রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

শেয়ারবাজার সংস্কারে টাস্কফোর্স গঠন

  |   সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   39 বার পঠিত

শেয়ারবাজার সংস্কারে টাস্কফোর্স গঠন

শেয়ারবাজার উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক মানের সুশাসন নিশ্চিত করতে ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে শেয়ারবাজার সংস্কাে পাঁচ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ টাস্কফোর্স গঠন করেছে।

আজ ৭ অক্টোবর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ টাস্কফোর্স গঠন করেছে।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম অর্থসূচককে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট টাস্কফোর্সের সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং–এর জ্যেষ্ঠ অংশীদার এ এফ এম নেসার উদ্দীন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক মো. মোস্তফা আকবর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন।

বিএসইসি গঠিত পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের কার্যপরিধি নির্ধারণ ১৭টি। তবে পরে আরও কোনো বিষয় গুরুত্বপূর্ণ মনে করলে টাস্কফোর্সের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কার্যপরিধি বাড়াতে পারবে বিএসইসি।

টাস্কফোর্সকে তাদের সুপারিশ প্রণয়নের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। তবে যৌক্তিক সময়ে টাস্কফোর্স তাদের সুপারিশ বিএসইসিতে জমা দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছে বিএসইসি।

টাস্কফোর্সের গঠন:বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, পুঁজিবাজারকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, পুঁজিবাজারের অংশীজনদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংগঠন ডিবিএ, বিএমবিএ, এসিআরএবি, বিএপিএলসি), অর্থনীতিবিদ, পেশাদার (চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি প্রভৃতি), বিনিয়োগকারী ইত্যাদি ব্যক্তিবর্গের সুচিন্তিত মতামত ও সুপারিশের ভিত্তিতে বিএসইসি ‘পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স’ গঠন করেছে। এই টাস্কফোর্সের মাধ্যমে বাজারের প্রধান প্রধান দিকগুলো বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় সংস্কার পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ প্রণয়ন করা হবে। বর্তমান বাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং টেকসই পুঁজিবাজার গঠনের জন্য এ টাস্কফোর্স অপরিহার্য।

দক্ষ পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষক, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, নিরীক্ষক, প্রযুক্তিবিদ ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ সদস্যদের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। পরবর্তীতে কমিশন টাস্কফোর্সের আকার ও পরিধি চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন করতে পারবে। টাস্কফোর্সের অধীনে গঠিত ফোকাস গ্রুপে পুঁজিবাজারের বিশেষজ্ঞ এবং পরামর্শক, নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধি, বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের দক্ষ পেশাজীবী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, বিশ্লেষক এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।

টাস্কফোর্সের কার্যপরিধি:এই টাস্কফোর্সের মূল দায়িত্ব হবে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য নিম্নলিখিত কার্যক্রম পরিচালনা করা।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের আকার তথা ‘জিডিপি ও বাজার মূলধন’-এর অনুপাত কম হওয়ার প্রধান কারণগুলো চিহ্নিত করে উত্তরণের জন্য সরকারের আর্থিক খাতের নীতি প্রণয়নের প্রস্তাবনা।

দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে পুঁজিবাজার থেকে অর্থায়নের জন্য সরকারের আর্থিক নীতি প্রণয়ন ও নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কমিশনের উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য সুপারিশ প্রণয়ন করা।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পুঁজিবাজারের সুশাসন উন্নীত করার লক্ষ্যে পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো বিশ্লেষণ করা ও সমাধানের সুপারিশমালা প্রণয়ণ।

বিএসইসি’র প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা শক্তিশালীকরণ, অভ্যন্তরীণ সুশাসন, অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে প্রযুক্তি ও অটোমেশনের প্রয়োগ, তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অন্যান্য উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রশাসনিক কাঠামোর সুপারিশ, মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি, কমিশনের কর্মকর্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, শিক্ষা, সেমিনার, কর্মশালায় অংশগ্রহণসহ অভ্যন্তরীণ অন্যান্য বিষয়ে সুপারিশ প্রদান।

ডিএসই, সিএসই, সিডিবিএল, সিসিবিএলের তদারকি কার্যক্রম বিশ্বমানে উন্নীত করাসহ উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যুগোপযোগী করার সুপারিশ প্রণয়ন।

প্রাইভেট প্লেসমেন্ট/অফারের মাধ্যমে ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ ইস্যু সংক্রান্ত সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ইস্যু অব ক্যাপিটাল) রুলস, ২০০১ যুগোপযোগী করার সুপারিশ প্রণয়ন।

তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন, কর্পোরেট ডিজক্লোজার, নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের সঠিকতা নিশ্চিত করাসহ কর্পোরেট গভর্ন্যান্স, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং বাজারের গভীরতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়ন।

ডেট ও ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ ইস্যুর আবেদনের ক্ষেত্রে দাখিলকৃত তথ্য-উপাত্ত, দলিল-দস্তাবেজ, সম্পদ পুনঃমূল্যায়ন প্রতিবেদন, নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে প্রস্তুতকারী পক্ষসমূহ, যেমন: ইস্যুয়ার কোম্পানি, ইস্যু ম্যানেজার ও আন্ডার রাইটার (মার্চেন্ট ব্যাংকার), ডেল্যুয়ার এবং অডিটরসহ অন্যান্য পক্ষসমূহের দায়-দায়িত্ব ও সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন।

বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এতদসংশ্লিষ্ট বিধিমালা, যেমন: সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্চেন্ট ব্যাংকার ও পোর্টফোলিও ম্যানেজার) বিধিমালা ১৯৯৬, সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক- ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা ২০০০, সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা ২০০১সহ সংশ্লিষ্ট বিধিমালা যুগোপযোগী করার সুপারিশ প্রণয়ন।

ডেট ও ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ ইস্যু সংক্রান্ত বিধি-বিধান, যেমন: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলস ২০১৫, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (রাইট ইস্যু) রুলস ২০০৬, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ডেট সিকিউরিটিজ) রুলস ২০২১, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ইনভেস্টমেন্ট সুকুক) রুলস ২০১৯, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (সম্পদভিত্তিক সিকিউরিটি ইস্যু) বিধিমালা ২০০৪সহ সংশ্লিষ্ট বিধিমালা যুগোপযোগী করার সুপারিশ প্রণয়ন।

বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্টেকহোল্ডারদের সাথে নিয়মিত পরামর্শ ও সমন্বয়ের গাইডলাইন এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন।

বাজারে কারসাজি, সুবিধাভোগী ব্যবসায় লেনদেন ও অন্যান্য অনিয়মের বিচার ও জরিমানায় সমতা আনয়নের জন্য বিদ্যমান আইনের শাস্তির ধারার অধীনে একটি সুনির্দিষ্ট পেনাল কোড বা শান্তির বিধিমালা প্রণয়ন করা।

মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ যুগোপযোগী করাসহ বিদ্যমান ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও বিজনেস ইন্টেলিজেন্স মডিউল-সমৃদ্ধ বিশ্বমানের অনলাইন ও অফলাইন সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম বা বাজার তদারকি বাবস্থার কার্যকারিতা নিরুপণ ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ প্রণয়ন।

বর্তমান বাজার কাঠামোর মূল্যায়ন, বাজারের গভীরতা, তারল্য ও পণ্য বৈচিত্র্যকে বিবেচনাপূর্বক দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কিভাবে আরো আকৃষ্ট করা যায়, সেই কৌশল প্রণয়নে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান।

পুঁজিবাজারের কার্যক্রমে অটোমেশন বৃদ্ধির মাধ্যমে পুঁজিবাজারের সুশাসন এবং বিনিযোগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও উন্নয়ন এবং পুঁজিবাজার উপযোগী ফিনটেক টেকনোলজি প্রচলন এবং পুঁজিবাজারের প্রযুক্তিগত সংবেদনশীলতা বিবেচনায় নিয়ে সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করার জন্য সুপারিশ প্রণয়ন।

নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর (বিএসইসি, বাংলাদেশ ব্যাংক, আইডিআরএ, এমআরএ, এনবিআর, আরজেএসসি ইত্যাদি) সঙ্গে সমন্বয়ের উপায় নির্ধারণে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি বা নির্দেশিকা প্রণয়ন।

তালিকাভুক্ত কোম্পানির সাথে অতালিকাভুক্ত কোম্পানি বা তালিকাভুক্ত কোম্পানির মার্জার, অ্যামালগামেশন, একুইজেশনের মাধ্যমে কোনো শেয়ার ইস্যু সংক্রান্ত বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টে এতদসংক্রান্ত স্কিম অনুমোদনের পূর্বে বিএসইসি থেকে অনাপত্তিপত্র গ্রহণ বিষয়ে সুপারিশমালা প্রণয়ন।

এছাড়াও টাস্কফোর্সের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি কার্যপরিধিতে সংযোজন করা যাবে।

 

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৬:৪৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।