বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 664 বার পঠিত
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষিত মুদ্রানীতি প্রণয়নে অংশগ্রহণ করতে চায় পুঁজিবাজারের স্টেকহোল্ডাররা। গভর্নরের কাছে স্টেকহোল্ডারদের পক্ষে এ দাবি তুলে ধরেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন।
‘মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট : ইমপ্লিকেশন অন প্রাইভেট সেক্টর’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। ডিসিসিআই সভাপতি ওসমান তাসীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গভর্নর ফজলে কবির প্রধান অতিথি ছিলেন।
রোববার ডিএসই থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, মুদ্রানীতি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শেয়ারবাজারে বিভিন্ন গুজব ও আতঙ্ক তৈরি হয়। কিন্তু মুদ্রানীতি প্রণয়নে যদি আমাদের অংশগ্রহণ থাকে, তবে সেই সমস্যা কেটে যাবে। এছাড়া মুদ্রানীতির কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটার সুযোগ থাকবে না।
মুদ্রানীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামত নিতে গভর্নরের কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, মুদ্রানীতির সঙ্গে শেয়ারবাজারের যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে, সেটি সবাই মূলত বুঝতে পেরেছে ২০১০ সালের পরে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য মুদ্রানীতি প্রণয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক কখনোই শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের গুরুত্ব দেয়নি।
‘এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআর), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট মতামত তুলে ধরা যেতে পারে’ বলেও অভিমত দেন ডিএসইর পরিচালক।
মিনহাজ মান্নান ইমনের দাবির প্রেক্ষিতে গভর্নর ফজলে কবির বলেন, দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি শেয়ারবাজার। এ বাজারের সঙ্গে মুদ্রানীতি সরাসরি সম্পৃক্ত। তবে মুদ্রানীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেয়া হয় না। যাতে মুদ্রানীতিতে শেয়ারবাজারের স্বার্থ অবহেলিত থাকে। এছাড়া, মুদ্রানীতি ঘোষণার আগে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নানা গুজব তৈরি হয়। যা বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে এ সমস্যা উত্তরণে মুদ্রানীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেয়া হবে।
সভায় ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি মো. শাকিল রিজভী বলেন, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের ক্ষেত্রে ঋণের পরিবর্তে শেয়ারবাজারকে উৎসাহিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিএসইসির মতো বাংলাদেশ ব্যাংককে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। তাহলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমবে। এতে দেশের অর্থনীতি শক্ত হবে। যেটা যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে করা হয়। অন্যথায় যুক্তরাষ্ট্রে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাংলাদেশের চেয়ে বেশি হতে পারতো।
ব্যাংকের অতিরঞ্জিত মুনাফা দেখানোর প্রবণতা বন্ধের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের মূলধনের ৪০ শতাংশ ব্যাংকের দখলে। যাতে ব্যাংকের শেয়ার দর ওঠা-নামায় শেয়ারবাজারে বড় প্রভাব পড়ে। এরমধ্যে কিছু ব্যাংক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য অনিরীক্ষিত প্রান্তিক হিসাবগুলোতে অতিরঞ্জিত মুনাফা দেখায়। বিশেষ করে প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে সম্ভাব্য ঝুঁকির জন্য সঠিক সঞ্চিতি (প্রভিশনিং) গঠন না করে এমনটি করা হয়।
‘তবে বছরের চূড়ান্ত ও নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাবে ব্যাংকের প্রকৃত চিত্র বেরিয়ে আসে। তখন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শেয়ারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এতে পুরো শেয়ারবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত’- বলেন শালিক রিজভী।
তিনি বলেন, দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতিটি লেনদেনের জন্য নিরীক্ষা করাতে হয়। এ ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হয়রানি ও অর্থ ব্যয় হয়। তবে ভারতে এ জাতীয় সমস্যা নেই। তাই দেশের শেয়ারবাজারের স্বার্থে এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা উচিত। এছাড়া শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিতে বন্ড মার্কেট চালু করা উচিত।
Posted ১২:৫১ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed