সামসুদ্দীন চৌধুরী | সোমবার, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 1260 বার পঠিত
গ্রোস প্রিমিয়াম, নেট প্রিমিয়াম, দাবী পরিশোধ, কর পরবর্তী মুনাফা, অবলিখন মুনাফা, মোট সম্পদ, মোট দায়, প্রাতিষ্ঠানিক আয়, পরিশোধিত মূলধন সমাপ্ত বছরে ব্যপক সফলতা অর্জন করেছে এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করছেন বিশিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা সংসদ সদস্য ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এফসিএ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ইমাম শাহিন দায়িত্ব পালন করছেন। যিনি অতি সম্প্রতি বীমা কোম্পানির মূখ্য নির্বাহীদের সংগঠন বিআইএফ‘র সেক্রেটারী জেনারেল নির্বাচিত হয়েছেন।
আলোচ্য অর্থবছরে এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড মাত্র ২২ টি শাখা ও ২৬১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে টানা তিন বছর ধরে ব্যবসায়িক সফলতা ধরে রেখেছে। কোম্পানীটি ২০১৭ সালে পরিশোধিত মূলধন ছিল ৪৭ কোটি ৭ লাখ টাকা। এবং গত তিন বছর ধরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ ১০ শত্যাংশ লভ্যাংশ অনুমোদন করেছে।
২০১৭ সালে কোম্পানীটি ৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা অবলিখন মুনাফা আয় করেছে। এফডিআর এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা যা এর আগের অর্থবছরে ছিল ৬২ কোটি ২২ লাখ টাকা । মোট সম্পদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৭ সালে মোট সম্পদ হয়েছে ১৫৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা যা এর আগের অর্থবছরে ছিল ১৪৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। গত বছর থেকে আলোচ্য বছরে এই খাতে প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ৩.৯৩ শতাংশ। এছাড়া স্থায়ী সম্পদ ২০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ২২ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় দাড়িয়েছে।
কোম্পানীটির শেয়ারহোল্ডার ইকুইটি ৮৪ কোটি ০৭ লাখ টাকা থেকে ৮৭ কোটি ১৮ লাখ টাকায় দাড়িয়েছে। আলোচ্যবছরে এই খাতে কোম্পানীটির প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৩.৭০ শতাংশ। কোম্পানির মোট প্রিমিয়ামও ২০১৬ সালে যা ছিল ৪৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, ২০১৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৮০ লাখ টাকায়। যার প্রবৃদ্ধির হার ৬.৩৪ শতাংশ। নেট প্রিমিয়াম ৩১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা থেকে ২০১৭ অর্থবছরে দাড়িয়েছে ৩৪ কোটি টাকা। যার প্রবৃদ্ধির হার ৬.৩৮ শতাংশ।
আলোচ্য বছরে এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড সরকারকে রাজস্ব দিয়েছে ১৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ২০১৭ সালে কোম্পানীটি ১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা দাবী পরিশোধ করেছে। যা ২০১৬ অর্থবছর থেকে ২০.২৯ শতাংশ বেশি।
এছাড়াও কোম্পানীটি আলোচ্য বছরে ফায়ার ইন্স্যুরেন্স থেকে আয় করেছে ১২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, যা পূর্বের বছরে ছিল ১১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। মেরিন কার্গো ও হাল ইন্স্যুরেন্স থেকে আয় করেছে ১২ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এছাড়াও মোটর বীমা করেছে ৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আয় করেছে কোম্পানীটি। এম আই এস সি বীমা থেকে ৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যায় করেছে। এছাড়া এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড করপূর্ববতী ও কর পরবর্তী মুনাফা করেছে যথাক্রমে ১১ কোট ৭৪ লাখ টাকা ও ৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮.৮৩ শত্যাংশ ও ৮.৭৪ শতাংশ।
৪৫৮৮ জন শেয়ারহোল্ডার ও ১৪ জন পরিচালক দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড । কোম্পানীটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ক্রেডিট রেটিং এএ- রয়েছে। এই বীমা কোম্পানিটি তাদের ফিনান্সিয়াল ক্যাপাসিটি অনুসারে, তাদের গ্রোথ অনুসারে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ দেখছে।
এশিয়া ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) ইমাম শাহিন গত ১৭ বছর ধরে বীমা সেক্টরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ব্যাংক বীমা অর্থনীতিকে বলেন, দেশে বীমা খাত এখন পর্যন্ত মোটামুটি ভালোই উন্নতি হয়েছে। এই খাতে বিশাল একটি কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে এবং অনেক শিক্ষিত জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থান হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের নন লাইফ ইন্স্যুরেন্স-এর ক্ষেত্রে বীমা বাজারের পরিধির চেয়ে কোম্পানির সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে বীমার ব্যবসা সংগ্রহের জন্য বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে অনেকটা অসুস্থ ও অশুভ প্রতিযোগিতা বিদ্যমান। তবে আমি বিশ্বস করি খুব অল্পসময় পরে বীমা শিল্প অন্যান্য যে কোনো সেক্টরের চেয়ে আরো আশাবাদী সেক্টর হবে। অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। একই সঙ্গে অনেক মেধাবী ও শিক্ষিত ছেলেরা এই খাতে আকৃষ্ট হবে।
বীমা ব্যবসায় এশিয়ান ইন্স্যুরেন্সের অবস্থান মূল্যায়ন করে ইমাম শাহিন আরো বলেন, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স ২০০০ সালে যাত্রা শুরু করে। প্রায় ১৮ বছর হলো কোম্পানির পথচলা। ১৮ বছরের তুলনায় এই কোম্পানির যে অগ্রগতি সেটি রিমার্কেবল। কারণ, যদি বাংলাদেশের ৪৫টি নন লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বার্ষিক রিপোর্ট বিবেচনায় আনা হয়, তাহলে সহজেই এর মধ্যে এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে ৭-৮ এর মধ্যে ফেলতে হবে। টপ ৮টি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মধ্যে এশিয়ার অবস্থান থাকবে। ইন রেসপেক্ট অব ফিনান্সিয়াল ক্যাপাসিটি, অ্যাসেটস, লায়বিলিটি, রিজার্ভ, এফডিআর এবং বাজারে আমাদের যে সুনাম সবকিছু মিলিয়ে এশিয়াকে টপ ৮ এর মধ্যে বিবেচনা করতে পারবেন। গত বছর আমাদের ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে, এফডিআরের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্পদের পরিমানও বেড়েছে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
এশিয়া ইন্সুরেন্স কোম্পানির যে বোর্ড অব ডিরেক্টর্স রয়েছে সেটিও ইউনিক। বাংলাদেশের ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বোর্ড অব ডিরেক্টরদের যে প্রোফাইল রয়েছে সেগুলো বিচেনায় আনলে এশিয়ার বোর্ড সত্যিই ইউনিক বোর্ড। আশা করছি এই বিজ্ঞ পরিচালকদের নেতৃত্বে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো।
Posted ৭:০২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed