্ধ আছে সেগুলো কীভাবে চালু করা যায়, যাতে সেগুলো বর্তমান এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে। এ-সংক্রান্ত একটি কর্মপন্থা প্রস্তুত করে অতি দ্রুত তার কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্যও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর অতীত তুলে ধরে ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো গত ৪৮ বছরের মধ্যে শুধু চার বছর লাভের মুখ দেখেছে এবং ৪৪ বছর ধরে অব্যাহতভাবে লোকসান দিয়েছে। লোকসান হলে কর্মচারীদের বেতন-ভাতার জন্য সরকারের অর্থের ওপর নির্ভর করতে হতো বলে প্রতি মাসেই শ্রমিক-কর্মচারীদের এ-সংক্রান্ত সমস্যা চলছিল। পাটকল শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের লক্ষ্যে আগামী তিনদিনের মধ্যে তাদের তালিকা প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৫ সালের সর্বশেষ মজুরি কাঠামো অনুযায়ী পাটকলগুলোর ২৫ হাজার শ্রমিককে তাদের অবসরকালীন সুবিধাসহ পাওনা পরিশোধ বাবদ সরকারের ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। পাট খাতের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নজর রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর দর্শন হচ্ছে পাটকল শ্রমিকদের বাঁচানো।

শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের ধরন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, পাওনা বুঝিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে যেসব শ্রমিক অনধিক দুই লাখ টাকা প্রাপ্য তাদের পুরো টাকা এককালীন নগদ পরিশোধ করা হবে। পাওনা টাকার মধ্যে ৫০ শতাংশ এককালীন নগদ এবং অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র আকারে পরিশোধ করা হবে।

এর আগে গত ২৫ জুন পাটকল বন্ধসংক্রান্ত প্রস্তুতি সভা শেষে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেছিলেন, আমরা গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে দেব। আগে মিলগুলোকে বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল। আমরা না বিক্রি করে জুট মিলই রাখব। ম্যানেজমেন্ট দেব যাতে লোক ছাঁটাই না হয়। এই শ্রমিকরা এখানেই চাকরি পাবেন, কারণ স্কিল্ড ওয়ার্কার ছাড়া মিল চালাতে দেয়া হবে না। মিলগুলো বুঝে পাওয়ার পরে টেন্ডার হবে, যে বেশি দেয় তাকে দেয়া হবে কিন্তু হি মাস্ট বি এ জুট মিল এক্সপার্ট। জুট মিল এক্সপার্ট না হলে সে কাজ করবে না। জমি নেয়ার চেষ্টা করলে, সেটা আমরা দেব না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু পাটের জন্য আন্দোলন করেছেন, সুতরাং পাটকে আমাদের রাখতে হবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে জুট মিল থাকবে, এটা ডিসাইডেড।

সরকার পিপিপির কথা বললেও এর আগেও রাষ্ট্রায়ত্ত্ পাটকল বিরাষ্ট্রীয়করণ হয়। তখনকার অভিজ্ঞতাও ভালো না। বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করা মিলগুলোর বেশির ভাগই সরকারের সঙ্গে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি খাতে দেয়া চারটি পাটকল ফিরিয়েও নিয়েছে সরকার। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি খাতে দেয়া মিলগুলোর কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে মিল পরিচালনা না করে বন্ধ অবস্থায় ফেলে রেখেছে, হাজার-হাজার শ্রমিক-কর্মচারীকে তাদের কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। এতে মিল হস্তান্তরের উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছে এবং হস্তান্তর চুক্তি লঙ্ঘিত হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত দ্বিপক্ষীয় ও ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী সরকার, বিজেএমসি ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাওনা পরিশোধের জন্য বারবার পত্র দেয়া সত্ত্বেও পাওনা পরিশোধ করেনি বেসরকারি খাতে দেয়া মিল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও দায়দেনা পরিশোধ না করে এবং দীর্ঘ সময় ধরে মিল বন্ধ রেখে উৎপাদন বৃদ্ধি না করে চুক্তিপত্রের শর্ত ভঙ্গ করেছে। শেয়ার মূলধনের অবশিষ্ট টাকা পরিশোধের জন্য বারবার পত্র দেয়া হলেও মিলের ক্রেতারা ওই অর্থ পরিশোধ করেনি। সরকার ও সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যাবতীয় পাওনা পরিশোধের আগে মিলের কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে বিক্রয়/হস্তান্তর না করার জন্য চুক্তিতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েও মিলের যাবতীয় মেশিনারি ও স্থাপনা সরকারের অজান্তে বিক্রি করে চুক্তি ভঙ্গ করেছে।

সার্বিক প্রেক্ষাপটে বর্তমান সরকারের আমলেই রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল নিয়ে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কয়েক বছর আগে চীনের সরকারি প্রতিষ্ঠান চায়না টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিয়াল করপোরেশন ফর ফরেন ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল করপোরেশনের (সিটিইএক্সআইসি) কারিগরি সহায়তা নেয়ার জন্য সমঝোতা চুক্তি সই হয়। সিটিইএক্সআইসি জরিপ বলছে, পাটকলগুলোর বিদ্যমান পুরনো মেশিন সংস্কার করে কোনো লাভ হবে না। সব মেশিন বদলানোর পরামর্শ দেন তারা। এখন সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির ভিত্তিতে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল পরিচালনার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারে সরকার।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএসএ) সভাপতি মো. জাহিদ মিয়া বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আশা করি, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী মিলগুলো আধুনিকায়নের পর পাট খাতের সম্ভাবনা কাজে লাগানো সম্ভব হবে। তবে পাটের বৈশ্বিক চাহিদা কমে আসছে। এ প্রেক্ষাপটে লাভজনকভাবে মিল পরিচালনা করার জন্য সুচিন্তিত পরিকল্পনার প্রয়োজন আছে। পিপিপির আওতায় এ বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নিয়েই মিলগুলো পরিচালনা করা প্রয়োজন হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সারা বিশ্ব এখন সবুজায়নে জোর দিচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৮টি দেশ পলিথিন ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ওই দেশগুলোয় বিপুল পরিমাণে পাটের ব্যাগের চাহিদা সৃষ্টি হবে। পাটবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল জুট স্টাডি গ্রুপের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বে বছরে পাঁচ হাজার কোটি পিস শপিং ব্যাগের চাহিদা রয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রাকৃতিক আঁশ সমিতির হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালের পর শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেই দেড় হাজার কোটি ডলারের শপিং ব্যাগের বাজার তৈরি হবে। এছাড়া পাটের শপিং ব্যাগ, শৌখিন ও আসবাবসামগ্রী তৈরির কাঁচামাল উৎপাদনেরও সুযোগ রয়েছে। বিশ্ববাজারে শুধু পাটের ব্যাগের চাহিদা রয়েছে ৫০০ বিলিয়ন পিস। এতে পাটের তৈরি পণ্যের বড় ধরনের চাহিদা তৈরি হবে। এতে দেশগুলোতে বার্ষিক বিপুল পরিমাণে পাটের ব্যাগের চাহিদার সৃষ্টি হবে। তাছাড়া পাটের শপিং ব্যাগ, শৌখিন ও আসবাবসামগ্রী তৈরির কাঁচামাল উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে। ফলে রফতানির অন্যতম খাত হতে পারে পাট। সেই বাজার ধরতে আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো এরই মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু পরিকল্পনা ও বিনিয়োগের অভাবে সেটি ধরা কষ্টকর হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ জুট ডাইভারসিফায়েড প্রডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাশেদুল করীম মুন্না এ বিষয়ে বলেন, বহুমুখী পণ্য উৎপাদনের কারণে পাটের সম্ভাবনা অফুরন্ত। সম্ভাবনাময় আন্তর্জাতিক বাজারের ১০ শতাংশও দখল করতে পারলে শুধু এই পাট দিয়েই বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। আগামী বছর থেকে পাট শিল্প থেকে বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার আয় করা মোটেও কোনো স্বপ্ন নয়। এজন্য আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর কারখানা স্থাপন করতে হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য প্রবেশের জন্য গবেষণা বাড়ানো ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদামাফিক পণ্য তৈরির জন্য দেশে দক্ষ জনবল তৈরি করা প্রয়োজন। পাশাপাশি যান্ত্রিক সুবিধা বাড়াতে বড় বিনিয়োগ প্রয়োজন। এজন্য বেসরকারি খাতকে যেমন সহযোগিতা প্রয়োজন, তেমনি রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো লাভের মুখ দেখতে না পারার একটি বড় কারণ নতুন নতুন প্রযুক্তি না আসা ও পণ্যের বহুমুখিতা না হওয়া। এছাড়া অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি তো ছিলই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গবেষণাহীনতা ও পুরনো মেশিন দিয়ে বিশ্ববাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। দেশের কারখানাগুলোতে মাত্র পাঁচ-সাত ধরনের ইয়ার্ন তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু ভারতের কারখানাগুলো ১১০টির বেশি ইয়ার্ন তৈরি করছে। ফলে সুতাভিত্তিক পণ্য তৈরিতে আমরা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছি না। একসময় পাট দিয়ে শুধু দড়ি, চট, ছালা তৈরি হতো। কিন্তু পাট দিয়ে এখন শত শত ধরনের ব্যবহার্য জিনিস তৈরি হচ্ছে। ঘরের দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিস থেকে শুরু করে বিশ্বের নামিদামি গাড়ির ভেতরের কাপড়, বডি, কাপড়, বিছানার চাদর, টুপি, ফার্নিচার, শার্ট, প্যান্ট এমনকি জিনসও এখন তৈরি হচ্ছে পাট থেকে। তৈরি হচ্ছে পাট পাতার চা। সামনের দিনে যদি হোম টেক্সটাইল, হোম ফার্নিশিং বিশেষ করে পর্দার কাপড়, কাভার ও শৌখিন কাপড় তৈরি করতে পারি তাহলে তা আরো বাড়ানো সম্ভব। এছাড়া লাইফস্টাইল পণ্য ও গিফট তৈরি করা সম্ভব। তাহলে এসব বহুমুখী পণ্য দিয়ে সামনের দিনে পাট শিল্পকে জাগিয়ে তোলা সম্ভব।

Facebook Comments Box
বিষয় :
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ২:২৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৪ জুলাই ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11187 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।