নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ০৭ মে ২০২০ | প্রিন্ট | 436 বার পঠিত
করোনাভাইরাসের কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে। সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্প-কারখানা এবং আমদানি-রফ্তানি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উপরও। এমন পরিস্থিতি আর কিছুদিন চললে লোকসানে পড়বে কোম্পানিগুলো এমনটাই আশংকা করছেন উদ্যোক্তারা। এর ফলে বছর শেষে এবার শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ্ও দিতে পারবেন না কোম্পানিগুলো।
তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজও (বিএপিএলসি) এমন আশংকা করছে। এমন অবস্থায় কোনো কোম্পানি এবার লভ্যাংশ না দিতে পারলে সে কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন না করার প্রস্তাব দিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার (৫ মে) পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ক্যাটাগরি অপরিবর্তিত রাখাসহ ৪টি প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রকোপ এবং সাধারণ ছুটির কারণে দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোরও উৎপাদন এবং বাণিজ্য বন্ধ আছে। এ কারণে এসব কোম্পানির আয় বলতে কিচ্ছু নেই। কিন্তু কর্মকর্তা এবং শ্রমিক-কর্মচারিদের বেতন , আফিস ভাড়াসহ অন্যান্য সব ব্যয় ঠিক রয়ে গেছে। এ কারণে চলতি বছরে অনেক কোম্পানির পক্ষে মুনাফা করা সম্ভব হবে না। কোনো কোনো কোম্পানিকে দিতে হবে ব্যাপক লোকসান। ফলে বছর শেষে অনেক কোম্পানির পক্ষে লভ্যাংশ দেওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে।
বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কোনো কোম্পানি লভ্যাংশ না দিতে পারলেও বর্তমান ক্যাটাগরি অপরিবর্তিত রাখা দরকার বলে মনে করে বিএপিএলসি।
উল্লেখ, পুঁজিবাজারে বর্তমানে এ, বি, জি, এন ও জেড ক্যাটাগরি নামে পাঁচটি ক্যাটাগরি আছে। কোনো কোম্পানি ১০ শতাংশ বা তার বেশি লভ্যাংশ দিলে এ ক্যাটাগরি, ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দিলে বি ক্যাটা করি এবং লভ্যাংশ না দিলে অথবা এজিএম অনুষ্ঠানে ব্যর্থ হলে জেড ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জি ক্যাটাগরি হচ্ছে গ্রিন ফিল্ড কোম্পানির জন্য। আর এন ক্যাটাগরি পুঁজিবাজারে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য। তালিকাভুক্ত হওয়ার পরবর্তী এজিএমের পর ঘোষিত লভ্যাংশের ভিত্তিতে সেটিকে এ, বি অথবা জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়।
এ, বি ও এন ক্যাটারির শেয়ারের নিষ্পত্তি হয় টি+২ অর্থাৎ লেনদেনের তৃতীয় দিবসে। আর জেড ক্যাটাগরির শেয়ারের নিষ্পত্তি হয় টি+৯ অর্থাৎ লেনদেনের দশম দিনে।
বিধি অনুসারে, এ ও বি ক্যাটাগরির কোনো কোম্পানি লভ্যাংশ নি দিতে পারলে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হবে। সে ক্ষেত্রে এসব কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে বিনিয়োগকারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে। কারণ জেড ক্যাটাগরির শেয়ারে লেনদেন নিষ্পত্তির সময় লাগে বেশি, এই ক্যাটারির শেয়ার কেনা-বেচায় অন্য গ্রুপের শেয়ারের সঙ্গে সমন্বয় (ঘবঃঃরহম) করা যায় না। এ ছাড়া জেড ক্যাটাগরির শেয়ারে মার্জিন ঋণ সুবিধাও পাওয়া যায় না।
তাই কোনো কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণায় ব্যর্থতার কারণে সেটি জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হলে বিনিয়োগকারীরা সমস্যায় পড়বেন এমন যুক্তিতে ক্যাটাগরি অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
চিঠিতে ক্যাটাগরি অপরিবর্তিত রাখাসহ অন্যান্য প্রস্তাবের স্বপক্ষে যুক্তি হিসেবে বলা হয়, পুঁজিবাজারের লাখ লাখ বিনিয়োগকারী জড়িত, যাদের বড় অংশই ক্ষুদ্র পুঁজির বিনিয়োগকারী। তাদের স্বার্থে ওই প্রস্তাবগুলো করা হয়েছে।
বিএপিএলসির প্রস্তাবে পাইপলাইনে থাকা আইপিও এবং রাইট শেয়ারর ইস্যুর প্রস্তাবে নমনীয়তা দেখানো এবং দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সহজ সমাধানের কথা বলা হয়েছে।
এছাড়া আরও দুটি বিষয়ে বিএসইসির সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্য আছে কোনো কোম্পানি ২০২০ সাল পর্যন্ত ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে সেটিকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত না করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করা। সরকার করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলায় যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, সেখান থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে বিএসইসির উদ্যোগ নেওয়া।
Posted ১:০৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ মে ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan