মঙ্গলবার ১৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ধারাবাহিক প্রতিবেদন-১ : পূরবী ইন্স্যুরেন্সে অনিয়ম, নিশ্চুপ আইডিআরএ

এক সুকুমারই ঘটাচ্ছে নানা অঘটন

ব্যাংক বীমা অর্থনীতি প্রতিবেদক :   |   মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট ২০২০   |   প্রিন্ট   |   598 বার পঠিত

এক সুকুমারই ঘটাচ্ছে নানা অঘটন

একের পর এক অনিয়ম হওয়ার পরও কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেয়ায় বেড়েই চলেছে পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের সিইও সুকুমার চন্দ্র রায়ের অপকর্ম। একদিকে দক্ষতার অভাব, অন্যদিকে নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের ফলে একসময়ের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি প্রায় ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। এতে যেমনিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিনিয়োগকারীরা, তেমনিভাবে ভোগান্তিতে পড়েছে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাও। এরপরও নির্বিঘ্নে চলছে অনিয়মের মহোৎসব। যার নেপথ্যে রয়েছে সিইওর ভূমিকা। এমনটাই জানা গেছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে।

সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে পূরবী জেনারেলের পরিচালকদের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য পরিচালকদের সাথে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। এরপরই এ বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে ব্যাংক বীমা অর্থনীতি।

ন্যূনতম শেয়ারধারণে ব্যর্থতা : অনুসন্ধানে দেখা যায়, পূরবী জেনারেলের মোট ৬ জন পরিচালক ন্যূনতম শেয়ারধারণের শর্ত পূরণ করেনি, অথচ পরিচালক হিসেবে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আইন BSEC/CMRRCD/2009-193/217/Admin/90-এর ২১ মে ২০১৯ নোটিফিকেশনের ৪নং শর্তের লঙ্ঘন। পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স মোট শেয়ার অনুপাতে ২ শতাংশ শেয়ার হতে হলে কমপক্ষে ১১ লাখ শেয়ার প্রয়োজন। অথচ বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে এমনও পরিচালক রয়েছেন যাদের শেয়ার সংখ্যা ৪ হাজার, ৬ হাজার, ৮ হাজার বা ১৩ হাজার। প্রতিষ্ঠানের মুনাফা হলেও তারা এ থেকে তেমন লাভবান হয় না। কেননা তাদের শেয়ার কম থাকায় মুনাফাও কম পায়। প্রতিষ্ঠানের ২০১৯ সালের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণায় তাদের তেমন লাভ নেই। হয়তো এ ১৩ হাজার শেয়ারের বিপরীতে ১০ শতাংশ হারে সে মুনাফা পাবে বছরে ১৩ হাজার টাকা। এরপর এখান থেকে আবার ভ্যাট-ট্যাক্স কর্তন করা হবে। ফলে তার টাকার পরিমাণ হবে খুবই কম। এক্ষেত্রে দেখা যায়, ওইসব পরিচালক পদ বাগিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে লাভবান হতে চায়, যদিও এতে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়। এটাই তখন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এই অনিয়ম যেন না হয়, সেজন্যই বিএসইসির আইন। তবে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানের সিইওর। ন্যূনতম শেয়ার না থাকা পরিচালকরা হলেন- মোনা গার্মেন্টসের প্রতিনিধি ও প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম ফাতেমা তাহেরা খানম (১.০৮ শতাংশ বা ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৬৫০ শেয়ার), মোহাম্মদ ইকবাল (১.৪১ শতাংশ বা ৭ লাখ ৮২ হাজার ১৫৩ শেয়ার), এসএম ইমতিয়াজ খান (০.০২ শতাংশ বা ৯ হাজার ১৯৯ শেয়ার), ড. মোহাম্মদ আনিসুল হক (০.০২ শতাংশ বা ৮ হাজার ৩৪১ শেয়ার), আমিনুর রহমান খান (০.০২ শতাংশ বা ১৩ হাজার ৭০২ শেয়ার) এবং জেসমিনা আরা (১.০৬ শতাংশ বা ৫ লাখ ৮৭ হাজার ২৩ শেয়ার)। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেয়া বা উক্ত পদে অন্য কোনো পরিচালক নিয়োগ না দেয়াটাও উল্লিখিত নোটিফিকেশনের ৫নং শর্তের লঙ্ঘন। এ বিষয়ে দায় এড়াতে পারেন না সিইও সুকুমার চন্দ্র রায়। তবে বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান মুজিবুল ইসলাম পান্নার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্ত পরিচালকরা ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন।

পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পরিচালক মোহাম্মদ ইকবালের হাইকোর্টে রিট থাকায় তিনি ছাড়া বাকি পাঁচ পরিচালক পদত্যাগ করেছেন। এরপর নতুন করে দুই পরিচালক বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এরা হলেন- প্রাতিষ্ঠানিক পরিচালক সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং উদ্যোক্তা পরিচালক নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি। এক্ষেত্রে সন্ধানী লাইফের প্রতিনিধি হয়ে গোলাম ফাতেমা তাহেরা খানম ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে বহাল রয়েছেন।

Facebook Comments Box
বিষয় :
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:২৮ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।