বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

২৬ বীমা কোম্পানির সাথে বৈঠকে বিনিয়োগ বাড়নোর আহ্বান বিএসইসি’র

স্থিতিশীল ও কারসাজিমুক্ত পুঁজিবাজারের নিশ্চয়তা চায় ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২২   |   প্রিন্ট   |   213 বার পঠিত

স্থিতিশীল ও কারসাজিমুক্ত পুঁজিবাজারের নিশ্চয়তা চায় ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো

নতুন করে বিনিয়োগের জন্য স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের নিশ্চয়তা চায় ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলো। অস্থির পুঁজিবাজারে নতুন করে বিনিয়োগ করে ঝুঁকি নিতে আগ্রহী নয় এসব ইন্সুরেন্স কোম্পানি। তারা বলছেন বিনিয়োগকারীদের আমানত অস্থির শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী নয়।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের তথ্য জানতে দেশের ২৬টি বিমা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বৈঠকে ডেকেছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে কমিশনের মাল্টিপারপাস হলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএসইসি কমিশনার শামসুদ্দীন আহমেদ বলেন যেসব প্রতিষ্ঠানকে এখানে ডাকা হয়েছে তাদেরকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে বেশ কিছু সুযোগ, সুবিধা ইতোমধ্যে দেওয়া হইছে। বেশ কিছু বিষয়ে তাদের ছাড় দেওয়া হইছে। যাতে তারা পুঁজিবাজার তালিকাভুক্ত হয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

 

এসময় বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন বিশ্বের সকল দেশের ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলো অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে। একই সাথে তারা পুঁজিবাজারও বড় ধরনের অবদান রেখে থাকে। আমরা এখানে যে ২৬ টি কোম্পানি কে ডেকেছি তারাও যাতে পুঁজিবাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এজন্য তাদেরকে বেশ কিছু সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

 

তিনি বলেন পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনোদকারীরা বড় ধরনের পালন করে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলো অন্যতম। আমাদের দেশেও ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলো বড় ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারে। ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলো যদি মূল ভিত্তি দেখে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে তবে অন্য যেকোনো বিনিয়েগের তুলনায় এখানে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব।

ইউনিয়ন ইন্সুরেন্স’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তালুকদার জাকারিয়া হোসেন বলেন পুঁজিবাজারে ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলোর ২০% বিনিয়োগের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে সেখানে আমরা বিনিয়োগ করতে চাই। তবে বিনিয়োগের অর্থ যে ফেরত পাব তার কোন নিশ্চয়তা নেই. এজন্য আমরা স্থিতিশীল পুঁজিবাজার প্রত্যাশা করছি।

পুঁজিবাজারে চলমান মন্দা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে বিনিয়োগ বাড়াতে বিমা কোম্পানিগুলোকে নিয়ে একই ছাদের নিচে বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ বৈঠকে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যানকে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তবে আইডিআর এর পক্ষ থেকে একজন নির্বাহী পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।

 

সম্প্রতি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৭টি এবং তালিকাভুক্ত নয় ১৯টি বিমা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে বৈঠকের বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর বিএসইসির জারি করা নির্দেশনা অনুসারে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে বৈঠক আয়োজন করা হয়েছে।

বৈঠকে যেসব বিমা কোম্পানির প্রধান বা প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন সেগুলো হলো- হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এলআইসি (বাংলাদেশ), মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স ও সিকদার ইন্স্যুরেন্স।

এর মধ্যে বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে- ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স।
তথ্য মতে, পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার কম থাকা এমন ২৬টি বিমা কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের ইকুইটির ২০ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগ করার শর্তে ছাড় প্রদান করে বিএসইসি। কিন্তু কোম্পানিগুলো ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি ও ইকুইটির ২০ শতাংশ অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ- এ দু’টির কোনোটিই এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করেনি। এ অবস্থায় এসব বিমা কোম্পানিকে তালিকাভুক্তি ও ইকুইটির ২০ শতাংশ অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য উৎসাহিত করতে বৈঠকের উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি।

এর আগে ২৬টি বিমা কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য ছাড় দিয়ে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল বিএসইসি। প্রজ্ঞাপনে, বিমা কোম্পানিগুলো ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে ন্যূনতম ১৫ কোটি টাকার তহবিল উত্তোলন করতে পারবে। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোকে তাদের ইকুইটির ন্যূনতম ২০ শতাংশ অর্থ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করতে হবে।
পরবর্তীতে চলতি বছরের গত ২৯ মার্চ এক চিঠিতে আইডিআরএকে এ বিষয়ে অনুরোধ জানায় বিএসইসি। চিঠিতে পুঁজিবাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়ানোর জন্য এরই মধ্যে বিমা কোম্পানিগুলোকে যে ছাড় প্রদান করা হয়েছে সেটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে আইডিআরএ’কে অনুরোধ জানানো হয়।

বিএসইসির মতে, বিমা কোম্পানিগুলোকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আসার আগে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে, যা বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়াতে অবদান রাখবে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হলে পুঁজিবাজারে শেয়ারের সরবরাহও বাড়বে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৬:৪৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২২

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।