বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ২৭ জুন ২০২০ | প্রিন্ট | 274 বার পঠিত
স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আগে থেকেই সক্রিয় ছিল জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেছেন, নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের আগে থেকেই এ খাতের দুর্নীতি-অনিয়মের সংশ্লিষ্টতায় ১১টি মামলায় ১৪ ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। এ তালিকা আরো বড় হবে।
শুক্রবার স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিসহ অন্যান্য দুর্নীতি-অনিয়ম সংক্রান্ত দুদকের গোয়েন্দা বিভাগের একটি বিশেষ প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি এ কথা জানান।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ঢাকা, সাতক্ষীরা, রংপুর, চট্টগ্রাম, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাসামগ্রী কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগে কমিশন ১১টি মামলা করেছে। এ ১১টি মামলায় সম্পৃক্ত ১৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্তির বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়। সংশ্লিষ্ট এসব অনুসন্ধান এখনো শেষ হয়নি। হয়তো আরো মামলা হবে, আরো প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্তির সুপারিশ করা হবে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগ থেকেই কমিশন সক্রিয় ছিল। এ খাতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কমিশন শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি অনুসরণ করছে।
কভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসাসামগ্রী কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে তা অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এ অনুসন্ধান হতে হবে নির্মোহ ও পূর্ণাঙ্গ। মানুষকে সবকিছু জানাতে হবে। দুদক কোনো কিছুই গোপন করে না, করবেও না।
দুদকের গোয়েন্দা বিভাগের বিশেষ প্রতিবেদনে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচির দুর্নীতি, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি, সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে খাদ্যসামগ্রী আত্মসাৎ ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি উঠে এসেছে বলে দুদকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
গোয়েন্দা অনুবিভাগের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর স্বাক্ষরে প্রণীত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, কমিশনের অনুমোদন পেয়ে গত তিন মাসে সরকারের ত্রাণ দুর্নীতি, সরকারি খাদ্যগুদামের খাদ্যসামগ্রী আত্মসাৎ, অবৈধভাবে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২৩টি মামলা করেছে দুদক। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি কেনাকাটার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দ্রুততার সঙ্গে অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ত্রাণ আত্মসাত্কারীদের আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম। তার পরও কতিপয় লোভী মানুষকে প্রতিরোধ করা যায়নি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অনেকে গ্রেফতার হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, এদেরকে আইনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
ত্রাণ আত্মসাতের মামলাগুলোর আর্থিক সংশ্লিষ্টতা কম হলেও মামলাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে নিখুঁতভাবে তদন্ত করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশেই দুদককে আইনি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। নভেল করোনাভাইরাস দুদকের দুজন কর্মকর্তার মূল্যবান জীবন কেড়ে নিয়েছে। এখনো ১৫ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকের পরিবারের সদস্যরাও করোনায় আক্রান্ত।
Posted ২:২৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৭ জুন ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed