শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

সিএসআর খাতে দেশের ব্যাংকগুলোর ব্যয় ৫১৭ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০   |   প্রিন্ট   |   317 বার পঠিত

সিএসআর খাতে দেশের ব্যাংকগুলোর ব্যয় ৫১৭ কোটি টাকা

দেশের ৫৯টি ব্যাংক করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) খাতে চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন’২০) ৫১৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এর মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো ব্যয় করেছে ৪৪৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগের সিএসআর ব্যয়সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে সিএসআর খাতে ব্যয়ে সবার শীর্ষে আছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। দেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় এ ব্যাংকটি সিএসআর খাতে ব্যয় করেছে ৫১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এরপরে রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, এক্সিম ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড। এ পাঁচটি ব্যাংক সিএসআর খাতে ব্যয় করেছে ১৯১ কোটি টাকা। এর মধ্য ডাচ-বাংলা ব্যাংক ৪৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ৪৩ কোটি ২১ লাখ টাকা, এক্সিম ব্যাংক ২৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক ২১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

এছাড়া সিএসআর ব্যয়ের দিক থেকে শীর্ষ ১০-এ রয়েছে প্রাইম ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও যমুনা ব্যাংক লিমিটেড। এর মধ্য প্রাইম ব্যাংক ২১ কোটি ৫১ লাখ টাকা, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ২০ কোটি ২৩ লাখ টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ১৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং যমুনা ব্যাংক ১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। দেশের তফসিলভুক্ত ৫৯টি ব্যাংকের সিএসআরে মোট ব্যয়ের ২৯০ কোটি টাকা বা ৫৬ শতাংশই শীর্ষ এ ১০টি ব্যাংক ব্যয় করেছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিপুল এ ব্যয়ের ৯৬.২১ শতাংশই দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর। সিএসআর খাতে ব্যয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণ ১ শতাংশেরও অনেক কম। আর বিদেশী ব্যাংকগুলোর ব্যয়ও নামমাত্র। সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশী আটটি ব্যাংক চলতি বছর সিএসআর খাতে কোনো অর্থই ব্যয় করেনি।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ২৫ শতাংশের বেশি এখনো রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণে। যদিও সিএসআর খাতে এ ব্যাংকগুলোর ব্যয় প্রায় শূন্য। রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক সিএসআর খাতে চলতি বছরের প্রথমার্ধে ব্যয় করেছে মাত্র ২ কোটি ৩ লাখ টাকা, যা তফসিলি ব্যাংকগুলোর মোট সিএসআর ব্যয়ের শূন্য দশমিক ৩৯ শতাংশ। করোনা মহামারীর মতো দুর্যোগে দেশের সবচেয়ে বড় সোনালী ব্যাংক সিএসআর খাতে ব্যয় করেছে মাত্র ৫১ লাখ টাকা। চলতি বছরের প্রথমার্ধে জনতা ব্যাংক ৮৮ লাখ ও রূপালী ব্যাংক ৫৩ লাখ টাকা সিএসআর ব্যয় করেছে। এ সময়ে বেসিক ব্যাংকের ব্যয় ৬ লাখ টাকা। আর অগ্রণী ব্যাংক ছয় মাসে সিএসআর খাতে মাত্র ৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পেরেছে।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) চলতি বছরে সিএসআর খাতে কোনো অর্থই ব্যয় করতে পারেনি। বিডিবিএলের মতোই চলতি বছরের প্রথমার্ধে সিএসআর খাতে এক পয়সাও ব্যয় করেনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। চলতি বছরের প্রথমার্ধে সিএসআর খাতে এক পয়সাও ব্যয় করতে না পারা অন্য ব্যাংকগুলো হলো আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান।

সিএসআর হলো এক ধরনের ব্যবসায়িক শিষ্টাচার বা রীতি, যা সমাজের প্রতি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনকে নিয়মের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত কার্যক্রমের ফলে উদ্ভূত বিভিন্ন ধরনের পরিবেশগত বিরূপ প্রভাব দূর করা ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে বিদ্যমান ক্ষোভ, অসমতা ও দারিদ্র্য কমানোর উদ্দেশ্যেই সিএসআরের প্রবর্তন। বর্তমানে সারা বিশ্বেই সিএসআর খাতে ব্যয়কে করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অন্যতম দায়িত্ব হিসেবে দেখা হয়। ব্যাংকগুলোর কর-পরবর্তী নিট মুনাফা থেকে সিএসআর খাতে ব্যয়ের নির্দেশনা রয়েছে। তবে সিএসআর খাতে ব্যয় করতেই হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো প্রজ্ঞাপন জারি করে সিএসআর খাতে ব্যয় করার জন্য ব্যাংকগুলোকে দিকনির্দেশনা দেয়। তারপর একাধিকবার প্রজ্ঞাপন জারি করে সিএসআর ব্যয়ের খাত ও বিধিমালা দেয়া হয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ, আয় উৎসারী কার্যক্রম, অবকাঠামো, সংস্কৃতি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে সিএসআরের অর্থ ব্যয় করতে নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সম্প্রতি করোনা মহামারীতে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভঙ্গুর পরিস্থিতি উন্মোচিত হলে স্বাস্থ্য খাতে সিএসআর ব্যয় বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর মোট সিএসআর ব্যয়ের ৬০ শতাংশই স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের নির্দেশনা রয়েছে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৩:৫২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।