বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতির ধারায় সম্প্রসারনশীল মুদ্রানীতি

পান্না কুমার রায় রজত   |   সোমবার, ০৯ আগস্ট ২০২১   |   প্রিন্ট   |   896 বার পঠিত

মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতির ধারায় সম্প্রসারনশীল মুদ্রানীতি

কোনো কাল পরিধিতে পণ্যসেবার মূল্য টাকার অঙ্কে বেড়ে গেলে অর্থনীতির ভাষায় মুদ্রাস্ফীতি বলা হয়। সাধারণত পণ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে গেলে স্থানীয় মুদ্রা দিয়ে ওই পণ্য ক্রয়ে বেশি পরিমাণ মুদ্রার প্রয়োজন কিংবা একই পরিমাণ মুদ্রা দিয়ে আগের পরিমাণ পন্য কিনতে গেলে পরিমাণে কম পাওয়া যায়। সুতরাং মুদ্রাস্ফীতির ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়।

যখন কোনো পণ্যের চাহিদা গ্রাহকদের কাছ থেকে বাড়ে, তখন চাহিদাজনিত কারণে মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। অন্যদিকে পণ্যের সরবরাহ ব্যয় বেড়ে গেলে মূল্যজনিত বৃদ্ধি হয়। চাহিদাজনিত মুদ্রাস্ফীতি পণ্যের ক্রমবর্ধমান দামের সবচেয়ে বড় কারণ, চাহিদাজনিত মুদ্রাস্ফীতি তখনই ঘটে, যখন পণ্য বা পরিষেবার জন্য ভোক্তার চাহিদা এতো বেশি বেড়ে যায় যে, এটি সরবরাহের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। যখন মানুষের হাতে অতিরিক্ত অর্থ চলে আসে এবং এর ফলে তার চাহিদা বৃদ্ধি পায়।

কালোবাজারি যত হবে, জিনিসের দাম তত বাড়ে। সরকারের খরচ বৃদ্ধির ফলে সেই টাকাটা জনগণের পকেটে আসে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ‘ফিসক্যাল স্টিমুলাস’ বা অর্থনৈতিক ভর্তুকি দিলে জিনিসের দাম বাড়ে। সরকারের বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য ঋণ বাড়লে, মুদ্রাস্ফীতি মানে অনেক টাকা বাজারে ঘুরছে। সে ক্ষেত্রে ডলারসাপেক্ষ টাকার দাম কমবে। টাকার মান ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইলেই টাকা ছাপাতে পারে না। গ্রাহকরা যখন অতিরিক্ত ব্যয় যোগ্য অর্থ আয় করেন, তখন চাহিদাজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটে।

মানুষের হাতে ব্যয় করার জন্য অতিরিক্ত অর্থের জোগান থাকলে তখন মানুষ আরো পণ্য এবং পরিষেবা ক্রয় করতে চায় এবং তাদের সেই ক্ষমতা থাকে। বাজারে যখন কোনো পণ্যের অতিরিক্ত চাহিদার সৃষ্টি হয় এবং তার সঙ্গে যৌথভাবে পণ্যের সরবরাহে প্রভূত ঘাটতি দেখা দেয়, তখন সেই পরিস্থিতিতে প্রস্তুতকারককে পণ্য বা পরিষেবার দাম বাড়ানোর একটি সুযোগ তৈরি করে দেয় এবং মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটে। তবে মূল কারণ হলো যখন কোনো জিনিস তৈরি করতে যে সামগ্রীগুলো প্রয়োজন সেগুলোর দাম যখন বৃদ্ধি পায় তখন সামগ্রিকভাবে দ্রব্যটির মূল্যবৃদ্ধি ঘটে।

কোনো দ্রব্য উৎপাদন করতে প্রধানত চারটি বস্তু প্রয়োজন। যথা- (Land, Labour, Capital and Entrepreneur) একে আমরা বলি ‘ফ্যাক্টর অর প্রোডাকশন’। এসব মিলিয়ে যে খরচটা হয়, সেটাকে বলে ‘ফ্যাক্টর কস্ট’। ফলে এখানে যদি কোনো কিছুর দাম বাড়ে, তাহলে ওই ফ্যাক্টর কস্টও বাড়বে। পাশাপাশি সেই দ্রব্যটি যখন বাজারে আসে, তখন তার ওপর সরকার চাপায় অপ্রত্যক্ষ কর। তারপর সেটির বাজারি মূল্য ‘মার্কেট প্রাইস’ ঠিক হয়। এবার যদি সরকার ট্যাক্স বাড়ায় তাহলেও জিনিসের দাম বাড়বে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে খনিজ তেলের দাম বৃদ্ধি ও অন্যতম কারণ হতে পারে। খনিজ তেলের দাম বাড়া মানেই ট্রান্সপোর্ট বা পরিবহনের দাম বেড়ে যাওয়া। পাশাপাশি মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতিতে অবদানকারী আরো কিছু কারণও থাকে। মজুরি মূল্যবৃদ্ধি যা বেতন বৃদ্ধি করে। একচেটিয়া বাজার তৈরির ক্ষমতা ও মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতির কারণ।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ উৎপাদনের পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করে সাময়িকভাবে মূল্যজনিত মূল্যস্ফীতি তৈরি করে। ক্রমাগত প্রাকৃতিক সম্পদের সংস্থান হ্রাস ও মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতির ক্রমবর্ধমান কারণ। তাছাড়া যখন কোনো দেশ তার মুদ্রার বিনিময় হার কমায়, তখন তা আমদানিতে মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতি তৈরি করে। অর্থাৎ সরবরাহ হ্রাস পেলে বাজারে তা একটি ঘাটতি সৃষ্টি করে ফলে মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটে। উৎপাদকরা তাদের পণ্য বা পরিষেবার ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে দাম বাড়ায়। মুদ্রাস্ফীতির ফলে চাকরিজীবী মধ্যবিত্ত যাদের উপার্জন নির্দিষ্ট তারা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যদিকে মুদ্রাস্ফীতির ফলে দেনাদাররা অর্থাৎ যে ঋণ নিয়েছে সে লাভবান হয় এবং পাওনাদাররা বা ঋণদাতারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর কারণ এই সময় দেনাদাররা তাদের সম্পত্তি বা উৎপাদিত দ্রব্য বিক্রি করে আগের চেয়ে বেশি আয় করে সেই অর্থ দিয়ে তারা ধার শোধ করতে পারে। অন্যদিকে পাওনাদাররা যে অর্থ ফেরত পায়। তার ক্রয়ক্ষমতা আগের চেয়ে কমে যায়। যারা স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করে, তারা এই সময়ে লাভবান হয়। কারণ শেয়ারের দাম বাড়ে, কিন্তু যারা নির্দিষ্ট সুদের হারে গভর্নমেন্ট সিকিউরিটি বা ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগ করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কোনো দেশের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সেই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সেই দেশের সরকার একসাথে পরিকল্পনা স্থির করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারা গৃহীত পরিকল্পনাকে বলা হয় ‘মানিটরি পলিসি’(Monetary Policy) এবং সরকারের দ্বারা গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে বলা হয় ‘ফিসক্যাল পলিসি’ (Fiscal policy)। যখন মুদ্রাস্ফীতি খুব বেড়ে যায়, অর্থাৎ সাধারণত প্রচুর টাকার আগমন ঘটে, তখন ওই দেশের ‘রিজার্ভ ব্যাংক’ ব্যাংক রেট বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে অন্যান্য ব্যাংকগুলোও তাদের প্রদেয় বিভিন্ন ঋণের সুদের পরিমাণ বাড়াতে বাধ্য হয়।

এদিকে ব্যাংকগুলোকে বেশি টাকা সুদ দিতে হলে সেই সময় ঋণ নেয়ার প্রতিও মানুষের চাহিদা কমে। এ ছাড়া আগেকার ঋণ শোধ করতে তাদের অতিরিক্ত অর্র্থ খরচ হয়। সব মিলিয়ে ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। আবার যখন মুদ্রাস্ফীতির হার ঋণাত্মক অর্থাৎ বাজারে টাকার জোগান কমে যায়, তখন ‘রিজার্ভ ব্যাংক’ ব্যাংক রেট কমিয়ে দেয়। এ ছাড়া বাজার থেকে গভর্নমেন্ট সিকিউরিটি কিনে বিনিময়ে নগদ অর্থ প্রদান করে। অন্যদিকে সরকারও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন নীতিনির্ধারণ করে। যেমন অপ্রত্যক্ষ করের জন্য জিনিসের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে সরকার করের বোঝা লাঘব করতে পারে। মুদ্রাস্ফীতি বা (Inflation) এর নাম থেকে ধারণা করা যায়, এর অর্থ মানুষের কাছে টাকা বেড়ে যাওয়া। যেমন একজন কৃষক ২৫ কেজি পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারে। স্বাভাবিক দাম ২০ টাকা কেজি। কিন্তু কোনো কারণে ফলন কম হওয়ায় উৎপাদন ১০ কেজি। এখন মানুষের কাছে টাকা বেশি আছে, কিন্তু পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। সরবরাহ সীমিত হওয়ায় যার কাছে টাকা বেশি আছে সে ৩০ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনে নিলো। সুতরাং দাম বেড়ে গেল। ধরা যাক, ৩০ টাকা দরে যিনি পেঁয়াজ কিনলেন তাদের মধ্যে কোনো একজন বস্ত্র ব্যবসায়ী। তিনি এই বাজারের বেশি টাকা খরচ সমন্বয় করতে বস্ত্রের দাম বাড়িয়ে দিলেন। ধরে নেয়া যাক, যারা দোকান থেকে কিনলেন তিনি একজন মুদি দোকানদার। তিনি মুদি দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে দিলেন। তার ক্রেতার মধ্যে একজন ডাক্তার, তিনিও ফি বাড়িয়ে দিলেন। এভাবে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়। পেঁয়াজের উৎপাদন ঠিক থাকলো, কিন্তু লোকজনের আয় বেড়ে গেল। আয় বাড়লে ক্রয়ক্ষমতা বেড়ে গেল। সে ক্ষেত্রেও উপরিউক্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।

মুদ্রা সংকোচন বা (Deflation) এর ধারণা ঠিক (Inflation) এর বিপরীত। পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়ে গেল, কিন্তু বাজারে কেনার লোক কম। সুতরাং দাম কমতে থাকবে বা পেঁয়াজের উৎপাদন একই থাকলো, কিন্তু কোনো কারণে মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে লোকে মুরগি কিনতে পারছে না। সুতরাং পেঁয়াজের ডিমান্ডও কম, তাই দাম কমিয়ে দিতে বাধ্য হলো। সরকার বা ব্যাংক এই ইনফ্লেশন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যেমন- সুদের হার বাড়িয়ে দিতে পারে, সে ক্ষেত্রে লোকে ব্যাংকে সমন্বয় করতে উদ্যোগী হবে। লোকের হাতে টাকা কমে যাবে, সুদের হার বাড়িয়ে দিলে শিল্পপতিরা ঋণের জন্য কম আকৃষ্ট হবে, সুতরাং উৎপাদনে রাশ টানতে হবে। অসংঘটিত ক্ষেত্রে ব্যয় কমালে শিল্পের সাথে নিযুক্ত লোকের আয় কমে যাবে। এভাবে ইনফ্লেশন কমানো যাবে। সরকার দান খয়রাত কম করবে বিভিন্ন প্রকার রাশ টেনে, রেপো রেট কমাবে। তাহলে ব্যাংকের হাতে পর্যাপ্ত টাকা থাকবে। সেক্ষেত্রে ব্যাংক টাকা নিয়ে ব্যবসা করবে। ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে দিবে। সুদের হার কমলে শিল্পপতিরা ঋণ নিয়ে উৎপাদন বাড়াবে অসংঘটিত ক্ষেত্রে ইনকাম বাড়বে, লোকের হাতে টাকা আসবে। আবার সুদের হার কম করলে লোকজনও ঋণ নিতে আগ্রহী হবে। হোম ঋণ নিলে সেখানে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। কারণ লোন নিলে শিল্পপতির ওপর উৎপাদন বৃদ্ধিরচাপ তৈরি হবে। সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বা রেশনিংয়ের মাধ্যমে লোকের হাতে টাকা পৌঁছে দেয় বা প্রয়োজনীয় দ্রব্য পৌঁছে দিয়ে ডিমান্ড কমিয়ে দেয়। এভাবে টাকার সার্কুলেশন বাড়ানো হয় ও পরিস্থিতি ধীরে ধীরে অগ্রগতি হয়।

একজন সাধারণ মানুষের কাছে যা বাজারের আগুন, অর্থনীতিবিদদের কাছে সেটাই মূল্যস্ফীতি। এমন নয় যে, বাজারের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়া মানেই মূল্যস্ফীতি। মূলত একটি নির্দিষ্ট সময়ের তুলনায় আরেকটি নির্দিষ্ট সময়ে সামগ্রিক দাম স্তরের যে পরিবর্তন সেটাই মূল্যস্ফীতি। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে স্বল্প আয়ের মানুষের সম্পর্ক বেশি। কারণ তারাই এ থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণেই মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির নীরব ঘাতক বলা হয়। আয় না বাড়লেও আগের চেয়ে একই পণ্য কিনতে বেশি অর্থ ব্যয় হয় বলে তাকে বাধ্যতামূলক করও বলা হয়। অর্থনীতিবিদরা বলে থাকেন প্রতিনিধিত্ব নেই এমন করারোপ করা অনুচিত। বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হার প্রকাশ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি প্রতিষ্ঠান।

মুদ্রানীতি অনেক পুরোনো বিষয় হলেও অনেকেই প্রশ্ন করে মুদ্রানীতির মাধ্যমে আসলে কী হয়।মুদ্রানীতির কাজটাইবা কী? মুদ্রানীতি দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে মুদ্রানীতির আরেকটা কাজ হলো দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা। মূলত. বাংলাদেশ ব্যাংক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে খোলাবাজার কার্যক্রম, সংবিধিবদ্ধ জমার অনুপাত পরিবর্তনসহ ব্যাংক হার পরিবর্তনের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। মুদ্রানীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে। প্রবৃদ্ধি বাড়লে সাধারণ মানুষের আয় রোজগার বাড়বে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি যদি বেশি হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের প্রকৃত ব্যয় বেড়ে যাবে। অর্থনীতির ভাষায় মুদ্রানীতির মূল লক্ষ্য দুটি। তাহলো- মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং জিডিপির প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করা বা এগিয়ে নিতে সহায়তা করা। বাজারে অতিরিক্ত মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে গেলে মুদ্রাস্ফীতি হয়, এক মুদ্রার মান কমে যায় এবং মুদ্রা দুর্বল হয়ে পড়ে।

সাধারণ মানুষের পকেটে বা মানিব্যাগে বা ঘরে যে টাকা আছে তাই (কারেন্সি ইন সার্কুলেশন) মুদ্রা। এই হাতের টাকা দিয়ে দৈনন্দিন খরচ ও লেনদেন চলে। এর বাইরে আরো ‘মুদ্রা’ জমা আছে ব্যাংকে। যাকে ব্যাংকাররা বলে ‘ডিপোজিট’ বা আমানত। এটাও মুদ্রা। আমানত অনেক ধরনের। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এগুলোকে দুভাগে ভাগ করে। একটার নাম ‘ডিমান্ড ডিপোজিট’, যা চাহিদামাত্র গ্রাহকরা পায়। আরেকটা হলো ‘টাইম ডিপোজিট’, যা যখন তখন তোলা যায় না। ডিমান্ড ও টাইম ডিপোজিট ও মুদ্রা বা মানি। করোনা মহামারীর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রসারণ ও সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে মহামারীর সংকট কাটাতে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।

কোভিড-১৯ এর কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় মানুষের চলাচল কমেছে। এতে তাদের কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হয়েছে, কমেছে আয়। ক্রয়ক্ষমতা কমায় উৎপাদিত পণ্যও কিনছে কম। সব মিলে এ চক্রে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতেই সম্প্রসারণশীল ও সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে, যা চাহিদা অনুযায়ী টাকার প্রবাহ বাড়াবে বলে আমি মনে করি।

 

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৯ আগস্ট ২০২১

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।