বুধবার ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট

শুল্ক কমানোসহ ৪ দাবি বিএলসিএমএ’র

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০   |   প্রিন্ট   |   310 বার পঠিত

শুল্ক কমানোসহ ৪ দাবি বিএলসিএমএ’র

প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে লোকাল প্যাকেজিং ও মুদ্রণ শিল্পের কাঁচামালের ওপর আমদানি শুল্ক প্লাস্টিক প্যাকেজিংয়ের মতো ৫ শতাংশ করাসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ লোকাল কার্টন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলসিএমএ)। স্থানীয় আরও পাঁচটি ব্যবসায়ী সংগঠন একই দাবি জানিয়েছে। সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতি, দি বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পেপার ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিপণন সমিতি এবং চট্টগাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপ।

অর্থ মন্ত্রণালয়, এনবিআর ও এফবিসিসিআই সভাপতির কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশ লোকাল কার্টন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলসিএমএ) সভাপতি এম এ বাসার পাটওয়ারী। মঙ্গলবার (১৬ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি।

সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশের স্থানীয় কার্টন উৎপাদন শিল্পের আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং শ্রমঘন প্রতিষ্ঠান। এই শিল্পে প্রায় ২০ লাখ মানুষ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে বরাবরই সরকার কর্তৃক প্রণীত আইনগুলো এ খাতের জন্য বৈরি অবস্থার সৃষ্টি করে আসছে। অবশ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতি সরকারের যথেষ্ট গুরুত্ব আছে। তাই এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাঁচানোর জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে চারটি মৌলিক দাবি বিবেচনায় নেয়া হবে বলে আশা করছে সংগঠনগুলো।

বিএলসিএমএ’র চিঠিতে উত্থাপিত ৪ দফা দাবি হলো-

১। দেশে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত প্যাকেজিং কাঁচামাল আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন না হওয়ায় আমাদের পেপার অ্যান্ড পেপার বোর্ড, লাইনার ও মিডিয়াম পেপার আমদানি করতে হয় এবং (সিডি) আমদানি শুল্ক পরিশোধ করতে হয়, যা আমাদের বাজারে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পণ্য উৎপাদন করতে বাধাগ্রস্ত করছে। পক্ষান্তরে আমাদের বন্ডেড সুবিধা না থাকলেও প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আন্তর্জাতিক মানের কাগজ ব্যবহার করে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত রফতানি পণ্যের কার্টন/মোড়ক উৎপাদন করতে হয়। তাই প্যাকেজিং কাঁচামালের ওপরে আমদানি শুল্ক প্লাস্টিক প্যাকেজিংয়ের মতো ৫ শতাংশ করার দাবি জানাই। এছাড়া দেশীয় পেপার মিলে উৎপাদিত প্যাকেজিংয়ের কাঁচামাল অর্থাৎ প্যাকেজিং পেপারে ভ্যাট ১৫ শতাংশ করার সুপারিশ করছি। এর ফলে বাণিজ্যিক আমদানি কয়েকগুণ বাড়ার পাশাপাশি সরকারের হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ বাড়বে। এছাড়া প্যাকেজিংয়ের শুল্ক ৫ শতাংশ আরোপিত হলে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার অনেকাংশে হ্রাস পাবে।

২। যেহেতু আমরা ১৫ শতাংশ বা আদর্শ হারে ভ্যাট প্রদান করি, তাই আমাদের উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালের ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কাঁচামাল ক্রয়ে যেহেতু আমরা নিট মূল্যের ওপর ভ্যাট প্রদান করি। কাগজ শিল্পের কাঁচামাল আমদানিকৃত ও বাজার হতে সংগৃহীত ওয়েস্ট পেপারের ওপর ভ্যাট আরোপ করে রেয়াতি সুবিধা দিয়ে ৫ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ এর পরিবর্তে প্যাকেজিং পেপারে ভ্যাট ১৫ শতাংশ করার অনুরোধ জানাই। আদর্শ হার ব্যতীত ভ্যাটের ক্ষেত্রে ভিডিএস কর্তন এর বিধান রাখা হয়েছে বর্তমান আইনে। ভ্যাট প্রদানকারী এবং আদায়কারী উভয়ই যদি ভিডিএস কর্তনকারী সত্তা হয়। তবে এই আইন উভয় কর্তনকারীর ক্ষেত্রে রহিত করার প্রস্তাব করছি। ক্ষুদ্র মাঝারি প্রতিষ্ঠানের জন্য এই আইন প্রতিপালন খুবই সমস্যাজনক। এক্ষেত্রে প্রিটিং ও প্যাকেজিং শিল্পে উৎসে আয়কর কর্তন না করার সুপারিশ করছি।

৩। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ধারা ৫২ সংশোধন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে রহিত করা হয়, যার ফলে আমাদের প্রতিষ্ঠানে সমুদেয় নিট আয় হতে অনেক বেশি পরিমাণ টাকা উৎসে আয়কর হিসাবে কর্তিত হয়ে যায়। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আমাদের নিট আয় ৪-৫ শতাংশের বেশি নয়। এক্ষেত্রে ২-৫ শতাংশ উৎসে কর্তন আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। যে সব প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক আমদানি করে তারা ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর প্রদান করে। তাই উৎসে আয়কর কর্তন তাদের জন্য ডাবল ট্যাক্সেশন হয়ে যায়। এই আদেশটি প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে একটি নির্দেশনা প্রয়োজন। আমাদের প্রতিষ্ঠান সমূহের জন্য উৎসে আয়কর কর্তন বাতিল করার বিশেষ অনুরোধ করছি।

৪। কমবেশি ৭০টি কাগজকল লোকাল প্যাকেজিং শিল্পের প্যাকেজিং পেপার উৎপাদন ও সরবরাহ করছে। বসুন্ধরা পেপার মিল, ইউনুস পেপার মিল, বাংলাদেশ পেপার মিল, তানভীর পেপার মিলসহ ৭/৮টি পেপার মিল ভ্যাট দিয়ে কাগজ বিক্রি করে আসছে। বাকি প্রায় ৮০ শতাংশ কাগজকল ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে কাগজ বিক্রি করে আসছে। যা গত অর্থবছরের কাগজ কল ও লোকাল প্যাকেজিং থেকে অর্জিত রাজস্বের সঙ্গে তুলনা করলেই ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকির বিশাল অঙ্ক বেরিয়ে আসবে। কাগজকলের ১৫ শতাংশ ভ্যাটের পরিবর্তে ৫ শতাংশ ভ্যাট, আমদানি সুবিধা বঞ্চিত হওয়া এবং ভ্যাট ফাঁকির কারণে লোকাল প্যাকেজিং শিল্পের রেয়াত সুবিধা মাইনাসের কোঠায়। রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে লোকাল প্যাকেজিং শিল্পের ন্যায্য রেয়াত সুবিধা পুনর্বহালের লক্ষ্যে প্যাকেজিং পেপারের ওপর ভ্যাট ফাঁকি বন্ধের জোর সুপারিশ জানাই।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১১:০৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11190 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।