নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২০ | প্রিন্ট | 594 বার পঠিত
নভেল করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলার। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের করোনা পরিস্থিতি এবং সহযোগিতা নিয়ে ফোনে আলাপচারিতায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত এ প্রতিশ্রুতি দেন।এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতৃক ঘোষিত সময়োপযোগী আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন। যুক্তরাষ্ট্র এই সংকট মোকাবেলায় সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকবেন বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।আলাপকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইউএস এক্সিম ব্যাংকের নতুন পণ্য সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি জানান, এক বছরের জন্য প্রদত্ত এ সুবিধার আওতায় রয়েছে ১. সরাসরি ঋণ বা ঋণ গ্যারান্টি ২. সাপ্লাই চেইন অর্থায়ন গ্যারান্টি ৩. কার্যনির্বাহী মূলধন গ্যারান্টি এবং ৪. প্রি ডেলিভারি/প্রি এক্সপোর্ট অর্থায়ন সুবিধা।এর আগে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজের উপর কোভিড-১৯ এর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা জোরদার, স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ করে স্বাস্থ্য পরিষেবা, সক্ষমতা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সমর্থন বাড়ানোর অনুরোধ করেন। পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা নেট প্রোগ্রাম প্রশস্ত করণে সমর্থন দেওয়া, উন্নয়নের উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে সক্ষম কৃষি যান্ত্রিকীকরণের অর্থায়নে সহায়তা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, দুর্যোগ ও মানবিক সহায়তা কর্মসূচির জন্য স্পল্প সুদে ঋণ সহায়তারও অনুরোধ করেন। এসময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত সাস্থ্য ও কৃষিখাতে সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।আলোচনার শুরুতে অর্থমন্ত্রী মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাস আঘাত হেনেছে। করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী থমকে দাঁড়িয়েছে অর্থনীতি। যা বিশ্বের সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন। এ মহামারির কারণে সব থেকে বড় অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে এশিয়ার উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর। এ মুহূর্ত সবচেয়ে জরুরি মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত স্বল্প আয়ের মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বৃহত্তম রফতানি বাজার। ২০১৩ সালে আমাদের জিএসপি সুবিধা স্থগিত হয়েছে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা কাঠামো চুক্তি (টিকফা) স্বাক্ষরিত হয়, যদিও অগ্রাধিকারযোগ্য বাজারে প্রবেশের সমস্যা এখনও মীমাংসিত হয়নি।অর্থমন্ত্রী মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে উল্লেখ করেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে সৃষ্ট বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে উঠতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অগ্রাধিকারযোগ্য বাজারে প্রবেশাধিকার এবং বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।এছাড়া অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তিনি ধন্যবাদ জানান।এছাড়া প্রকল্প সহায়তা, খাদ্য সহায়তা এবং পণ্য সহায়তা হিসেবে এযাবৎ ৪.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তার জন্য এবং কোভিড -১৯ প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ামূলক কর্মসূচিতে ৩.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরুরি সহায়তার জন্যও তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে জরুরি সেবা কার্যক্রম ছাড়া সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এখন দেশের সিংহভাগ শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ছোট-খাটো কারখানা বন্ধ। গণপরিবহন ও বিমান চলাচল স্থগিত। করোনার প্রভাবে আমাদের আমদানি-রপ্তানির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে এবং স্থবিরতা নেমে এসেছে রেমিটেন্স প্রবাহে। যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষ ও অর্থনীতির জন্য ১১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যা জিডিপি’র ৩.৫ শতাংশ। এই প্যাকেজের অর্থ ব্যয়ে জনসাধারণের ব্যয় বৃদ্ধি, সামাজিক সুরক্ষা জালকে প্রশস্ত করা এবং আর্থিক সরবরাহ বাড়ানোর ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, পরিষেবা খাত এবং কুটির শিল্পগুলিকে সুরক্ষার জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে কার্যনির্বাহী মূলধনের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এসময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলার বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।
Posted ১০:১৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan