মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছয় দফা দাবি উত্থাপনের পর এদেশের মানুষ জেগে উঠেছিল : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ০৭ জুন ২০২০   |   প্রিন্ট   |   264 বার পঠিত

ছয় দফা দাবি উত্থাপনের পর এদেশের মানুষ জেগে উঠেছিল : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা দাবি উত্থাপনের পর এদেশের মানুষ জেগে উঠেছিল। রবিবার (৭ জুন) ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত অনলাইন আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছিলেন। এটি খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়েছিল। এদেশের জনগণ প্রতিটা দাবিকে নিজের দাবি মনে করে গ্রহণ করেছিল। তার কারণ, পাকিস্তান নামের দেশ হওয়ার পর বাঙালিদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার যে চেষ্টা, আমরা বাঙালিরা দেখেছি।’
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধ হয়। পূর্ববঙ্গ অর্থাৎ তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান সম্পূর্ণ অরক্ষিত। এই যুদ্ধের পর একটি গোলটেবিল বৈঠক ডাকা হয় লাহড়ে। সর্বদলীয় বিরোধী দল এই গোলটেবিল বৈঠক ডাকে। সেই গোলটেবিল বৈঠকে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। যে দাবির মূল বক্তব্য ছিল যে, প্রদেশ হিসেবে এই দেশের, আমাদের দেশের মানুষকে সুরক্ষিত করা। অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বি করা। এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করা এবং প্রতিরক্ষার দিক থেকে এই অঞ্চলকে সুরক্ষিত করা। সেই সঙ্গে বাঙালির যে অস্তিত্বের দাবি, সেই দাবিটা তুলে ধরা।

এর আগে পাকিস্তান-ভারত তাসখন্দ চুক্তিতেও পূর্ববঙ্গ সম্পূর্ণ উপেক্ষিত ছিল উল্লেখ করে বঙ্গবন্দু কন্যা বলেন, ‘তারপর ছয় দফা যখন দেওয়া হলো, তখন এদেশের মানুষ জেগে উঠলো। এদেশের মানুষ এত দ্রুত ছয় দফাকে শুধু সমর্থনই করেনি, তারা স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে নিজের দাবি হিসেবে গ্রহণ করলো। বাংলার মানুষের মুক্তির দাবি হিসেবে এই ছয় দফা দাবি উদ্ভাসিত হলো।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা যে পাকিস্তানের প্রতিটি প্রদেশের স্বায়ত্তশাসনের দাবি ছিল— বঙ্গবন্ধু সে বিষয়টি স্পষ্ট করে তুলে ধরেন।’

হাসিনা বলেন, ‘ছয় দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন দমনে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার অগণিত নেতা-কর্মী, সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করেছে, অত্যাচার করেছে। কারাগারের রোজনামচা বইয়ে এর কিছু উল্লেখ আছে।’ দমন-নিপীড়নে ছয় দফা দাবি আরও জোরালো হওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই আন্দোলন সংগ্রামের পথ ধরে যখন বাংলাদেশের মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে, তখন আওয়ামী লীগে যিনিই সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাচ্ছেন, তাকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। এভাবে অত্যাচার নির্যাতন চলেছে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ আরও বেশি সচেতন হচ্ছে, আরও বেশি সুসংগঠিত হচ্ছে, ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে— অবশ্যই কিছু দালাল ছাড়া।’ সবসময় কিছু দালাল থাকে— এটাই সমস্যা বলে মন্তব্য করেন তিনি। এই দাবি যখন সেই সভায় বঙ্গবন্ধু তুলে ধরতে যান, তখনও অনেকেই বাধা দিয়েছিল বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৬৮ সালে ১৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হলো এবং তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দেওয়া হলো— আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে এই মামলা পরিচিতি পেয়েছিল। আসলে মামলাটা ছিল রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব। সেখানে বঙ্গবন্ধুকে এক নম্বর আসামি করে এবং সামরিক-বেসামরিক ৩৪ জনকে মামলার আসামি করা হয়।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘স্বাধীনতা অর্জনের পথে ছয় দফা এবং ৭ জুন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, ছয় দফার ভিত্তিতে ৭০ এর নির্বাচন হয়, যে নির্বাচনে সমগ্র পাকিস্তানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়।’

ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ১৯৪৮ সালে তিনি (বঙ্গবন্ধু) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, তখনই তিনি উদ্যোগ নিলেন এবং বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন তিনি শুরু করলেন। সেই আন্দোলনের পথ ধরে বার বার দেখেছি, আমাদের সাংস্কৃতিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদে তিনি (বঙ্গবন্ধু) সব সময় সংগ্রাম করেছেন।’

অনলাইনে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১১:৩২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৭ জুন ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।